ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাস অঞ্চলে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর হামলা শুরু হয়েছে। রকেট ও কামানের গোলাবর্ষণের মাধ্যমে রুশ সীমান্তবর্তী এই অঞ্চলে চলছে তীব্র হামলা। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও হামলা শুরুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেছেন, পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাস অঞ্চল দখল করতে আক্রমণ শুরু করেছে রাশিয়া। মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার রকেট ও কামানের গোলাবর্ষণের মাধ্যমে ডনবাস অঞ্চলের শহরগুলোতে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী বোমাবর্ষণ শুরু করেছে। পরে দেওয়া এক ভিডিওবার্তায় ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, ‘ডনবাসের জন্য যুদ্ধ শুরু হয়েছে’।
ইউক্রেনের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা ওলেক্সি ড্যানিলভ বলেছেন, রাশিয়া এই অঞ্চলে ইউক্রেনের ফ্রন্ট লাইন ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেছে। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ দখলে ব্যর্থ হওয়ার পর ডনবাস অঞ্চলে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর এই আক্রমণটি দীর্ঘ প্রত্যাশিত ছিল।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভিযান শুরুর পর রাশিয়া প্রাথমিকভাবে ইউক্রেনের প্রধান শহরগুলো দখল করতে এবং বর্তমান সরকারের পতন ঘটানোর লক্ষ্য নিয়েছিল বলে মনে করা হয়। কিন্তু কঠোর প্রতিরোধের মুখোমুখি হওয়ার পর, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা দাবি করেন যে, ‘সামরিক অভিযানের প্রথম পর্যায়ে’ মস্কোর মূল উদ্দেশ্যগুলো ‘সম্পন্ন’ হয়েছে এবং রুশ বাহিনীকে রাজধানীর আশপাশের এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে সোমবার রাতে এক টেলিভিশন ভাষণে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়ার সেনাবাহিনী ডনবাস অঞ্চলে যুদ্ধ শুরু করেছে। তিনি দাবি করেন, ডনবাস অঞ্চল রক্ষা করার জন্য ইউক্রেনের সেনাবাহিনী বহু আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল।
রুশ সেনাবাহিনীর একটি বিশাল অংশকে ডনবাস হামলায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, রাশিয়ার যত বেশি সেনাই আনা হোক না কেন ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ডনবাস রক্ষার চেষ্টা করবে।
এদিকে বৃহত্তর ডনবাস অঞ্চলের লুহানস্ক এলাকার গভর্নর তার নিয়ন্ত্রিত এলাকার পরিস্থিতিকে ‘নারকীয়’ বলে উল্লেখ করেছেন।
সংবাদমাধ্যম বলছে, দৃশ্যত ডনবাস অঞ্চলে যুদ্ধ শুরু হওয়ার ফলে ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযানের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হলো। ইউক্রেনের একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছেন, রাশিয়ার সেনারা পূর্ব সীমান্তের সবগুলো ফ্রন্টে বিশেষ করে দোনেতস্ক, লুহানস্ক ও খারকিভ দিয়ে ডনবাস অঞ্চলের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে।