দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় স্থগিত করা হয়েছে চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা। এর প্রভাব পড়বে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট বা এইচএসসি পরীক্ষার সময়সূচিতেও। কেননা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার মধ্যে অন্তত দু্ই মাসের বিরতি প্রয়োজন। এই হিসেবে বলা যায়, এইচএসসি পরীক্ষাও পিছিয়ে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার গণমাধ্যমকে এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার।
এসএসসির পর এইচএসসি পরীক্ষাও পিছিয়ে যাবে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘চলতি মাসের ১৯ তারিখ থেকে শুরু হতে যাওয়া এসএসসি পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায় এর প্রভাব পড়বে এইচএসসি পরীক্ষা শুরুতে। কেননা দুটি পাবলিক পরীক্ষার মধ্যে অন্তত দুই মাসের বিরতি প্রয়োজন। সেই হিসেবে বলা যায়, এইচএসসি পরীক্ষাও পিছিয়ে যেতে পারে।’
কবে নাগাদ এসএসসি পরীক্ষা শুরু হতে পারে এমন প্রশ্নে তপন কুমার বলেন, ‘বিষয়টি নির্ভর করছে বন্যা পরিস্থিতির ওপর। পরিস্থিতি যদি উন্নতি হয় তাহলে আমরা এক সপ্তাহের নোটিশে এসএসসি পরীক্ষা আয়োজনে প্রস্তুত। পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সংশোধিত রুটিন প্রকাশ করব।’
ঈদুল আজহার আগে এসএসসি পরীক্ষা শুরুর কোনো সম্ভাবনা আছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করা উচিত হবে না।’
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা বোর্ডের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ঈদুল আজহার ছুটির আগে এসএসসি পরীক্ষা শুরুর সম্ভাবনা নেই।
তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা আয়োজনে অনেক ধরনের প্রস্তুতির প্রয়োজন। এগুলো শেষ করতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত সময়। ঈদুল আজহার আর বেশি দিন বাকি নেই। সেই হিসেবে বলা যায়, ঈদুল আজহার ছুটির আগে এসএসসি পরীক্ষা শুরুর সম্ভাবনা নেই।’
চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর সম্ভাব্য তারিখ আগামী ২২ আগস্ট নির্ধারণ করে সরকার। এ পরীক্ষা পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচি অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। এইচএসসিতে এবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পরীক্ষা না নিয়ে তা সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে নম্বর দেয়া হবে।
সাধারণত প্রতি বছর এপ্রিল মাসে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হলেও গত বছর করোনা মহামারির কারণে এই পাবলিক পরীক্ষা ২ ডিসেম্বর শুরু হয়।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে দ্বিতীয় দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীরে ক্লাস বন্ধ করা হয় চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি। এ দফায় শিক্ষাঙ্গনে সশরীরে ক্লাস বন্ধ থাকে এক মাস।
২২ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষাঙ্গনগুলো আবার প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠে।
গত ২ মার্চ শুরু হয় প্রাথমিকে সশরীরে ক্লাস। টানা দুই বছর বন্ধের পর গত ১৫ মার্চ প্রাক-প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাস শুরু হয়।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর দুই দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়। প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর প্রথম দফায় গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করে শিক্ষাঙ্গনের দুয়ার।
খুলনা গেজেট/ আ হ আ