তৃণমূল পর্যায়ে শাসক দলকে পুনর্গঠনের লক্ষ্যে কেন্দ্রের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে খুলনা জেলায় ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে আওয়ামী লীগের সম্মেলনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ মাসে জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা ডেকে সম্মেলনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাদের সহায়তাকারীরা দলের পদ পদবী থেকে বঞ্চিত হবেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে দলকে ঢেলে সাজানোর লক্ষে এটি কেন্দ্রের নির্দেশনা।
দলীয় সূত্র জানায়, স্থানীয় সরকার নির্বাচন বিশেষ করে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা ও পৌরসভা নির্বাচনের পর দলের মধ্যে কিছুটা বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের পছন্দমত প্রার্থীদের জেতানোর জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করা হয়। ইউনিয়ন পর্যায়ে একাধিক শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়ে নেতারা। ফলশ্রুতিতে ডুমুরিয়া ও দিললিয়ায় ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের বিপর্যয় ঘটে। বটিয়াঘাটা উপজেলার একটি কেন্দ্রে ব্যালটে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর কোন ভোট পাওয়া যায়নি। এসব ঘটনায় তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগ ইমেজ সংকটে পড়ে।
আগামী বছরের শেষ দিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনমত পক্ষে আনার জন্য ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে সম্মেলনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রাক প্রস্তুতি হিসেবে খুলনা জেলার ৬৮ টি ইউনিয়নে ৬শ’১২ টি ওয়ার্ডে ২শ’ প্রাথমিক সদস্য নবায়ন, ৫০ জন করে নতুন সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সদস্য ফরমও জেলা নেতৃবৃন্দের কাছে এসে পৌঁছেছে। তবে শর্তারোপ করা হয়েছে যুদ্ধাপরাধী পরিবারের সদস্য, ইতিপূর্বে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবির, ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত, মাদক ব্যবসায়ী, ভুমিদস্যু, অস্ত্রধারী, সাজাপ্রাপ্তদের শাসকদলের প্রাথমিক সদস্য পদ দেওয়া হবে না। দলের কেন্দ্রিয় নির্দেশনায় বলা হয়েছে, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব নিরসন করতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-১ আসনে ননী গোপাল মন্ডল, পাইকগাছা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শেখ মনিরুল ইসলাম, ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ ও তেরখাদা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শেখ শহীদুল ইসলাম বিদ্রোহী প্রার্থী ও দলীয় শৃঙ্খলা বিরোধী কার্যকলাপের সাথে জড়িত হওয়ায় অভিযোগে বহিস্কৃত হলেও জেলা শাখায় ঠাঁই পেয়েছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক পরিস্থিতি তুলে ধরে সাধারণ সম্পাদক এড. সুজিত অধিকারী খুলনা গেজেট বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূল পর্যায় থেকে দলকে ঢেলে সাজাতে প্রাথমিক সদস্য পদ, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা শাখার সম্মেলনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। সেপ্টেম্বরে এ প্রক্রিয়া শুরু হবে। প্রস্তুতি হিসেবে এ মাসে জেলার বর্ধিত সভার আহবান করা হচ্ছে। প্রাধান্য দেওয়া হবে শোকের মাস আগস্টকে। এছাড়া এ মাসের ২৭ তারিখে জেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক হুইপ মোস্তফা রশিদী সুজার চতুর্থ মৃত্যু বার্ষিকী পালনের কর্মসূচী জেলা পর্যায় থেকে নেওয়া হচ্ছে।
খুলনা গেজেট / আ হ আ