প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কারো পরামর্শে নয়, ছয়দফা প্রস্তাব ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজস্ব প্রচেষ্টা। ছয় দফার ওপর ভিত্তি করেই দেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয় অর্জন হয়েছে। কিন্তু ’৭৫-এর পর ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে। এ জন্য আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীকে জীবন দিতে হয়েছে। এখন মানুষ মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারছে।’
বুধবার (২৬ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি আয়োজিত ৭ জুন ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনের এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে ছয় দফা, অর্থাৎ এক-একটা ধাপ আমাদের পার করতে হয়েছে। এটির ওপর ভিত্তি করে আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ এবং আমাদের বিজয় অর্জন হয়েছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ইতিহাস মুছে ফেলা হয়েছিল। আমাদের অনেকেই স্বাধীনতার বিষয়ে জানতে পারেনি। ওই সময় ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এ জন্য আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে জীবন দিতে হয়েছে। এখন অনেক মানুষ বিষয়টি জানতে পারছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেধা থাকা সত্ত্বেও পাকিস্তান আমলে বাঙালিদের পিছিয়ে রাখা হয়েছিল। আর দেশের স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে ছয় দফার ভূমিকা অনেক। তিনি বলেন, পাকিস্তানি শাসন-শোষণ-বঞ্চনা থেকে মুক্তির লক্ষ্যে স্বৈরাচার আইয়ুব সরকারের বিরুদ্ধে ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে তৎকালীন পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের সব বিরোধী রাজনৈতিক দলকে নিয়ে ডাকা এক জাতীয় সম্মেলনে পূর্ব বাংলার জনগণের পক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন। পরে ১১ ফেব্রুয়ারি তিনি দেশে ফিরে ছয় দফার পক্ষে দেশব্যাপী প্রচারাভিযান শুরু করেন এবং বাংলার আনাচে-কানাচে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে জনগণের সামনে ছয় দফার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলার সর্বস্তরের জনগণ ছয় দফায় স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন জানায়। ছয় দফা দাবি আদায়ে ১৯৬৬ সালের ৭ জুন ঢাকাসহ সারা বাংলায় আওয়ামী লীগের ডাকে হরতাল পালিত হয়। হরতাল চলাকালে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও টঙ্গীতে সৈন্যদের গুলিতে মনু মিয়া, সফিক, শামসুল হকসহ বেশ কয়েকজন নিহত হন। গ্রেপ্তার হন অনেকে। স্বাধিকারের এই আন্দোলন ও আত্মত্যাগের পথ বেয়েই শুরু হয়েছিল বাঙালির চূড়ান্ত স্বাধীনতা-সংগ্রাম।
খুলনা গেজেট / এমএম