সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েলে হামলার ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় সামরিক অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল। এরই মধ্যে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে পশ্চিম তীরে ১৪ বছরের কিশোরসহ মারা গেছে পাঁচ ফিলিস্তিনি।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, বুধবার ইসরায়েলি অভিযানে মারা গেছে তিনজন ও বৃহস্পতিবার মারা গেছে দুজন।
এর আগে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের গুলিতে একজন ১৪ বছরের ফিলিস্তিনি শিশু মারা গেছে। ইসরায়েলি সেনারা দাবি করেছে, নিহত ফিলিস্তিনি কিশোর তাজা গোলাবারুদে পেট্রলবোমা নিক্ষেপের চেষ্টা করছিল। তাই সেনারা গুলি ছুড়তে বাধ্য হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া কয়েকটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ইসরায়েলি সেনাদের সাঁজোয়া যান লক্ষ্য করে পাথর ছুড়ছে ফিলিস্তিনিরা। এ সময় ইসরায়েলি সেনাদের গুলির শব্দও শোনা যায়।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, বুধবার ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে প্রাণ হারান ৩৪ বছর বয়সী আইনজীবী মোহাম্মদ হাসসান মোহাম্মদ আসসাফ।
আইনজীবী হিসেবে আসসাফ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের অবৈধ দখলদারত্বের বিরুদ্ধে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) হয়ে কাজ করতেন।
এ ছাড়া ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এ বছর ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে ৩৬ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। এর মধ্যে যেসব ফিলিস্তিনি ইসরায়েলে হামলা চালাতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে, তারাও রয়েছে।
এদিকে মার্চ থেকে ইসরায়েলে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে। সর্বশেষ তেলআবিবে হামলায় ইসরায়েলি হতাহতের ঘটনায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট সব নিরাপত্তা বাহিনীকে হামলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পূর্ণ স্বাধীনতা প্রদান করেছেন।
শুক্রবার তেলআবিবের বিনোদন এলাকায় এক ফিলিস্তিনির হামলায় তিন ইসরায়েলি নিহত এবং ১৬ জন আহত হওয়ার পর দেশটির প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এমন পদক্ষেপ নেয়া হলো।
ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে, সেদিন রাতে জনাকীর্ণ বার ও রেস্টুরেন্টগুলোয় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলাকারী ফিলিস্তিনি পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় এরই মধ্যে প্রায় ২০০ জনকে আটকের বিষয়টি জানিয়েছেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গান্টজ। তিনি বলেন, প্রয়োজনে হাজারও লোককে আটক করা হবে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী পশ্চিম তীরের উত্তর দিকে প্রতিরক্ষা প্রচেষ্টা জোরদার করেছে। এ ছাড়া এক হাজার ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য তেলআবিবে অভিযান পরিচালনা করছে।
মোট আহত ১৬ জনের মধ্যে এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আটজন। এর মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। বাকি আহত আটজনকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
এদিকে তেলআবিবে হামলাকারী হাজেমের বাবা ফাতি হাজেম আল জাজিরাকে বলেছেন, এই তরুণরা সব আশাই হারিয়ে ফেলছে। কোনো চাকরি নেই, ইসরায়েলি বাহিনীর নিয়মিত হামলা, অনেক সহকর্মী, বন্ধু ও প্রতিবেশী হারিয়েছে তারা।
খুলনা গেজেট/ এস আই