আগামীকাল ২৮ জুন দীর্ঘ ৬ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে পাইকগাছা উপজেলা বিএনপি’র সম্মেলন। প্রথমত সম্মেলনকে ঘিরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে আগ্রহ দৃশ্যমান না থাকলেও শেষ মূহুর্তে সম্মেলনকে ঘিরে খানিকটা উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এবার সম্মেলনে মূলত তিনটি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক প্রতিটি পদে ২ জন করে প্রতিদ্বন্দ্বি পরষ্পর পরষ্পরকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
খুলনা জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম বাপ্পি জানান, পাইকগাছার ১০ টি ইউনিয়নের প্রতিটি ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির মোট ৭১০ জন ভোটার শান্তিপূর্ণ পরিবেশে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
জেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ শামছুল আলম পিন্টু জানান, দীর্ঘ দিনের অপেক্ষার পর সম্মেলনকে ঘিরে রীতিমত উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। প্রার্থীরা ভোটারদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে নিজেদের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করছেন। এতে তৃণমূলের সাধারন নেতা-কর্মীদের মূল্যায়নের জায়গা ফিরে এসেছে। এতে তাদের মধ্যেও নতুন করে প্রাণ ফিরে এসেছে বলে মনে করেন তিনি। এছাড়া সম্মেলনের মাধ্যমে তৃণমূলের কাউন্সিলররাও যোগ্য নেতা নির্বাচন করবেন। এবং আগামীতে দলীয় সকল আন্দোলন-সংগ্রাম তাদের নের্তৃত্বে বেগবান হবে বলেও মনে করেন বিএনপি’র দীর্ঘ দিনের এ ত্যাগী নেতা।
দলীয় সূত্র জানায়, বুধবার (২৯ জুন) দুপুর ১২টায় পাইকগাছা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পদক অনিন্দ ইসলাম অমিত, সম্মেলন উদ্বোধন করবেন জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক আমির এজাজ খান। সম্মানিত অতিথি থাকবেন খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কু-ু, বিএনপি নেতা এ্যাড. শফিকুল আলম মনাসহ অন্যান্য দায়িত্বশীরা।
এদিকে উপজেলা বিএনপি’র একাধিক দায়িত্বশীল নেতা, তৃণমূলের নেতা-কর্মী কাউন্সিলররা জানিয়েছেন যে, এবার সম্মেলনেও নেতৃত্বে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা খুবই কম। বিশেষ করে, উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়ক ছাড়া প্রথমত কেউ আগ্রহ দেখাননি। তবে পরবর্তীতে প্রতিদ্বন্দ্বি ৫টি পদের ৩ টির প্রতিটিতে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় শেষ মূহুর্তে জমে উঠেছে সম্মেলন। ধারণা করা হচ্ছে, প্রতিটি পদেই হাড্ডা-হাড্ডি লড়াই হতে পারে। বিশেষ করে সাধারণ সম্পাদক পদে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে বলেও মনে করেন অনেকে।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, সর্বশেষ ৫টি পদের তিনটি যথাক্রমে সভাপতি পদে ডা: আব্দুল মজিদ ও শেখ ইমাদুল ইসলাম। সাধারণ সম্পাদক পদে এস এম এনামুল হক ও শাহাদাৎ হোসেন ডাবলু এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মো: আবুল হোসেন ও কাজী সাজ্জাদ আহম্মেদ মানিক পরষ্পর পরষ্পরকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এছাড়া সহ-সভাপতি ও যুগ্ম সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী না থাকায় ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
দলীয় সূত্র জানায়, নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন আইনজীবী শহিদুল আলম। প্রিজাইডিং কর্মকর্তা থাকবেন অধ্যাপক মনিরুল হক বাবুল। ভোটগ্রহণ চলবে দুপুর ১২টা থেকে শুরু করে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক ডা: আব্দুল মজিদ বলেন, অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য ইতোমধ্যে দলের পক্ষে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে।
জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক আমির ইজাজ খান বলেন, প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্বে শুভ আগামীর পথে এগিয়ে যাবে বিএনপি।
প্রসঙ্গত, গত ২০১৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী খুলনা জেলা কমিটি ৭১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা দেয়। দীর্ঘ ৬ বছর পর সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ফিরিয়ে আনবে বিএনপি’র সোনালী অতীত।
খুলনা গেজেট/ টি আই