খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আইপিএল নিলামে অবিক্রিত মোস্তাফিজুর রহমান, ভিত্তিমূল্য ছিলো ২ কোটি রুপি
  ইসকন নেতা চিন্ময় দাসকে বিমান বন্দরে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি
  কক্সবাজারের টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
  সাবেক আইজিপি মামুনের ফের ৩ দিনের রিমান্ড

সাতক্ষীরা সদরের ১৩ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৬৪ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

রাত পোহালে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে । দিন-রাত বিরতিহীনভাবে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করে নির্বাচনী প্রচারণা শেষ করেছেন প্রার্থীরা। ভোটারদের মধ্যেও চলছে চরম হিসাব-নিকাশ। পাওয়া-না পাওয়ার সমীকরণ মিলাচ্ছেন ভোটাররা।

এদিকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য ভোট গ্রহণের সকল প্রস্তুতি শেষ করেছেন নির্বাচন কমিশন। আইন -শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরাও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বেশ তৎপর। নির্বাচনী এলাকায় পুলিশী টহল জোরদার করা হয়েছে। শান্তি-শৃংখলা বজায় রাখার স্বার্থে পুলিশ দিন-রাত কাজ করছে বলে জানা গেছে। পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরাও রয়েছেন মাঠে। তারাও নজর রাখছেন প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের উপর।

অপরদিকে মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে। জেলা সদরের ১৩টি ইউনিয়নে বিরাজ করছে ভোট উৎসব। ভোট প্রদানের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন তারা। রাত শেষ হলেই বৃহস্পতিবার ভোটকেন্দ্রগুলো ভোটারদের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে উঠবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়ন বাদে বাকি ১৩টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইউনিয়ন গুলো হচ্ছে-বাঁশদহা, কুশখালি, বৈকারী, ঘোনা, শিবপুর, ভোমরা, ধুলিহর, ব্রহ্মরাজপুর, আগরদাড়ি, ঝাউডাঙ্গা, বল্লী, লাবসা ও ফিংড়ি। ১৩টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৬৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

১৩টি ইউনিয়নে মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১২৬টি। ভোট কক্ষের সংখ্যা ৭১৯টি এবং অস্থায়ী ভোট কক্ষের সংখ্যা ৫৫টি।

পুরুষ ভোটার এক লাখ ৩৪ হাজার ২২৪ জন এবং নারী ভোটার এক লাখ ৩২ হাজার ৪২৯ জন। সদর উপজেলায় ১৩ ইউনিয়নে মোট ভোটার দুই লাখ ৬৬ হাজার ৬৫৩ জন।

দ্বিতীয় ধাপের এই নির্বাচনে বিএনপি সরাসরি নির্বাচনে অংশ না নিলেও সাতক্ষীরায় সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে বৈকারী, কুশখালী, শিবপুর, ফিংড়ী ও ধুলিহর ইউনিয়ন ব্যতিত বাকি ৯ ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সরাসরি বিএনপির পদে থাকা দলীয় নেতা-কর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এদিকে, ব্রহ্মরাজপুর, লাবসা ও ভোমরা ইউনিয়ন বাদে বাকি ১০টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া ফিংড়ী, ঘোনা, বৈকারী ও বাশদাহ ইউনিয়নে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী রয়েছে। এছাড়া আগরদাঁড়ি, ঘোনা ও বৈকারীসহ কয়েকটি ইউনিয়নে জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে। আর দুটি ইউনিয়নে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হাতপাখা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তবে একাধিক ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় অধিকাংশ ইউনিয়নে এবার নৌকার প্রার্থীদের ভরাডুবির আশংকা করছেন অনেকেই। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীদের কারণে সুযোগ নিতে পারে জামায়াত সমর্থক স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার বাঁশদহ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল খালেক (টেলিফোন), এ.এইচ.এম কামরুজ্জামান (চশমা), বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান এসএম মোশাররফ হোসেন (আনারস), মো: নাজমুল হাসান (মোটর সাইকেল), ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: মফিজুর রহমান (নৌকা), মো: ময়নুর রহমান (দুটি পাতা), জাতীয় পার্টির শেখ শরিফুজ্জান (লাঙ্গল)।

