যশোরের শার্শা উপজেলার গৃহবধু রেহেনা খাতুন হত্যা মামলায় স্বামীর যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার(২৪ মে) যশোরের স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক সামছুল হক এ আদেশ দেন।
রায় ঘোষণার সময় ঘাতক স্বামী খলিলুর রহমান পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী শাহ আলম।
ঘাতক স্বামী খলিলুর রহমান বেনাপোল পুটখালী গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে। নিহত রেহেনা খাতুন শার্শা উপজেলার ইছাপুর গ্রামের সাখায়াত উল্লাহর মেয়ে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, রেহেনার সাথে খলিলুর রহমানে ১৯৯৯ সালে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। ২০০৯ সালের শুরুতে খলিলুর জোরপূর্বক রেহেনার আপন ছোট বোন মিনা খাতুনকে বিয়ে করে বাড়িতে আনেন। যা নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। এরপর রেহেনার পরিবার মিনা খাতুনকে খলিলুরের কাছ থেকে নিয়ে আরেক স্থানে বিয়ে দেন। এতে আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন খলিলুর। এরপর থেকেই রেহেনার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান রেহেনা। এরপর খলিলুর প্রায় রেহেনাদের বাড়ির আশপাশে ঘোরাঘুরি করতে থাকেন। মাঝে মধ্যে রেহেনার সাথে কথাবার্তাও বলেন, কিন্তু তাদের বাড়িতে যান না তিনি।
সর্বশেষ ২০০৯ সালের ১৪ জুন দুপুর ১২ টায় খলিলুর ও তার কয়েক বন্ধু রেহেনাদের বাড়িতে যান। এরপর বাগআঁচড়া হলে সিনেমা দেখার কথা বলে রেহেনাকে নিয়ে যান। এরপর রেহেনা আর বাড়ি ফিরে আসেননি। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি পরিবার। পরদিন সকাল সাতটায় ইছাপুরের একটি মাঠ থেকে রেহেনার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এসময় রেহেনার শরীরে হত্যার একাধিক চিহ্ন পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় রেহেনার মা আবেদা খাতুন শার্শা থানায় খলিলুরের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করেন বাগআঁচড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই গোলাম মোস্তাফা। তদন্তে উঠে আসে রেহেনাকে মাারপিট ও শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন খলিলুর। তিনি খলিলুরকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। সর্বশেষ মঙ্গলবার এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। আসামি পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
খুলনা গেজেট/ এস আই