বাড়ির ছাদে বাগান। সেখানে সব্জি বা হরেক ধরণের ফলমূলের ছড়াছড়ি। অনেকেই আবার শখ করে বাড়ির উঠানে বা ছাদে করেন ফুলবাগান। যার কারণে সৌন্দর্য বাড়ে বাড়ির। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে খাবার হজম হবে, ফুল ঝরে যাবে কিন্তু বই থেকে পাঠকরা যে জ্ঞান নেবে তা কখনও শেষ হবে না।
সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে নগরীর মুজগুন্নি আবাসিক এলাকার ৯নম্বর সড়কে এমনই একটি বই বাগান করেছেন মুনতাসির মামুন। তার বাড়ি (৬২৯নং) সামনে বিকেল বেলায় ভ্রাম্যমান ভাবে পাঠকদের বই পড়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। পাশাপাশি কেউ বই কিনতে চাইলেও তার সুযোগও রয়েছে।
মুনতাসির মামুন খুলনা পাবলিক কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে বুয়েটে পড়াশুনা করেছেন। বর্তমানে খুলনা উন্নয়ন কতৃপক্ষ (কেডিএ) এর সহকারী প্রকৌশলী (একান্ত সচিবের অতিরিক্ত দায়িত্ব) হিসেবে কর্মরত।
তিনি খুলনা গেজেটকে জানান, নগরীতে প্রচুর পরিমাণ খাবার রেষ্টুরেন্ট রয়েছে। যার ফলে ছোট থেকে বড় সবারই খাবারের প্রতি উৎসাহ বেশি। অনেকেই শখের বশত বাড়ির অবশিষ্ট জায়গায় খুব যত্ন নিয়ে বাগান করেন। কিন্তু তা দীর্ঘমেয়াদী নয়। এসব কথা চিন্তা করেই বই বাগানের যাত্রা শুরু করেছি। প্রতি শুক্রবার নগরীর বয়রাস্থ ইসলামী ফাউন্ডেশনের নিকট জুমআ বাদ ভ্রাম্যমান লাইব্রেরী বসে।
গত ২৮ আগষ্ট এর যাত্রা শুরু করেছি। প্রথম দিনেই পাঠকদের মধ্যে অনেক সাড়া পেয়েছি। এছাড়া বিকেলে আমার বাড়ির সামনেই ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরী থাকে। শিশুরা ব্যাপক উৎসাহী।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক ভাবে ইসলামীক কিছু বই লাইব্রেরীতে রাখা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বিজ্ঞান, মোটিভেশন, ক্যারিয়ার ইত্যাদি বিষয়ে বই ও নানা ধরনের শিশুতোষ পত্রিকা রাখার ইচ্ছা আছে। তবে পাঠকরা ইসলামী বইতে বেশি উৎসাহী। কারণ ইসলামী বইগুলো বাজারে কম বিক্রি হয়। সেক্ষেত্রে ছোটদের বিষয় মাথায় রেখে আল্লাহর নূর, রাসূল রাজা, মা মা মা এবং বাবা, সম্মানিত অতিথিরা, ধৈর্যশীল এক লোকের গল্প, ইসলামে স্বপ্ন, আসুন কোরয়ানের সাথে কথা বলি ইত্যাদি ধরণের বই লাইব্রেরীতে রেখেছি।
এ ব্যাপারে মুজগুন্নি এলাকার কয়েকজনের সাথে আলাপকালে তারা জানায়, আসলেই বিষয়টি অনেক ব্যতিক্রমী। এভাবে আমরা কখনই চিন্তা করি নাই। বই থেকে পাঠকরা যে জ্ঞান পায় তা শেষ হওয়ার নয়। বড়-ছোট সকলেই এই লাইব্রেরীকে স্বাগতম জানিয়েছেন। তাদের দাবি, একটা গাড়ির ব্যবস্থা করে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে এই ধরণের বই পড়া এবং বিক্রির সুযোগ করলে অনেকেই উপকৃত হবে।
খুলনা গেজেট/নাফি