সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটায় স্বামীর বাড়ি থেকে নিখোঁজ মেয়ের সন্ধানের দাবি জানিয়েছেন এক অসহায় মা। বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান, যশোর জেলার কেশবপুর ধর্মপুর চিংড়া গ্রামের গুরুপদ দাশের স্ত্রী বাসন্তী দাশ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা ঝুড়ি ডালা বুনে জীবিকা নির্বাহ করি। আমাদের ৫টি মেয়ে সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে তৃপ্তি দাশকে বিগত ৫/৬ বছর পুর্বে পাটকেলঘাটা থানার কাদিকাটি গ্রামের বিশু দাশের ছেলে সুব্রত দাশের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে প্রায়ই তারা আমার মেয়েকে মারপিট করতে থাকে। এছাড়া সুব্রত দাশ একজন মাদকাসক্ত। ঠিকমত কাজ করে না। নেশা করে বাড়ি ফিরে প্রায়ই তৃপ্তি দাশকে মারপিট করে। দিনের পর দিন মেয়েকে না খেয়ে থাকতে হয়েছে। তারপরও সংসার টিকিয়ে রাখার জন্য সব নির্যাতন সহ্য করে আসছিল মেয়ে তৃপ্তি দাস। ইতিমধ্যে সুব্রত দাশের ঔরশে আমার মেয়ের গর্ভে একটি ছেলে সন্তান জন্ম গ্রহণ করে। কিন্তু দিন দিন সুব্রত দাশ, তার মা অর্চনা দাশ, শ্বশুর বিশু দাস, প্রতিবেশি দিপংকর দাশ, সুনিল দাশ, রত্না দাশ ও সুশান্ত দাশ মিলে প্রায় তুচ্ছ ঘটনায় তাকে মারপিট করে হত্যার চেষ্টাও করে।
বাসন্তী দাশ আরো বলেন, মেয়েকে মারপিটের এসব ঘটনায় একাধিকবার শালিশ হয়েছে। মেয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকজন কয়েকবার আদালতের মাধ্যমে মুচলেকা দিয়েও বাড়িতে নিয়ে আবারো পুর্বের ন্যায় অত্যাচার নির্যাতন করতে থাকে। সর্বশেষ পাটকেলঘাটা থানার মাধ্যমে মিসাংসা করে বাড়ি নিয়ে যায় তারা। এরপর গত ২৩ জুলাই বেলা ১২ টার দিকে জামাতা সুব্রত দাশ আমার কাছে ফোন দিয়ে বলে, তোমাদের মেয়ে তোমাদের বাড়িতে গেছে এ কথা বলেই ফোন কেটে দেয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও মেয়ে আমার বাড়িতে না যাওয়ায় জামাতার নম্বারে ফোন দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে স্থানীয়দের পরামর্শে জামাতার বাড়িতে গিয়ে মেয়ের খোঁজ খবর নেয়ার চেষ্টা করলে তারা আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়ে বলে তোমাদের মেয়ে কোথায় গেছে আমি জানি না। ছেলে সন্তানকে রেখে সে বাড়ি থেকে চলে গেছে। এঘটনায় আমরা পাটকেলঘাটা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, জামাতার ভাষ্য অনুযায়ী ২৩ জুলাই আমার মেয়ে জামাতার বাড়ি থেকে বের হয়েছে। বৃহস্পতিবার ২৮ জুলাই পর্যন্ত সে বাড়িতে ফেরেনি। আমাদের বাড়িতেও যায়নি। এমনকি কোন আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে যায়নি। তাহলে কোথায় গেল? আমাদের ধারনা ওই মাদকাসক্ত জামাতা অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করতে তাকে গুম করে রেখেছে। সে বেঁচে আছে কি না তাও জানি না। মারপিট করতে গিয়ে মেয়ে তৃপ্তি দাশকে হত্যা করে এমন প্রচার দিচ্ছে কি না। সেটিও বুঝতে পারছি না। এখন পর্যন্ত আমাদের মেয়ের কোন সন্ধান না পেয়ে আমরা চরমভাবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছি। আমার স্বামীও চরম হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। তিনি মেয়ের দ্রুত সন্ধান পেতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন ।
খুলনা গেজেট / আ হ আ