খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  কুমিল্লায় ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশার ৫ যাত্রী নিহত
  মানবতাবিরোধী অপরাধ : চিফ প্রসিকিউটর দেশে না থাকায় ফখরুজ্জামান ও সাত্তারের জামিন শুনানি ২ সপ্তাহ পেছাল আপিল বিভাগ
  আজ থেকে জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ শুরু
  অ্যান্টিগা টেস্ট: শেষ দিনে বাংলাদেশের দরকার ২২৫ রান, হাতে ৩ উইকেট

সাতক্ষীরা এলজিইডি’র কর্মকর্তা নারায়ন চন্দ্র’র দুর্নীতির তদন্ত শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সাতক্ষীরার নির্বাহী প্রকৌশলী নারায়ন চন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্নখাতে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও ওয়ান ব্যাংক সাতক্ষীরা শাখা থেকে ঠিকাদারদের পারফরমেন্স সিকিউরিটির রক্ষিত বিপুল পরিমাণ অর্থ বিভিন্ন সময়ে উত্তোলনের পাশাপাশি গত বছরের ২৫ নভেম্বর এক কালিন ৮ লক্ষ টাকা উত্তোলনের ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে।

এলজিইডি সাতক্ষীরা অফিসের সাবেক হিসাব রক্ষক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান কর্তৃক স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তারই নির্দেশে এই তদন্ত হচ্ছে।

এসব অভিযোগের তদন্ত করতে মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বরিশাল জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ নুরুল হুদা সাতক্ষীরায় এসেছেন। বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) এলজিইডি’র সাতক্ষীরার নিজস্ব কার্যালয়ে এই তদন্তকাজ চলবে বলে সংশ্লিষ্ট অফিসের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।

এলজিইডি সাতক্ষীরার নির্বাহী প্রকৌশলী দপ্তরের সাবেক হিসাব রক্ষক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান কর্তৃক গত ১৬ জানুয়ারি প্রেরিত অভিযোগে জানা যায়, বিভিন্ন সময় অনৈতিক সুবিধা নিয়ে প্রকৃত ঠিকাদার বিহীন বিলে স্বাক্ষর, জামানতের সময় সীমা পার হওয়ার পূর্বেই জামানত প্রদান, ঠিকাদারি কাজের সময় সীমা পার হলে সময় বর্ধিত না করেই বিল প্রদানে বাধ্য করার অভিযোগ নিয়মিত রয়েছে।

এছাড়াও উক্ত অফিসের মাস্টার রোল খাতের অফিস সহায়ক আহাদুজ্জামানের নামে ওয়ান ব্যাংক সাতক্ষীরা শাখার ‘বিভিন্ন প্রকল্পের পারফরমেন্স সিকিউরিটি জমা ও ব্যয়িত হিসাব শিরোনামে সঞ্চয়ী হিসাব নং-০৪৬৫৪২১৩০৪০১৯ থেকে ইতিপূর্বে ঠিকাদারদের পারফরমেন্স সিকিউরিটির বিপুল অংকের টাকা বিভিন্ন সময়ে উত্তোলন করেছেন। এসব ব্যায়িত অর্থ সমন্বয় করা হয়নি।

পাশাপাশি গত বছরের ২৫ নভেম্বর এককালিন ৮ লক্ষ টাকা উত্তোলন করা হয় অফিস সহায়ক মাস্টার রোল কর্মচারি আহাদুজ্জামানের নামে। এসময় হিসাব রক্ষক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান উক্ত ৮ লক্ষ টাকা ব্যাংকে জমা দিতে নির্বাহী প্রকৌশলী নারায়ণ চন্দ্র সরকারকে অনুরোধ করলে নির্বাহী প্রকৌশলী তার উপর চরমভাবে নাখোশ হন।

এছাড়া বিগত ২০২০ সালের পহেলা জুলাই হতে অদ্যবদি পর্যন্ত ২৬টি ব্যাংক একাউন্টের স্টেটমেন্ট উত্তোলন পূর্বক হিসাব সমন্বয় করার উদ্যোগ নেন এবং উপস্থাপন করেন। একই সাথে উক্ত ৮লক্ষ টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার অনুরোধ করলে সঞ্চয়ী হিসাবটি বন্ধ করার জন্য নির্দেশনা দেন নির্বাহী প্রকৌশলী। এসবের জেরধরে এই হিসাব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কৌশলে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ করে তাকে বদলি করিয়ে দেন।

অভিযোগে আরও জানা যায়, এলজিইডি সাতক্ষীরার নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে মাষ্টার রোলে কর্মরত পিওন আলমগীরের সহয়তায় নির্বাহী প্রকৌশলী দীর্ঘ দুই বছর যাবত এভাবেই অনিয়ম আর দুর্নীতি অব্যাহত রেখেছেন।

এদিকে সাতক্ষীরা অফিসে খোঁজ নিয়ে একাধিক সূত্র জানায়, একজন ঠিকাদারের একটি বিল ছাড় করাতে উক্ত অফিসের ঘাটে ঘাটে অর্থ বিনিয়োগ করতে হয়। লাভ হোক আর নাই হোক নির্বাহী প্রকৌশলী ১%, সিনিয়র এ্যাসিসটেন্ট ও এ্যাসিসটেন্ট প্রকৌশলীকে দিতে হবে দশমিক ৫০%, হিসাব শাখাকে দশমিক ২৫%। পাশাপাশি ল্যাব ও ফোরম্যান নামের আরও দুই একটি শাখা এমনিতেই দাড়িয়ে থাকে কত দেবেন ঠিকাদার। ফলে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে এবিভাগের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধিকারিরা।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে উক্ত অফিসের আরেক কর্মকর্তা হাসতে হাসতে বললেন, পয়সা কড়ির প্রতি স্যারের একটু নেশা আছে কিন্তু অফিসটা ঠিকঠাক মতো চালিয়ে যাচ্ছেন।

এবিষয়ে সাতক্ষীরা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী নারায়ন চন্দ্র সরকার তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, একটি অডিটের ঘটনায় টাকা উঠানো হয়েছিল। পরে সেটি সমন্বয় করা হয়েছে। সুতারাং এ অভিযোগ ভিত্তিহীন। অবৈধ সুযোগ সুবিধা না পেয়ে এই অধিদপ্তরের সাবেক হিসাব রক্ষক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান প্রধান প্রকৌশলী বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন যার বাস্তব সম্মত কোন ভিত্তি নেই।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!