কুশখালী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মুহাম্মদ আব্দুল গফফার (টেলিফোন) মো: আবুল কালাম আজাদ (ঢোল), মো: ইকবাল হোসেন (টেবিলফ্যান) মো: কবির উদ্দীন মন্ডল (ঘোড়া) মো: গোলাম মোস্তফা (অটোরিক্সা), ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: তাজউল ইসলাম (নৌকা), ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের মো: মনিরুল ইসলাম (আনারস), জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো: মুনছুর আলী সরদার (লাঙ্গল), মো: শফিকুল ইসলাম (রজনীগন্ধা), ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: সাইফুদ্দীন পলাশ (চশমা) ও মো: হুমায়ুন কবির (মোটর সাইকেল)।

লাবসা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ইউপি বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল আলিম (আনারস), মোহাম্মাদ শাহীন হোসেন (মোটর সাইকেল) ও থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো: নজরুল ইসলাম (নৌকা)। বল্লী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। ইউনিয়ন পরিষদে বিদ্রোহী প্রার্থী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো: খায়রুল ইসলাম (মোটর সাইকেল), বল্লি ইউনিয়নের ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: বজলুর রহমান (নৌকা), উপজেলা বিএনপির সদস্য মো: মহিতুল ইসলাম (আনারস) ও শেখ হাবিবুর রহমান (চশমা)।

আগরদাড়ি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সদর উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোহম্মদ লুৎফর রহমান (ঘোড়া), মো: কবীর হোসেন (টেবিল ফ্যান), মো: নুরুল ইসলাম (আনারস), থানা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো: মঈনুল ইসলাম (নৌকা), ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বর্তমান চেয়ারম্যান মো: মজনুর রহমান (চশমা), শাহিদ (মোটর সাইকেল) ও হাবিবুর রহমান (অটোরিক্সা)।

ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জয়দেব কুমার ঘোষ (আনারস), আওয়ামী লীগের সমর্থিত বর্তমান চেয়ারম্যান মো: আজমল উদ্দীন (নৌকা) ও বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলাম (মোটর সাইকেল)।

ঘোনা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ৫জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো: আব্দুল কাদের (মোটর সাইকেল), বিএনপির প্রার্থী হিসেবে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মো: কামরুজ্জামান (আনারস), সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বর্তমান চেয়ারম্যান মো: ফজলুর রহমান (নৌকা), জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক পেয়ে মো: বদরুজ্জামান (লাঙ্গল) ও মো: সদর উপজেলার পশ্চিম জামায়াতের সেক্রেটারি মোশাররাফ হোসেন (চশমা)।

বৈকারী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ৩জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইউনিয়ন পরিষদে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ আবু মো: মোস্তফা কামাল (মটর সাইকেল), সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বর্তমান চেয়ারম্যান মো: আসাদুজ্জামান (নৌকা) ও জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী মো: জালাল উদ্দীন (আনারস)।

ভোমরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বর্তমান চেয়ারম্যান ইসরাইল গাজী (মোটর সাইকেল), মো: মমিমুল ইসলাম (ঘোড়া), মো: সামছুল আলম (চশমা), মো: সাহেব আলী (আনারস) ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম (নৌকা)। শিবপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শ্রম বিষয়ক সম্পাাদক এসএম আবুল কালাম আজাদ (আনারস), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো: ইমাদুল হোসেন (হাতপাখা) ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত আলী (নৌকা)।

ফিংড়ি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বেলাল হোসেন (হাতপাখা), জামাতের মো: আজাদুল ইসলাম (চশমা), মো: লুৎফর রহমান (আনারস), আওয়ামী লীগের মনোনীত বর্তমান চেয়ারম্যান মো: সামছুর রহমান (নৌকা) ও মো: সেলিম রেজা গাজী (মোটর সাইকেল)।

ধুলিহর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মো: ফজলুর রহমান (চশমা), আওয়ামী লীগ মনোনীত বর্তমান চেয়ারম্যান মো: মিজানুর রহমান (নৌকা), মো: মিজানুর রহমান চৌধুরী (আনারস) ও স. ম. মসিউর রহমান (মোটর সাইকেল)।

ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মো: আলাউদ্দীন (নৌকা), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো: এবাদুল ইসলাম (হাতপাখা), থানা বিএনপির সহ-সভাপতি মো: নূরুল ইসলাম (মোটর সাইকেল) ও সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বর্তমান চেয়ারম্যান মো: শহিদুল ইসলাম (আনারস)।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!