খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সোনারগাঁওয়ে টিস্যু গোডাউনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১২ ইউনিট
  আগামীতে সরকারের মেয়াদ হতে পারে চার বছর : আলজাজিরাকে ড. ইউনূস

টাকা দিতে দেরি হওয়ায় পেটে টিউমার রেখেই সেলাই

গে‌জেট ডেস্ক

টাকা দিতে দেরি হওয়ায় পেটের ভেতরে টিউমার রেখেই সেলাই করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মানিকগঞ্জের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। রোববার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী নারী আফরোজা আক্তার ও তার স্বজনরা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।

জানা যায়, শুক্রবার দুপুরে জেলার সাটুরিয়া উপজেলার নয়াডিঙ্গী গ্রামের অন্তঃসত্ত্বা আফরোজাকে ভর্তি করা হয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে। রাত ২টার দিকে তাকে নেওয়া হয় অপারেশন থিয়েটারে। অপারেশন করতে আনা হয় জেলা শহরের ডক্টর’স ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. খায়রুল হাসান ও অ্যানাস্থেসিস্ট ডা. আশিককে।

অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে একটি কন্যাশিশুর জন্ম হয়। অস্ত্রোপচারের সময় ওই নারীর পেটের মধ্যে একটি টিউমার দেখতে পান চিকিৎসক। তখন তিনি আফরোজার স্বজনদের জানান, তিন হাজার টাকা পেলে টিউমার অপারেশন করবেন। কিন্তু টাকা দিতে দেরি হওয়ায় পেটে টিউমার রেখেই সেলাই করে চিকিৎসক চলে যান বলে অভিযোগ করেন স্বজনরা।

ভুক্তভোগীর স্বামী বলেন, আমি একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করি। আমার আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো না। আমার গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করি। অপারেশন শেষে পেটে টিউমার ধরা পড়লে চিকিৎসক টিউমার অপসারণ করতে তিন হাজার টাকা চান। আমি তার প্রস্তাবে রাজিও হই। কিন্তু ভোর রাতে টাকা সংগ্রহ করতে দেরি হয়। এতে চিকিৎসক পেটের মধ্যে টিউমার রেখেই সেলাই করে চলে যান। তাকে অনেক অনুরোধ করলেও তিনি শোনেননি।

ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, টিউমার অপসারণ করতে আবার পেট কাটতে হবে। মাত্র তিন হাজার টাকার জন্য চিকিৎসক আমার সঙ্গে এমন করলেন?

হাসপাতালের ব্যবস্থাপক হাবিবুর রহমান বলেন, আমাদের হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সর্বক্ষণ থাকলেও সার্জারির চিকিৎসক বেশি রাতে থাকেন না। এ কারণে বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে সার্জারির চিকিৎসকদের ডেকে এনে অপারেশন করা হয়।

তিনি আরও বলেন, শুক্রবার রাতে রোগীর স্বজনরা আমাকে কল দিয়ে আসতে বলেন। আমি চিকিৎসককে অনুরোধ করে বলি, টিউমার অপারেশনের টাকা রোগী না দিলে আমি তাকে দেব। কিন্তু তিনি শোনেননি। পেটে টিউমার রেখে সেলাই করে চলে যান। এটি অত্যন্ত অমানবিক। এতে আমার হাসপাতালের সুনাম নষ্ট হয়েছে।

অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. খায়রুল হাসান বলেন, একটি অপারেশন করতে গিয়ে আরেকটি অপারেশন প্রয়োজন পড়লে তার জন্য বাড়তি টাকা তো চাইতেই পারি। টাকা চাওয়া তো আমার ভুল হয়নি। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর আবার অজ্ঞান করা লাগতে পারে। অথবা অন্য কোনো সমস্যা হতে পারে- এমন ভাবনা থেকেই আর টিউমার অপসারণ করিনি। এটা তো জরুরি নয়, পরেও করা যাবে।

এ বিষয়ে জেলার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. লুৎফর রহমান বলেন, বিষয়টি জানতে পেরেছি। এটি অত্যন্ত অমানবিক। এ ধরনের একজন, দুজন চিকিৎসকের অমানবিক আচরণের কারণে গোটা চিকিৎসক সমাজের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। লিখিত অভিযোগ করলে অবশ্যই তদন্ত করে দেখা হবে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!