রাত পার হলেই পহেলা ফাল্গুন ও ভালবাসা দিবস। প্রিয় মানুষকে উপহার হিসেবে পছন্দের শীর্ষে গোলাপ। ইতিমধ্যে ফুলের রাজ্য গদখালী থেকে ফুল আসতে শুরু করেছে খুলনায়। এ দুই দিবসে খুলনার মার্কেটগুলোতে প্রায় এক লাখ ফুলের সমাগম হবে। প্রতি পিসের মূল্য পড়বে এবার ৩০ টাকা।
জানা গেছে, ২০১৫ সালে ফুল মার্কেটে চাহিদা ছিল হলুদ গোলাপ। ২০১৮ সালে সাদা রঙের গোলাপ। গেল বছরে চাহিদা ছিল লাল গোলাপের। এবারেও তার ব্যতিক্রম ঘটবে না বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। গোলাপের পাশাপাশি রয়েছে ক্রাউনের চাহিদা। কয়েকটি ফুল দিয়ে বানানো এ ক্রাউনের মধ্যমনি থাকবে লাল গোলাপ।
নগরীর ফুল ব্যবসায়ীরা তাদের চাহিদা অনুযায়ী ফুল এনেছেন। গদখালীর পাইকারী ব্যবসায়ীরা প্রতি পিস গোলাপের দাম নিয়েছে ১৮ টাকা। নগরীর ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছেন ৩০ টাকায়। গোলাপ ছাড়া প্রস্তুত রয়েছে জিপসী, জারবেরা, চন্দ্রমল্লিকা, অর্কিড, লিলিসহ আরও অনেক।
নগরীর ফারাজীপাড়া ফুল মার্কেটে প্রায় ১৭ টি দোকান রয়েছে। এ দিবস উপলক্ষে দোকানগুলো অন্যরকম সাজে সেজেছে। লাইটিং করা হয়েছে প্রতিটি দোকানের প্রবেশ পথে।
স্বপ্নের ঠিকানা দোকানের মালিক মো: জাকির হোসেন বলেন, গোলাপ প্রতি পিস ৩০ টাকা ও ক্রাউন দেড়শ’ টাকা থেকে শুরু হয়ে আড়াইশ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ফুলের দাম বেশী নেওয়া হচ্ছে বলে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গদখালী থেকে খুলনায় আসতে চারঘন্টা সময়ের প্রয়োজন হয়। ফুল আনতে গেলে অনেক সময় ফুল শুকিয়ে যায়, আবার পচেও যায়। তাই লোকসান পুষিয়ে নেওয়ার জন্য এ দাম রাখা হয়। তাছাড়া করোনা মহামারীর কারণে অনেকদিন দোকান বন্ধ রাখতে হয়েছে। সে সময় যে ক্ষতি হয়েছে তার পূরণ এখনও হয়নি। বেচাকেনা ঠিকমতো করা যাচ্ছে না, রাত আটটার পর দোকান খোলা রাখা যায় না। অনেকে অফিসের কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দোকান বন্ধ পেয়ে খালি হাতে ফিরে যায়। তাই অন্তত আজকের দিনের জন্য সময় বাড়ানোর জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ রেখেছেন।
পুষ্পমালা দোকানের মালিক সালমান বলেন, গত দু’দিন দোকানে ফুল তেমন বিক্রি হয়নি। করোনা ভাইরাসের ধরণ ওমিক্রন সংক্রমণরোধে চলছে বিধি নিষেধ। অনেকেই বাড়ি থেকে বের হতে চায় না। তবে আজ বিক্রি ভাল হবে বলে তিনি আশাবাদী। তরুণদের তুলনায় মধ্য বয়সের মানুষ বেশী আসে ফুল কিনতে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, গদখালীর স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কারণে এখানকার ব্যবসায়ীরা ফুল কিনতে পারে না। কৃষকের কাছ থেকে কম দামে কিনে আমাদের কাছে বেশি দরে বিক্রি করে তারা। অন্যান্য বছর বিজয় দিবস, ৩১ ডিসেম্বর, পহেলা ফাল্গুন, বাংলা নববর্ষ, ভালবাসা দিবস, ঈদ ও পূজায় প্রতিটি দোকানে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার ফুল বিক্রি হয়।
বিয়ের ফুল দোকানের কর্মকর্তা রেজাউল হাওলাদার জানান, করোনার সময় অনেকেই ব্যবসা গুটিয়ে বসে থাকতে হয়েছে। পরে ব্যবসা চালু হলেও ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারেনি অনেকেই। তাই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তিনি এ পেশাতে অনুদানের জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ করেছেন।
খুলনা গেজেট/এনএম