সাতক্ষীরায় গত ২৪ ঘন্টায় করোনা উপসর্গে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯ ফেব্রুয়ারি তার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে জেলায় ৯ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৯১ জন এবং করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন মোট ৮২৪ জন।
করোনা উপসর্গে মৃত ব্যক্তিরা হলেন, সাতক্ষীরা পাটকেলঘাটা থানার বড়বিলা গ্রামের মৃত ফজলে করিমের ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৬৫), সদর উপজেলার পাথরঘাটা গ্রামের মৃত মান্দার দালালের ছেলে মোঃ অবুল হোসেন (৭৫), শ্যামনগর উপজেলার পরানপুর আজাদনগর গ্রামের মৃত মুৎলা সরদারের ছেলে মোহম্মাদ আলী সরদার (৬০) ও একই উপজেলার নয়নতারা চানিমুখা গ্রামের আব্দুল্ল্যা গাজীর ছেলে আল আমিন(১৬)।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে গত ২ফেব্রুয়ারি হতে ৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বিভিন্ন সময় তারা সামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯ ফেব্রুয়ারি ভোর রাত পৌনে ১টা থেকে রাত পৌনে ১০টার মধ্যে বিভিন্ন সময় তারা মারা যান।
এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় সাতক্ষীরায় নতুন করে আরো ২৭ জন করোনা পজেটিভ সনাক্ত হয়েছে। এসময় র্যাপিড এন্টিজেন কীট ও সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে মোট ১০০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শনাক্তের হার ২৭ শতাংশ। এর আগেরদিন আগে শনাক্তের হার ছিল ২৫ শতাংশ।
সামেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে মোট ৪২ জন রোগী । এর মধ্যে ১৩ জনের করোনা পজেটিভ ও বাকি ২৯ জন সন্দেহজনক (সাসপেক্টেড)। নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি আছে ৩ জন।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাঃ হুসাইন সাফায়াত জানান, গত ২৪ ঘন্টায় সাতক্ষীরা সামেক হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে ৫৫ টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৬ জনের করোনা সনাক্ত হয়। এছাড়া সদর হাসপাতাল সহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে র্যাপিড এন্টিজেন কীটে ৪৫ টি নমুনা পরীক্ষা করে আরো ১১ জনের করোনা সনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২৭ শতাংশ। জেলায় গড় সংক্রমনের হার ২১ দশমিক ০৮ শতাংশ।
তিনি আরো বলেন, জেলায় ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭ হাজার ৭৯০ জন। জেলায় মোট সুস্থ হয়েছেন ৭ হাজার ১৮৫ জন। গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ্য হয়েছে ৪৫ জন। বর্তমানে জেলায় করোনা রোগী রয়েছে ৫৫৪ জন। এরমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীর সংখ্যা ১৩ জন। বাড়িতে হোম আইসোলেশনে আছেন ৫৪১ জন। জেলায় প্রথম থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি প্রর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৯১ জন এবং উপসর্গে মারা গেছেন আরো ৮২৪ জন।
সিভিল সার্জন আরো জানান, গত ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলায় ১ লক্ষ ৬৬ হাজার ১৪৯ জন এস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন। আর দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ১ লক্ষ ৯৫২ জন। এদিকে সেনোফর্ম ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ৯ লক্ষ ১৮ হাজার ২৩৬ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৮ লক্ষ ১৯ হাজার ১১৭ জন।
ফাইজার ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ২ লক্ষ ২৩ হাজার ৪৯ জন। দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ২৬ হাজার ৯৪২ জন। সিনোভ্যাক ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ১ লক্ষ ২৫ হাজার ৬৯৩ জন। সিনোভ্যাক ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৩৯ হাজার ৯০৮ জন। এছাড়া এস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের বুষ্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন ৩১ হাজার ২২৫ জন এবং ফাইজার ভ্যাকসিনের বুষ্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন ৯১ জন।
তিনি আরো জানান, সাতক্ষীরা জেলায় এপর্যন্ত প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে ১৪ লক্ষ ৩৩ হাজার ১২৭ জনকে। দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে ৯ লক্ষ ৮৬ হাজার ৬১৯ জনকে এবং তৃতীয় ডোজ ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে ৩১ হাজার ৩১৬ জনে।
খুলনা গেজেট/এনএম