ব্যাটিং কিংবা বোলিং। আবার ফিল্ডিংও। চলমান টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অপার বিস্ময়কর এক দলের নাম যেন পাকিস্তান। দুরন্ত গতিতে ছুটে চলেছে তাদের জয়রথ। লক্ষ্য একটাই, শিরোপা।
সুপার টুয়েলভ পর্বে যে দাপট পাকিস্তান দেখিয়েছে, তার ধারাবাহিকতা থাকলে শিরোপা যাচ্ছে বাবর আজমদের দেশে, তা বলাই যায়। সেই শিরোপার পথে একধা এগিয়ে যেতে আজ মাঠে নামছে পাকিস্তান। টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে পাকিস্তান শিবির। বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হবে ম্যাচটি।
টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে রানার্স আপ। দ্বিতীয় আসরেই চ্যাম্পিয়ন। এরপর টানা দুই আসরে সেমিফাইনাল খেললেও এখন পর্যন্ত ফাইনালের মঞ্চে যেতে পারেনি পাকিস্তান। এবার ওই বৃত্ত ভাঙতে চায় বাবর আজম শিবির। তৃতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে চোখ তাদের।
বিশ্বকাপ মঞ্চে প্রথমবার চিরপ্রতিন্দ্বী ভারতকে হারিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু পাকিস্তানের। নিউজিল্যান্ড ও আফগনিস্তানের বিপক্ষেও আসে জয়। শেষ দুই ম্যাচে পুঁচকে নামিবিয়া ও স্কটল্যান্ডকে হারাতে মোটেও বেগ পেতে হয়নি পাকিস্তানকে।
এখন পর্যন্ত পাকিস্তানের শতভাগ সাফল্যের পেছনে বড় রহস্য ব্যাটার-বোলারদের ধারাবাহিক পারফরমেন্স। দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন অধিনায়ক বাবর আজম। ব্যাট হাতেও দুরন্ত তিনি। পাচ ম্যাচ চার ফিফটিতে করেছেন এবারের আসরের সর্বোচ্চ ২৬৪ রান। বাবরের ওপেনিং পার্টনার মোহাম্মদ রিজওয়ানও আছে তুখোড় ফর্মে। দুটি হাফ-সেঞ্চুরিতে ২১৪ রান করেছেন তিনি। বোলিং বিভাগে দুই পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি ও হাসান রউফ আছেন সেরা ফর্মে। দুই স্পিনার ইমাদ ওয়াসিম ও শাদাব খানও চমক দেখাচ্ছেন প্রতি ম্যাচে।
ফাইনালে উঠার সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় না পাকিস্তান। দলের নির্ভরযোগ্য ব্যাটার রিজওয়ান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যা পারফরমেন্স, ফাইনালে ওঠার যোগ্য দল আমরা। এই সুযোগটা হাতছাড়া করতে চাই না।’
অন্যদিকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে একবারই ফাইনাল খেলার সৌভাগ্য হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার। সেটি ২০১০ সালে। কিন্তু ইংল্যান্ডের কাছে ৭ উইকেটে হেরে বিশ্বকাপের তৃতীয় আসরটি স্মরণীয় করে রাখতে পারেনি অজিরা। তবে এবার সেই খরা কাটাতে অবিচল ফিঞ্চ শিবির।
সুপার টুয়েলভে ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটাররা। শুধুমাত্র ডেভিড ওয়ার্নার ও অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চই ব্যক্তিগত তিন অঙ্কে নিতে পারেন। দুটি হাফ-সেঞ্চুরিতে ৫ ইনিংসে ১৮৭ রান করেন ওয়ার্নার। হাফ-সেঞ্চুরি বা সেঞ্চুরি ছাড়াই ৫ ইনিংসে ১৩০ রান ফিঞ্চের।
তবে প্রতি ম্যাচেই জ্বলে উঠেছেন অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা। বিশেষভাবে স্পিনার এডাম জাম্পা। ৫ ইনিংসে ১১ উইকেট নিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৯ রানে ৫ উইকেট সেরা বোলিং ফিগার জাম্পার। তার সাথে পেসার ত্রয়ী জশ হ্যাজেলউড ৮টি, মিচেল স্টার্ক ৭টি ও প্যাট কামিন্স ৪ উইকেট নেন।
সুপার টুয়েলভে করা পারফরমেন্সের ধারাবাহিকতা শেষ চারেও অব্যাহত রাখতে চায় অস্ট্রেলিয়া। শক্তিশালী পাকিস্তানকে হারাতে হলে, ভালো পারফরমেন্স ছাড়া কোনো উপায় নেই, বলে দিলেন ওয়ার্নার। তিনি বলেন, ‘শক্তিশালী এক প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলতে হবে আমাদের। সুপার টুয়েলভে কেমন করেছে পাকিস্তান, তা সকলেই জানে। তাই ফাইনালে খেলতে হলে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন বিভাগেই জ্বলে উঠতে হবে আমাদের।’
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পরিসংখ্যানে পাকিস্তান এগিয়ে। দুই দল ২৩বার মোকাবেলা করেছে। পাকিস্তানের জয় ১২টি। অজিদের জয় ৯টি। এক ম্যাচ টাই, এক ম্যাচ পরিত্যক্ত। বিশ্বকাপে ছয়বারের দেখায় দুই দলের জয় তিনটি করে।
খুলনা গেজেট/ এস আই