রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের আওতা বৃদ্ধি না করার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যদি ভারত এই আহ্বানে সাড়া না দেয়, সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে এজন্য দেশটিকে ‘মূল্য দিতে হবে’ বলেও সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।
হোয়াইট হাউসের ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের পরিচালক ব্রায়ান ডিজি এ সম্পর্কে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ সম্পর্কে বলেন, ‘ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের পর চীন ও ভারতের প্রতিক্রিয়ায় আমরা হতাশ। ভারতের উদ্দেশে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে আমি বলতে চাই, রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্টতা বা মাখমাখি বা ঘনিষ্টতা বাড়ালে ভবিষ্যতে তার পরিণতি ভুগতে হবে এবং যথাযথ মূল্য দিতে হবে।’
রুশ সমরাস্ত্রের সবচেয়ে বড় ক্রেতাদেশ ভারত। এছাড়া, সম্প্রতি ভারতকে হ্রাসকৃত মূল্যে জ্বালানি তেল কেনার প্রস্তাবও দিয়েছে রাশিয়া।
গত সপ্তাহে ভারত সফরে গিয়েছিলেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। সেই সফরে তিনি এ প্রস্তাব দেন। পাশপাশি, দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের আওতা বাড়ানোর ব্যাপারেও আগ্রহ প্রকাশ করেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
দেশের জ্বালানি নিরাপত্তার কথা উল্লেখ করে ভারত ল্যাভরভের প্রস্তাবকে সমর্থন করেছে এবং ইঙ্গিত করেছে যে, ইউরোপও রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানি ক্রয় অব্যাহত রেখেছে।
গত ২৪ তারিখ ইউক্রেনে রুশ অভিযান শুরু হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করে গেলেও দেশটির গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ভারত এ পর্যন্ত কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি।
ভারতের এ অবস্থান যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের হতাশ করেছে। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রে ভারতের অবস্থান “কিছুটা নড়বড়ে”।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে ভারত একটি মধ্যম অবস্থান নেয়ার চেষ্টা করছে। তাদের মতে, মস্কোকে ভারতের প্রতিরক্ষা সরবরাহের জন্য প্রয়োজন এবং চীনকে মোকাবিলা করার জন্য পারস্পরিক ক্রমবর্ধমান অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ভারত ওয়াশিংটনের সাথে গত ২ দশক ধরে একটি শক্তিশালী অংশীদারিত্ব তৈরি করেছে।
তবে মস্কোর সঙ্গে দিল্লির সাম্প্রতিক বাণিজ্যিক সমঝোতায় উদ্বিগ্ন ওয়াশিংটন। চলতি সপ্তাহে এক সংবাদ সম্মেলনে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেন, ‘ভারত তার নিজের স্বার্থে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়াতে চায়— এটা আমরা মানতে প্রস্তুত নই।’