ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা একতা এক্সপ্রেস ট্রেনে জেসমিন আক্তার (২৬) নামে এক প্রসূতি ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। বর্তমানে জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নবজাতক ও মা সুস্থ আছেন।
শনিবার (১৮ জুন) বিকেল ৫টা ২২ মিনিটের দিকে রাণীনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে তারা জয়পুরহাট স্টেশনে নেমে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে ভর্তি হন।
জানা গেছে, জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার মোলামগাড়ীহাট-নানাহার গ্রামের তহিদুল ইসলাম আনসার বাহিনীতে চাকরি করে ঢাকার মিরপুরে বসবাস করেন। সেই সুবাদে তার দুই বছরের কন্যা সন্তানসহ স্ত্রী জেসমিন আক্তারও ঢাকায় থাকেন স্বামীর সঙ্গে। সন্তানসম্ভাবা জেসমিনের সন্তান প্রসবের দিন ছিল আরও সাতদিন পর। ঢাকায় তেমন কেউ না থাকায় তাই সাতদিন আগেই নিজ জেলায় যাওয়ার জন্য শনিবার সকালে ঢাকা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে আন্তঃনগর একতা এক্সপ্রেস ট্রেনের ‘ছ’ বগির ৭২-৭৩ নম্বর আসন নিয়ে জয়পুরহাটের উদ্দেশ্যে রওনা করেন জেসমিন ও তার স্বামী তহিদুল।
জেসমিনের স্বামী তহিদুল ইসলাম জানান, ট্রেনটি কমলাপুর থেকে ছেড়ে ঈশ্বরদী আসার পর প্রসব ব্যথা অনুভব করেন জেসমিন। তখন পাশের ছিটের যাত্রীদের জানালে তারা ওই ট্রেনে অবস্থানকারী পরিচালক ও রেল পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমানকে বিষয়টি জানান।
এসআই মিজান তাৎক্ষণিক ওই ট্রেনের কয়েকজন নারীকে দিয়ে ওই কামরায় কাপড় দিয়ে ঘিরে কৃত্রিম প্রসবকক্ষ তৈরি করে দেন। এ ছাড়া বিষয়টি জানার পর একই ট্রেনের পাশের ছিটের যাত্রী ডা. রাফসান জয়পুরহাট সদর থানার স্কুলের একজন শিক্ষিকাকে সঙ্গে নিয়ে চিকিৎসা সেবাসহ প্রসব কাজের তদারকি করেন। এ অবস্থায় রানীনগর স্টেশনে ট্রেন পৌঁছার আগে আগেই ফুটফুটে এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন জেসমিন।
ডা. রাফসান জানি বলেন, জেসমিনের বিষয়টি জানতে পেরে আমি একজন নারী শিক্ষিকাসহ কয়েকজন নারীকে নিয়ে সহযোগিতা করি। ট্রেনে ধারালো কোনো কাঁচি বা ব্লেড না থাকায় রানীনগর স্টেশনে ট্রেন থামার পর ব্লেড সংগ্রহ করে নাড়ি কেটে আলাদা করা হয়। মা ও নবজাতক এখন সুস্থ আছেন। বর্তমানে নবজাতক ও মা জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এ বিষয়ে জয়পুরহাট রেল স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, জয়পুরহাটে ট্রেনটি বিরতি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রসূতিকে হুইল চেয়ারে করে নামিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে জেলা আধুনিক হাসপাতালে পাঠানো হয়।
জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালের ত্বত্তাবধায়ক ডা. রাশেদ মোবারক জুয়েল জানান, হাসপাতালে ভর্তির পর মা ও শিশুকে সবধরনের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তারা সুস্থ আছেন।