আর মাত্র ১০দিন বাকি। আগামী ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। এই নির্বাচনকে ঘিরে প্রতিটি ইউনিয়নের অলিগলি ছেয়ে গেছে নির্বাচনী পোস্টার ও ব্যানারে। প্রতীক পেয়েই অনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণায় নেমে পড়েন প্রার্থীরা। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। নিজেদের অবস্থান জানান দিতে প্রার্থীরা তার কর্মী সমার্থকদের নিয়ে পথসভা, মিছিল ও মিনি শোডাউন করে চলেছেন।
এই নির্বাচনে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৬৪ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১৬০ জন ও সাধারণ ইউপি সদস্য পদে ৪৯১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থীর প্রতিদ্ব›িদ্বতায় একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। রয়েছে জাপা ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং অন্যান্য স্বতন্ত্র প্রার্থী। তবে কয়েকটি ইউপিতে বিএনপি’র প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এদিকে চেয়ারম্যান প্রার্থীর পাশাপাশি প্রতিটি ইউনিয়নের পাড়া-মহল্লায় শোভা পাচ্ছে সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্য প্রার্থীদের পোস্টারও। রাস্তার পাশে, দেওয়ালে, অলিগলিতে কোথাও এতটুকু ফাঁকা নেই। সবখানেই শোভা পাচ্ছে চেয়ারম্যান প্রার্থীদেও পাশাপাশি নারী সদস্য ও সাধারণ সদস্যদের ছবি সংবলিত পোস্টার। এসব পোস্টার ও ব্যানারে প্রার্থীদের ছবি, গ্লোগানের পাশাপাশি রয়েছে নির্বাচনী নানা প্রতিশ্রুতি।
সরেজমিন কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার বাশদহা, কুশখালি, বৈকারি, ঘোনা, শিবপুর, ভোমরা, ধুলিহর, ব্রহ্মরাজপুর, আগরদাড়ি, ঝাউডাঙ্গা, বল্লী, লাবসা ও ফিংড়ী এলাকা নির্বাচনী পোস্টারে ছেয়ে গেছে। এলাকার স্কুল, কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসা, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সামনে সারি সারি সাদা-কালো পোস্টার লাগানো হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রধান সড়কে ঢুকতেই এসব পোস্টার চোখে পড়ছে। তবে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর পোস্টার ঝুলতে দেখা যায় সবচেয়ে বেশি।
এদিকে, প্রতিদিন দুপুরের পর থেকে রাত পর্যন্ত এলাকায় চলছে উচ্চ শব্দে মাইকিং। পাড়ায়-পাড়ায় প্রার্থীদের মাইকের আওয়াজে কান-মাথা ঝালাপালা হচ্ছে বলে জানান সাধারণ ভোটাররা। ছন্দে-ছন্দে ভরাট গলায় একাধিক প্রার্থীর মাইক থেকে একই সাথে চালানো হচ্ছে প্রচার। অপরদিকে গ্রামের হাট-বাজার ও বিভিন্ন মোড়ের চায়ের দোকানগুলোতে কাকডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বসছে গরীবের সংসদ। সেখানে কষ্টাধোয়া হচ্ছেন প্রার্থীরা। ভোটারদের বিশ্লেষণ আর পাওয়া না পাওয়ার সমীকরণ চলছে গরীবের সংসদে।
এদিকে প্রার্থীরা কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের কাছে তুলে ধরছেন পরিচয় ও প্রত্যয়। সব মিলিয়ে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে লেগেছে ভোটের হাওয়া। উৎসবমূখর পরিবেশে চলছে প্রচার-প্রচারণা।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা রির্টানিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাচন অফিসার শরিফুল ইসলাম বলেন, আগামী ১১ নভেম্বর সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৬৪ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১৬০ জন ও সাধারণ ইউপি সদস্য পদে ৪৯১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর আগে চেয়ারম্যান পদে ৭৩ জন, সাধারণ সদস্য পদে ৫১৩ জও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৬২ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন। গত ২৬ অক্টোবর নোনয়ন প্রত্যাহারের নির্ধারিত দিনে চেয়ারম্যান পদে ৮জন, সাধারণ সদস্য পদে ২ জন এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৫ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নেন। এরমধ্যে সদর উপজেলার লাবসা ইউনিয়নে একজন সাধারণ সদস্য বিনা প্রতিদ্ব›দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, দলগতভাবে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ ১৩, জাতীয় পার্টি ৩, ইশা আন্দোলন ৩ ও স্বতন্ত্র ৪৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিকে রয়েছেন। এদের মধ্যে কুশখালী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে সর্বাধিক ১১ জন প্রার্থী রয়েছেন।