বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যাচই মানা হয় আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের ম্যাচকে। পুরো বিশ্ব এ দুই দলের সমর্থক অনেক বেশি থাকায় এর আকর্ষণও বেশি। কিন্তু সেই ম্যাচেই রীতিমতো কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে। ম্যাচ শুরুর পাঁচ মিনিট পর স্থগিতই হয়ে গেল ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার ম্যাচ। ফুটবল দেখল স্মরণীয় এক ঘটনা। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের এই ম্যাচটি স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন।
ব্রাজিলিয়ান হেলথ রেগুলেটরি এজেন্সির নির্দেশনা অনুয়ায়ী, ব্রাজিলিয়ান ছাড়া অন্য কেউ ব্রিটেন, উত্তর আয়ারল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারত থেকে ব্রাজিলে প্রবেশ নিষিদ্ধ। যাদের ছাড় দেওয়া হয়েছে, তাদের অবশ্যই দেশটিতে আসার পর ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
কিন্তু এই নিয়ম মানা হয়নি আর্জেন্টিনার স্কোয়াডে থাকা চার ফুটবলার এমিলিয়ানো বুয়েন্দিয়া, এমিলিয়ানো মার্টিনেজ, জিওভানি লো চেলসো ও ক্রিশ্চিয়ান রোমেরোর ক্ষেত্রে। নিয়ম না মানলেও তাদের তিনজনকে একাদশে রাখে আর্জেন্টিনা। খেলা শুরুর আগে বাধা না দিলেও ম্যাচ শুরুর পর তৎপর হন ব্রাজিলের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
ম্যাচ যদি আসলেই স্থগিত হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে ক্ষতি হবে ব্রাজিলেরই। কনমেবল জানিয়েছে, ম্যাচ আয়োজিত না হলে আর্জেন্টিনাকে তিন পয়েন্ট দেওয়া হবে। সাও পাওলোর স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছিল, ব্রাজিলের করোনার নিয়ম অনুযায়ী দেশটিতে অব্রাজিলীয়দের ব্রিটেন, নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারত থেকে সরাসরি প্রবেশের অনুমতি নেই। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে বিষয়টিতে ছাড় দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে ব্রাজিলে প্রবেশের আগে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বিশেষ অনুমতি নিতে হবে। অন্যথায় ব্রাজিলে প্রবেশের পর ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিন করতে হবে।
অ্যাস্টন ভিলা ও টটেনহামে খেলার কারণে এমিলিয়ানো মার্তিনেজ, ক্রিস্টিয়ান রোমেরো, এমিলিয়ানো বুয়েন্দিয়া ও জোভান্নি লো সেলসোর কেউই ১৪ দিনের এই কোয়ারেন্টিন পালন করেননি। তাঁরা ইংল্যান্ড থেকে প্রথমে পা রেখেছেন আর্জেন্টিনায়। সেখান থেকে তারা ভেনেজুয়েলায় ম্যাচ খেলে পা রেখেছেন ব্রাজিলে। আর্জেন্টিনা ও ভেনেজুয়েলায় যদি তাঁরা ১৪ দিন কাটিয়ে আসতেন তাহলে আর আইন তাঁদের আটকাতে পারত না বলেই জানিয়েছে সাও পাওলোর স্বাস্থ্য বিভাগ। এই নিয়েই গত দুদিন ধরে সংশয়ে ছিল আর্জেন্টিনা।
বেশ কিছুক্ষণ আর্জেন্টিনার কোচ ও খেলোয়াড়দের সঙ্গে তর্ক করেন তারা। পরে মাঠ ছেড়ে চলে যান আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা। খানিক বাদে আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিওনেল মেসি মাঠে ফেরেন। এরপর তিনি বেশ কিছুক্ষণ কথা বলে আবার ড্রেসিং রুমে ফেরেন। এরপরই খেলা স্থগিতের ঘোষণা আসে।
এ ঘটনায় আর্জেন্টাইন কোচ লিওনেল স্ক্যালোনি চটেছেন বেশ। ম্যাচের মাঝপথে খেলা বন্ধ করায় ক্ষুব্ধ তিনি। কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার সময় স্ক্যালোনি বলেছেন, ‘এই চার ফুটবলারকে কেন হোটেল থেকে তুলে নেওয়া হলো না।’
গত তিনদিন ধরেই ব্রাজিলে আছে আর্জেন্টিনা ফুটবল দল। এই সময়ে তারা করেছে অনুশীলনও। কিন্তু ম্যাচ শুরুর পর কেন হঠাৎ ব্রাজিলিয়ান স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা তৎপর হলেন সেটা বুঝতে পারছেন না আর্জেন্টিনা কোচ। ‘কেউ আমাদের কিছু জানায়নি বলেও দাবি তার।