বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাহিদামতো বকশিশের টাকা না পেয়ে অক্সিজেন মাস্ক খুলে দেওয়ায় এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১১টায় হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ঘটনাটি ঘটে। সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ছিলেন ওই রোগী।
ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত ওয়ার্ডবয় পলাতক রয়েছেন। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ছিলিমপুর মেডিকেল ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই শামিম হোসেন। নিহত ওই রোগীর নাম বিকাশ চন্দ্র দাস (১৮)। তিনি গাইবান্ধার সাঘাটার শিয়ালকুন্ডি গ্রামের বিশু দাসের ছেলে।
বিকাশ চন্দ্র দাসের চাচা শচীন চন্দ্র জানান, ভাতিজা বিকাশ চন্দ্র সন্ধ্যা ৭টায় সাঘাটায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়। এরপর লোকজন তাকে সাঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে ডাক্তার। এরপর স্বজনরা শজিমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়ার পর ওয়ার্ডবয় দুলু ট্রলি নিয়ে যায়।
ট্রলিতে বিকাশকে নামানোর পর জরুরি বিভাগে নিয়ে ভর্তি করা হয়। এরপর সেখানে তার মাথা ড্রেসিং করার পর অক্সিজেন মাস্ক লাগিয়ে ট্রলিতে করে সার্জারি বিভাগে ওয়ার্ডবয় দুলু নিয়ে যায়। ফ্লোরে বিকাশকে নামিয়ে দেওয়ার পর ওয়ার্ডবয় দুলু ট্রলিতে করে ওপরে নিয়ে আসার জন্য তাদের কাছে ২০০ টাকা বকশিশ চায়। কিন্তু ২০০ টাকার জায়গায় ১৫০ টাকা দেওয়ায় ওয়ার্ডবয় অক্সিজেন মাস্ক খুলে দেওয়ার কথা বলেন।
কিন্তু তারা তাকে মাস্ক না খোলার অনুরোধ করেন। এরপরও ৫০ টাকা না পেয়ে টান দিয়ে রোগীর অক্সিজেন মাস্ক খুলে দেন। এর পরপরই বিকাশের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তখন তারা ওয়ার্ডবয়কে অক্সিজেন লাগিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করে কিন্তু ওয়ার্ডবয় ৫০ টাকা না দিলে লাগাবে না জানায়।
এরপর তারা নিজেরাই বিকাশের মুখে অক্সিজেন লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। যখন তার ভাতিজার নাক দিয়ে শ্লেষ্মা বের হওয়া শুরু করে তখন ওয়ার্ডবয় পুনরায় অক্সিজেন লাগিয়ে দেয়। এরপর পর তার ভাতিজা আর শ্বাস নিচ্ছে না দেখে ওয়ার্ডবয় সেখান থেকে পালিয়ে যান। পরে ডাক্তার এসে রোগীকে মৃত ঘোষণা করেন।
ছিলিমপুর মেডিকেল ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই (উপপরিদর্শক) শামিম হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ঘটনার পর থেকেই ওয়ার্ডবয় দুলু পালিয়ে গেছে। লাশ হাসপাতালের মর্গে আছে।
খুলনা গেজেট/ টি আই