স্বপ্নের পদ্মা সেতুর শতভাগ সুবিধা পেতে যশোর, ঝিনাইদহ ও মাগুরার পরিবহন যাত্রীদের আরো তিন মাস অপেক্ষা করতে হবে। কেননা নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কালনা সেতু এখনো নির্মাণাধীন। পদ্মা সেতুর সাথে সরাসরি বাস যোগাযোগ আপাতত নড়াইল দিয়ে হচ্ছে না বলেও পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
যদিও উদ্বোধনের পরদিন ২৬ জুন যশোর থেকে ১১টি পরিবহন যাত্রী নিয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় গেছে।
২৫ জুন গোটা দেশবাসীর স্বপ্নের ও পৃথিবীব্যাপী আলোচিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সেতুর মাধ্যমেই দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে।
পরিবহন, কৃষি, মৎস্য, শিল্প, সবজি, চিকিৎসা, বৈদেশিক বাণিজ্যসহ সব ধরনের ব্যবসায় সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা মতামত ব্যক্ত করেছেন।
এরমধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীসেবা ও পরিবহন সেক্টরে মোটা দাগের সুবিধা পাওয়া শুরু করেছে জনগণ। কিন্তু যশোরের পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা শোনালেন অনেকটা হতাশার কথা। তাদের দাবি, যশোর, ঝিনাইদহ ও মাগুরার যাত্রী সুবিধা ও পরিবহন সেক্টরে শতভাগ ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হলে আরো তিন মাস অপেক্ষা করতে হবে। নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কালনা সেতু নির্মাণ দ্রুত শেষ করতে হবে। একইসাথে নড়াইল সড়ক করতে হবে প্রশস্ত। কারণ হচ্ছে লোহগড়ার মধুমতি নদীতে ছোট্ট দুটি ফেরিতে যানবাহন পারাপার করা হয়। এতে যানজট লেগেই থাকে ও সময় অপচয় হয়। যদিও কালনা সেতুর শেষ মুহুর্তের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়েছে আগামী সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ এ সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হবে।
হানিফ এন্টারপ্রাইজের যশোর খাজুরা বাসস্ট্যান্ডের ম্যানেজার তসলিম হোসেন জানিয়েছেন, পদ্মা সেতু দিয়ে ২৬ জুন রাত পর্যন্ত সোহাগ, হানিফ ও গ্রিনলাইন পরিবহনের ১১টি বাস যশোর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্য ছেড়ে গেছে। তাদের গাড়ি দুটি বেনাপোল থেকে যশোর ও খুলনা হয়ে এবং বাকিদের নড়াইল দিয়েও পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় গেছে বলে তিনি জানান।
এসব ব্যাপারে যশোর ইন্টারডিস্ট্রিক বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পবিত্র কাপুড়িয়া বলেন, পদ্মা সেতু যশোর, খুলনা, সাতক্ষীরা অঞ্চলের পরিবহন সেক্টরকে গতিশীল ও লাভজনক করবে। সর্বোচ্চ যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে পারবে। তবে যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরার যাত্রীরা শতভাগ সুবিধা এখনই পাবেনা। খুলনা সাতক্ষীরা বাগেরহাটের যাত্রীরা সুবিধার আওতায় আসছে। কেননা নড়াইল রোডের অবস্থা ভালো না। আবার কালনা ব্রিজের কাজ এখনো শেষ হয়নি। পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা যেতে হলে খুলনা হয়ে যেতে হবে। যশোর নড়াইল হয়ে পদ্মা সেতুতে সরাসরি বাস যোগাযোগ করতে হলে দ্রুতই কালনা ব্রিজ নির্মাণ কাজ শেষ করতে হবে।
যশোর জেলা পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আজিজুল আলম মিন্টু বলেন, নড়াইল সড়ক দ্রুত চারলেন করতে হবে। আবার কালনা ব্রিজ চালু না হলে কার্যত পদ্মা সেতু যশোরের মানুষের উপকারে আসছে না।
কালনা সেতু নির্মাণের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ আসলাম আলী বলেন, নড়াইলের কালনায় মধুমতী নদীর ওপর নির্মাণাধীন দেশের প্রথম ছয় লেনে নির্মিত হচ্ছে কালনা সেতু। এই সেতু চালুর সম্ভাবনা রয়েছে আগামী সেপ্টেম্বর মাসে। এ পর্যন্ত সেতুর ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।