খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বাসা থেকে ২ সন্তানসহ বাবা-মায়ের মরদেহ উদ্ধার
  কুমিল্লায় অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কায় নিহত বেড়ে ৭

১২০ টাকায় দরিদ্র দু’বোনের পুলিশে চাকরি

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় কোন প্রকার আর্থিক লেনদেন ছাড়াই বাংলাদেশ পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি পেয়ে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করলেন আশাশুনি উপজেলার ফকরাবদ গ্রামের দরিদ্র পরিবারের যমজ দু’বোন ফারহানা জাহান ও ফারজানা জাহান। তারা স্বচ্ছতা ও মেধাবীদের সাধারণ কোটায় যমজ দু’বোন পুলিশ হিসেবে নিয়োগ পায়।

সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনস্ ড্রিল শেড মিলনায়তনে গত ২০ এপ্রিল বুধবার বিকাল ৫টায় ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগ পরিক্ষা-২০২২ এর চুড়ান্ত ফলাফল ঘোষণায় তাদের নাম প্রকাশ করেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম বার।

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার ফকরাবদ গ্রামের দরিদ্র পরিবারের মোঃ আসাদুল ইসলাম ও মোছাঃ রেহেনা বেগম দম্পত্তির যমজ মেয়ে ফারহানা জাহান ও ফারজানা জাহান। তাদের বড় বোন আফসানা জাহান আখিঁ বর্তমানে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের গণিতে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তাছাড়া ফারহানা ও ফারজানা আশাশুনি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির নিয়মিত ছাত্রী। অত্যন্ত অসচ্ছল ও গরীব পরিবারের সদস্য থেকে ঘুষ ও তদবির ছাড়াই পুলিশের চাকরি হওয়ায় তাদের পরিবারে খুশির জোয়ার নেমে এসেছে।

সদ্য বাংলাদেশ পুলিশে নিয়োগ পাওয়া যমজ দু’বোন ফারহানা ও ফারজানা বলেন, ছোটবেলা থেকে ইচ্ছা ছিল পুলিশে চাকরী করার। অবশেষে আমাদের সেই ইচ্ছা আল্লাহ পূরণ করেছে। চাকরি করে আমরা দু’বোন আমাদের পিতা-মাতার দুঃখ লাঘব করবো। সেজন্য আমরা দু’বোন সকলের কাছে দোয়া চাই।

ফারহানা ও ফারজানার মা মোছাঃ রেহেনা বেগম বলেন, অনেক কষ্ট করে মেয়েদের মানুষ করেছি। একসময় মনে হতো কিভাবে তাদের মুখে দু’বেলা দু’মুঠো ভাত দিব। মেয়েদের পিতা উপার্জনক্ষম হারালে বহু কষ্টে শুধুমাত্র হাতের কাজ ও দর্জির সেলাইয়ের কাজ করে তিন মেয়েকে বড় করেছি। ছোটবেলা থেকে আমার যমজ দু’মেয়ের ইচ্ছা ছিল পুলিশ হবে। তাদের সেই ইচ্ছা আল্লাহ পূরণ করেছে। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আইজিপি ও জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানকে অনেক ধন্যবাদ। মাত্র ১২০ টাকা খরচ করে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সাধারণ কোটায় আমার যমজ দুই মেয়ে পুলিশে চাকরি পেয়েছে।

তাদের পিতা আসাদুল ইসলাম ফকির বলেন, আমি বেকার। আমার স্ত্রী দর্জি কাজ সহ হাতের কাজ জানে। তার আয়ে এবং সরকারি বিভিন্ন সাহায্য পেয়ে আমাদের মেয়ে তিনটিকে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ালেখা করাচ্ছি। আমার বড় মেয়ে আফসানা আখি সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ গণিত বিষয়ে অনার্সে অধ্যায়নরত। আমার মেয়েরা টিউশনি করে পরিবারে সাহায্য করে। আমার পরিবারের এই দুঃসময়ে আমার জমজ ছোট দুই মেয়ের পুলিশের চাকরি হওয়ায় আমি ও আমার পরিবার সহ এলাকার মানুষ খুবই খুশি হয়েছে। তারা জমজ দুই বোন বর্তমানে আশাশুনি মহিলা কলেজে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।

তিনি আরো বলেন, আমার দুই মেয়ে পুলিশে চাকুরিতে যাতে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ পেতে পারে তার জন্য সকলের কাছে দোয়া কামনা করছি। সেইসাথে সাতক্ষীরা জেলার সম্মানিত পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!