আমাদের প্রায় প্রত্যেকের বাড়িতেই পুরনো দিনের এমন অনেক জিনিসই থাকে যা হয়তো ব্যবহৃত হয় না৷ হয়তো স্মৃতিস্বরূপ বলে অথবা আবেগের বশে আমরা তা ফেলতে পারি না৷ আবার হাল আমলের জিনিসও থাকে যার হয়তো আর প্রয়োজন নেই৷ সেই সব জিনিসই যদি আমরা ফেলে না দিয়ে, স্টোর রুমে না রেখে, অল্প পরিশ্রমে আর সামান্য বুদ্ধি খাটিয়ে এক নতুন রূপ দিই তাহলে তা সৌন্দর্যের সঙ্গে সঙ্গে তার ব্যবহারযোগ্যতাও ফিরে পাবে৷
প্লাস্টিক বা কাঁচের বোতল
অব্যবহৃত কাঁচের বোতলে তৈরি হতে পারে দারুণ ফুলদানী। বোতলের গায়ে গ্লাস পেইন্টিং করে কিছু এঁকে নিলে আরো সুন্দর হয়ে যাবে সেটা, চেষ্টা করে দেখতে পারেন কিন্তু। নিজ হাতে বানানো নতুন ফুলদানী ঘরের শোভা বাড়াবে।
প্লাস্টিকের বোতলে বানিয়ে নেওয়া যায় কলমদানী, কিংবা সাজের আয়নার তাকে রাখা টুকিটাকি জিনিসগুলো গুছিয়ে রাখার পাত্র, অর্থাৎ ক্লিপ, পিন এসবের হোল্ডার। প্লাস্টিকের বোতল কাজে লাগতে পারে ঘরে রাখার ছোট গাছের টব হিসেবেও।
পুরনো কার্ড
নেমন্তন্নের কার্ড ঘরে জমানো থেকে যায় অনেকের। দেখবেন হয়তো অনেকগুলো কার্ড জমে গেছে আপনার ঘরেও, হরেক রঙের হরেক ঢঙের। ফেলে না দিয়ে এইগুলোও কাজে লাগানো যায়। এইসব কার্ডে তৈরি হতে পারে চমৎকার ফটো ফ্রেম। আবার বাক্স বানানোর কাজেও ব্যবহৃত হতে পারে কার্ডের শক্ত আবরণ।
গয়না
চুড়িরও আছে বেশ কার্যকরী ভূমিকা। কলমদানী হিসেবে চুড়ি কাজে লাগাতে পারেন খানিক নান্দনিক উপায়ে। অনেকগুলো চুড়ি পরপর জুড়ে দিয়ে করতে হয় এটা। এই জিনিস ব্যবহার করতে পারেন যেকোন কিছু গুছিয়ে রাখতে, তা সে কলম-পেন্সিল হোক অথবা আপনার ব্যান্ড-ক্লিপ।
পুরনো কাপড়
পুরনো কাপড় পছন্দের কাপড় হয়তো সামান্য ছিঁড়ে গিয়েছে বা তার রং নষ্ট হয়ে গিয়েছে কিন্তু কাপড়ের রঙিন পাড় ভালোই আছে, এরকম হলে তা দিয়ে বাসন না কিনে একবার নয় সেটা দিয়ে কিছু একটা বানালেন যা দেখতেও ভালো আবার কাজেও লাগে৷ এক্ষেত্রে কাপড়ের পাড় বা কাপড় তিনটে আলাদা পার্ট করে বিনুনি মতো করে গোল করে পাপোস বানাতে পারেন৷
কাগজ
কাগজ দিয়ে বানানো যায় এমন যে কত রকম জিনিসপাতি আছে তার সঠিক হিসেব মেলা কঠিন। হস্তশিল্পের এক দারুণ ক্ষেত্র অরিগ্যামি যা কিনা কাগজ দিয়ে হরেক রকম সামগ্রী বানাতে শেখায়।
কাগজের কার্ডের কথা সবার আগে আসবে, রঙিন কাগজ ঘরে থেকে থাকলে কখনো কার্ড বানানোর কাজে লেগে যাবে। যেকোন পুরনো কাগজে বানাতে পারেন ফুল, পাতা এসব ঘর সাজানোর জিনিস। বড় কাগজের বাক্স থাকলে সেটা হতে পারে নতুন কোন স্টোরেজ বক্স।
মোমবাতি
ড্রয়ারের ভেতরে বহু পুরনো মোমের সন্ধান পেলে সেটা নতুন করে কাজে লাগানোর কথা ভাবতেই পারেন। আগুন জ্বালিয়ে নয়, বরং নতুন কোন রূপ দিয়ে। মোম দিয়ে তৈরি হতে পারে ফুল, দেখতে বেশ ভালো লাগে আর শো-পিস হিসেবে তো এমন একটা জিনিস চমৎকার হয়।
গ্লাস
গ্লাস অনেক সময়ই দেখা যায় পছন্দের গ্লাস সেটের গ্লাস ভাঙতে ভাঙতে হয়তো একটায় গিয়ে ঠেকেছে৷ যা আর অতিথি আপ্যায়নে লাগবে না৷ তখন তা দিয়ে অনায়াসেই আপনি বানিয়ে ফেলতে পারেন সুন্দর একটা ক্যান্ডেল৷ গ্লাসের ভেতর প্যারাফিন গলিয়ে তাতে রং মিশিয়ে ঢেলে চটজলদি বানানো যায় সুন্দর মোমবাতি৷ আবার অতো ঝামেলায় যেতে না চাইলে তার ভেতর বালি, রঙিন নুড়িপাথর ভরে চমত্কার শো-পিসও বানানো যায়৷
গানের রেকর্ড /সিডি
পুরনো সিডির পাহাড় জমিয়েছেন ঘরে, তো হুট করে একদিন সব ফেলে না দিয়ে বরং একটা ফটোফ্রেম বানিয়ে ফেলুন। নতুন ফটোফ্রেমে পুরনো সিডির ব্যবহার কিন্তু দারুণ কার্যকরী।
পুরনো দিনের গানের রেকর্ড যা আর শোনার মতো অবস্থায় নেই, সেই রেকর্ডগুলোই ঘরের দেওয়ালে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখলে দেখতে অন্যরকম লাগবে৷ আবার রেকর্ডে ঘড়ির মেশিন লাগিয়ে তা দিয়ে ঘড়িও বানানো যেতে পারে৷
টিনের কৌটো
পুরনো টিনের কৌটো রং করে বা কাপড় অথবা রঙিন কাগজে কভার করে তা দিয়ে পেনস্ট্যান্ড বানিয়ে ফেলা খুবই সহজ যা অত্যন্ত কাজের একটি বস্তু৷
কুপি ও হ্যারিকেন
কুপি ও হ্যারিকেন বাড়িতে পুরনো কুপি বা হ্যারিকেন থাকলে তা না ফেলে সুন্দর করে রং করে শো-পিস হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন৷
কাঁসার বাসন
কাঁসার বাসন ফেলে না রেখে ঘর সাজানোর কাজে লাগাতেই পারেন৷ কানা উঁচু কাঁসার থালায় মোমবাতি, কড়ি বা রঙিন পাথর রেখে সাজালে দেখতে খুবই সুন্দর লাগবে৷ এতে মোমবাতি দিয়েও সাজাতে পারেন৷ আবার কাঁসার বাটিতে পানি দিয়ে তাতে ফুল বা ফ্লোটিং মোমবাতি দিয়ে সেন্টার টেবিলের ওপরও সুন্দর করে সাজিয়ে রাখতে পারেন৷
খুলনা গেজেট/এনএম