দেশে করোনাভাইরাসের টিকা মজুদ নিয়ে টিআইবিসহ অন্য অনেক সংগঠন ‘মিথ্যা তথ্য দিয়েছে’ দাবি করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, সরকার যেখানে রাষ্ট্রের ২০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করেছে, সেখানে টিআইবিসহ যারাই এ নিয়ে মিথ্যাচার করছে, প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
টিকাক্রয়ে অর্থ সাশ্রয়ের দাবি জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশে এই পুরো টিকাই বিনামূল্যে প্রতিটি মানুষকে দেয়া হয়েছে, যা পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশেও হয়নি। টিকা ক্রয়, দেশব্যাপী সরবরাহ, টিকা প্রদান ব্যবস্থাপনা বাবদ ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে। আর বিনামূল্যে সংগ্রহ করার প্রেক্ষিতে সরকার রাষ্ট্রের ২০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করেছে। ’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এর আগে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সরকার ৪০ হাজার কোটি টাকার টিকা দিয়েছে। বিশ্বে ১৩০টি দেশে যখন টিকা দেওয়া শুরুই হয়নি তখন বাংলাদেশ টিকা কার্যক্রম শুরু করেছে। দেশে টিকা দেয়া হয়েছে ২৫ কোটি ডোজের বেশি, যার মধ্যে ১৩ কোটি প্রথম ডোজ, সাড়ে ১১ কোটির বেশি দ্বিতীয় ডোজ এবং দেড় কোটি বুস্টার ডোজ।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সেই তথ্যের ঠিক উল্টোটা টিআইবি বলছে, এমন দাবি করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সরকার যেখানে রাষ্ট্রের ২০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করেছে, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সেই কথা ধরে টিআইবি উল্টোটা বলেছে। দেশে করোনায় মৃত্যুহার হচ্ছে শতকরা ১ দশমিক ৫ ভাগ আর টিআইবির বিবৃতি বলছে শতকরা ৭ দশমিক ৮ ভাগ। এতেই বোঝা যায়, টিআইবি কি রকম অপেশাদার সংস্থা। বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত মানুষের মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার অথচ টিআইবির কল্পিত মৃত্যুহার ধরলে সেই সংখ্যা হবে দেড় লাখ।’
টিআইবির সমালোচনায় তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো গবেষণা করে না তড়িঘড়ি করে গবেষণার নামে দেশকে দোষী করা ও সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগারের জন্য মনগড়া তথ্য দেয়াটা টিআইবি উদ্দেশ্যমূলকভাবে করেছে। মূর্খের মতো সেই সূত্র ধরে কথা বলেছেন বিএনপির রিজভী সাহেব। এই ধরণের মিথ্যাচার যারাই করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। যেখানে সমগ্র দুনিয়া, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা, জাতিসংঘ প্রশংসা করে, সেখানে তারা সমালোচনার বাক্স খুলে বসেছেন। প্রয়োজনে টিআইবির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, লিগ্যাল নোটিশ দেয়া হবে।’
বঙ্গবন্ধুপুত্র শেখ জামালের জন্মদিন উপলক্ষে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১৫ আগস্ট নিহত শেখ জামাল দেশকে অনেক কিছু দিতে পারতেন। তিনি ছিলেন একাধারে সামরিক অফিসার, অন্যদিকে সংস্কৃতিমনা, যন্ত্রসংগীতে দক্ষ একজন সম্ভাবনাময় তরুণ। প্রধানমন্ত্রীর পুত্র হয়েও তিনি ইংল্যান্ডে খন্ডকালীন আইসক্রিম বিক্রির কাজ করেছেন। একথা হয়তো অনেকে জানে না। আজকে তার জন্মদিন উপলক্ষে তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।’
মন্ত্রী এর আগে একুশে পদকপ্রাপ্ত ড. অরূপ রতন চৌধুরী গ্রন্থিত ‘করোনাভাইরাসের সঙ্গে মাদক ও তামাকের সম্পর্ক’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কাঞ্চন কুমার দে, বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের সহসভাপতি মোতাহার হোসেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি মানিক লাল ঘোষ মোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন।