কাবুলে আমেরিকার ড্রোন হানায় নিহত হয়েছেন আল কায়দার প্রধান আয়মান আল-জাওয়াহিরি। এ মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন স্বয়ং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। কাবুলে আল কায়দা প্রধানের বাড়িতে হামলার কিছু ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, যে ঘরে আয়মান আল-জাওয়াহিরি ছিলেন, তার জানালা উড়ে গেছে। কিন্তু বাকি সব ঘর, পারিপার্শ্বিক এলাকা-কোথাও হামলার কোনও চিহ্নই নেই! এই হামলায় কোনও শব্দ হয়নি। এমনকি, আল কায়দা প্রধান ছাড়া কারও গায়ে আঁচড়ও পড়েনি! কী এমন গোপন অস্ত্রে হত্যা করা হল তাঁকে?
আয়মান আল-জাওয়াহিরি হত্যায় ঠিক কী ধরনের অস্ত্র ব্যবহার হয়েছে, তা এখনও জানায়নি আমেরিকা। তবে বিস্ফোরণের প্রকৃতি ইঙ্গিত করছে, আল কায়দার শীর্ষনেতাকে হত্যা করতে ব্যবহার হয়েছে ‘ম্যাকাব্রে হেলফায়ার আরএনএক্স’। এই ‘ওয়ারহেড-লেস মিসাইল’-এর বৈশিষ্ট্য হল লক্ষ্যবস্তুকে টুকরো টুকরো করে ফেলবে। কিন্তু বিস্ফোরণ হবে না। কোনও শব্দ হবে না।
এ নিয়ে পেন্টাগন বা সিআইএ-কেউই প্রকাশ্যে কোনও বিবৃতি দেয়নি। তবে এর আগেও বেশ কয়েক জনকে এই একই অস্ত্রে হত্যা করেছে আমেরিকা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমেরিকা এই বিশেষ ক্ষেপণাস্ত্রের প্রথম ব্যবহার হয় ২০১৭ সালে। সে বার আর এক আল কায়দা নেতাকে হত্যার ছক কষে আমেরিকা। সিরিয়ায় গাড়ি নিয়ে ঘুরছিলেন আল কায়দার অন্যতম শীর্ষনেতা আবু আল-খায়ের আল-মাসরি। কোনও শব্দ হল না। আচমকা গাড়ির ছাদ ফেটে মৃত্যু হল তাঁর। সেটাও নাকি এই ‘ম্যাকাব্রে হেলফায়ার আরএনএক্স’-এর দৌলতে।
আবু আল-খায়ের আল-মাসরির হত্যার বেশ কিছু ছবি প্রকাশিত হয়েছিল। তাতে দেখা যায়, গাড়ির ছাদে একটা বড় ফুটো। গাড়ির ভিতরের অংশ চূর্ণ-বিচূর্ণ। কিন্তু কী অদ্ভুত! গাড়ির সামনের এবং পিছনের অংশ একেবারে অক্ষত। আঘাতের লেশমাত্র চিহ্ন নেই। আমেরিকার এ বারের ‘মিশন’-এও সেই ড্রোনের মাধ্যমে ব্যবহার করা বিশেষ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই ‘নিনজা বোমা’-ই আমেরিকার পছন্দের অস্ত্র। লক্ষ্যবস্তু ছাড়া আঘাতের আঁচড় যাতে অন্য কোথাও না গিয়ে পড়ে, সেই কারণেই এই মারণাস্ত্রের ব্যবহার।