সাতক্ষীরায় ফের বেড়েছে করোনা সংক্রমণ। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় করোনা উপসর্গে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৭ ফেব্রুয়ারি তার মৃত্যু হয়।
এ নিয়ে জেলায় ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৯১ জন এবং করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন মোট ৮৩৪ জন।
করোনা উপসর্গে মৃত ব্যক্তি হলেন, সাতক্ষীরার শহরের কামালনগর এলাকার মৃত ইমাম উদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে ইলিয়াস বিশ্বাস (৯২)।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তিনি সামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৭ ফেব্রুয়ারি সকাল সোয়া ৭টার দিকে তিনি মারা যান।
এদিকে সাতক্ষীরায় বেড়েছে করোনা সংক্রমনের হার। গত গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করো আরো ২১ জন করোনা পজেটিভ সনাক্ত হয়েছে। এসময় র্যাপিড এন্টিজেন কীট ও সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে ১০৮ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ। আগের দিন আগে শনাক্তের হার ছিল ৪ দশমিক ১৭ শতাংশ।
সামেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে মোট ২৬ জন রোগী । এর মধ্যে ৬ জনের করোনা পজেটিভ ও বাকি ২০ জন সন্দেহজনক (সাসপেক্টেড)। নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি আছে ৬ জন।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাঃ হুসাইন সাফায়াত জানান, গত ২৪ ঘন্টায় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে ৮২টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৯ জনের ও সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে র্যাপিড এন্টিজেন কীটে ২৬টি নমুনা পরীক্ষা করে আরো ২ জনের করোনা সনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
তিনি আরো বলেন, জেলায় ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭ হাজার ৮৯১ জন। জেলায় মোট সুস্থ হয়েছেন ৭ হাজার ৪৫০ জন। গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ্য হয়েছে ৩৪ জন। বর্তমানে জেলায় করোনা রোগী রয়েছে ৩৫০ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীর সংখ্যা ৬ জন। বাড়িতে হোম আইসোলেশনে আছেন ৩৪৪ জন। জেলায় প্রথম থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি প্রর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৯১ জন এবং উপসর্গে মারা গেছেন আরো ৮৩৪ জন।
সিভিল সার্জন আরো জানান, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলায় ১ লক্ষ ৬৭ হাজার ৩৫৩ জন এস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন। আর দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ১ লক্ষ ৬ হাজার ৬৬৩ জন। এদিকে সেনোফর্ম ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ৯ লক্ষ ২২ হাজার ১৫৯ এবং দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৮ লক্ষ ৩৫ হাজার ২৬ জন।
ফাইজার ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ২ লক্ষ ২৩ হাজার ২৭৯ জন। দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ১ লাখ ২৬ হাজার ৬৯৭ জন। সিনোভ্যাক ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ১ লক্ষ ২৬ হাজার ৪৯৭ জন। সিনোভ্যাক ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৮৪ হাজার ৩৬৪ জন। এছাড়া এস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের বুষ্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন ৩৮ হাজার ১৪১ জন এবং ফাইজার ভ্যাকসিনের বুষ্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন ৯১ জন।
তিনি আরো জানান, সাতক্ষীরা জেলায় এ পর্যন্ত প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে ১৪ লক্ষ ৪০ হাজার ৩২৬ জনকে। দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে ১১ লক্ষ ৫২ হাজার ৭৫০ জনকে এবং তৃতীয় ডোজ ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে ৩৮ হাজার ২৩২ জনে।
খুলনা গেজেট/এনএম