২০১৯ ও ২০২০ সালে করোনা মহামারীকালে পরিবহন সংকটে বড় ধাক্কা সামাল দিতে হয়েছে খুলনার বোরো চাষিকে। অধিকাংশ হাটে ন্যায্যমূল্য পায়নি। করোনার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে এবার বোরো আবাদে হাইব্রিড জাতকে প্রাধান্য দিচ্ছে এ অঞ্চলের চাষি। এপর্যন্ত অধিকাংশ বীজতলায় হাইব্রিডের পরিমাণটাই বেশি।
মূলতঃ নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে বীজতলা শুরু হয়েছে। বৃহত্তর খুলনার জন্য ২ হাজার ৭শ মে.টন সরকারি বীজ এসেছে। এর চাহিদা দাম বাড়ার কারণেই কম। সাতক্ষীরা খুলনা ও বাগেরহাটে করোনা মহামারির লোকসান কাটানোর পাশাপাশি চাল উৎপাদন বৃদ্ধি ও ব্লাস্ট রোগ এড়াতে হাইব্রিডকে বেছে নিয়েছে এ অঞ্চলের চাষি।
নগরীর কালীবাড়িস্থ খুলনা কৃষি স্টোরের মালিক সরোজিৎ মন্ডল জানান, প্রতিদিন গড়ে ৩শ কেজি হাইব্রিড বীজ বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি বীজের মূল্য ২শ থেকে ২শ ৯০ টাকা। তিনি জানান, পারটেক্সের রাজলক্ষ্মী, এসিআইএর বিআরএস, সেরা, সিক্স, ব্র্যাকের সাথী, মোটা আলোড়ন, সুপার ব্রিডের সুবর্ণ ও মোটা হিরার চাহিদা বেশী। কৃষকের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি জানান, ৫০ শতকের প্রতি বিঘায় বিআর-২৮ জাত রোপনে মৌসুমে ২৫-৩০ মণ ধান হয়। সেক্ষেত্রে একই পরিমাণ জমিতে হাইব্রিড জাত রোপনে ৪০-৪৫ মন উৎপাদন হয়। ফলে লাভের আশায় কৃষক এদিকেই ঝুকে পড়েছে। চিটে থেকে জ্বালানী, জৈব সার ও বিচুলী গো খাদ্যের কারণে কৃষক ৪০ শতাংশ জমিতে স্থানীয় ও উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ রোপন করে।
রূপসা উপজেলার আব্দুলের মোড় এলাকার বীজ ব্যবসায়ী ফিরোজ হোসেন পলাশ জানান, স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে হাইব্রিডের চাহিদাই বেশী। তিনি গড়ে প্রতিদিন ৩শ কেজি বীজ বিক্রি করছে। বীজতলা শুরু হয়েছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বীজতলা তৈরীর কাজ চলবে। তার দেয়া তথ্যমতে স্থানীয় ও উচ্চফলশীল জাতের জমির পরিমাণ বেশ কম।
বটিয়াঘাটা উপজেলার বুনারাবাদ গ্রামের চাষী মনোজ কুমার মন্ডল জানান, তিনি একবিঘা জমিতে উচ্চফলনশীল জাতে এবং আড়াই বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের বীজ দিয়ে আবাদ করবেন। গেল মৌসুমে হাইব্রিডের উৎপাদন ছিল বিঘাপ্রতি ৪০ মন। উচ্চফলণশীল জাতের বীজে কাংখিত উৎপাদন হয়নি। ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ রোপা শুরু হবে।
খুলনা গেজেট/ টি আই