সাকিব ঘূর্ণিতে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে দাপুটে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ১২৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৬২ রানে অলআউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। সফরকারীদের ৬০ রানের পরাজিত করেছে টাইগাররা। আর এতেই প্রথমবারের মতো সিরিজে ৪-১ ম্যাচ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
নিজেদের ব্যাটিং ব্যর্থতা ঢাকতে টসে জিতে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বলেছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটিং ইউনিট আরও ভালো। দারুণ শুরু করে অধিনায়কের কথা রেখেছিলেন দুই ওপেনার শেখ মেহেদি হাসান ও মোহাম্মদ নাইম। তবে সময় যত গড়িয়েছে ততই ব্যাটিং ব্যর্থতা ফুটে ওঠেছে বাংলাদেশের।
শেষ পর্যন্ত ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ১২২ রানে থামে স্বাগতিকরা। ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হলেও পুরো সিরিজের মতো আলো ছড়িয়েছেন বোলাররা। সাকিব আল হাসান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও নাসুম আহমেদদের কল্যাণে অস্ট্রেলিয়াকে মাত্র ৬২ রানে অল আউট করে বাংলাদেশ। ৬০ রানের জয়ে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ নিজেদের করে নিলো মাহমুদউল্লাহর দল।
জয়ের জন্য ১২৩ রানের লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই সাজঘরে ফেরেন ড্যানিয়েল ক্রিস্টিয়ান। নাসুমের শট অব লেন্থে বলে লাইন মিস করে বোল্ড আউট হয়েছেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।
নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে পুরো সিরিজে দাপট দেখানো মিচেল মার্শকে সাজঘরে পাঠান নাসুম। বাঁহাতি এই স্পিনারের গুড লেন্থের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটেন ৪ রান করা মার্শ। এরপর বেন ম্যাকডারমটকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড।
যদিও সেটা খুব বেশি সময় স্থায়ী হতে দেননি সাকিব। ইনিংসের অষ্টম ওভারে প্রথমবারের মতো বল করতে আসেন বাঁহাতি এই স্পিনার। বোলিংয়ে এসে নিজের দ্বিতীয় বলেই অজি অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েডকে বোল্ড করে আউট করেছেন সাকিব। ২২ বলে ২২ রানের ইনিংস খেলেছেন ওয়েড।
সাকিবের পর মাহমুদউল্লাহও বোলিংয়ে এসেই উইকেট নিয়েছেন। ম্যাকডারমটকে ফিরতি ক্যাচ নিয়ে সাজঘরের পথ দেখিয়েছেন তিনি। এরপর সাইফউদ্দিন মাত্র ৩ রান করা অ্যালেক্স ক্যারিকে বোল্ড করে আউট করেন। এরপর একই সমান রান করা ময়েজেস হেনরিকসকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন সাইফউদ্দিন।
ইনিংসের ১২তম ওভারে সাকিব বলে শর্ট কভার দিয়ে খেলার চেষ্টা করেছিলেন অ্যাস্টন টার্নার। তবে ব্যাটে-বলে সেভাবে টাইমিং না হওয়ায় মাহমুদউল্লাহর হাতে ক্যাচ তুলে দেন এই অজি ব্যাটসম্যান। তাতে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ১ হাজার রান ও ১০০ উইকেট নেয়ার কীর্তি গড়েন সাকিব।
এ ছাড়া টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ উইকেট নিয়েছেন তিনি। এর আগে টি-টোয়েন্টিতে প্রথম বোলার হিসেবে ১০০ উইকেট নেয়ার মাইলফলক গড়েছিলেন লাসিথ মালিঙ্গা। শেষ দিকে অজি ব্যাটসম্যানরা সেভাবে না দাঁড়াতে পারায় মাত্র ৬২ রানে গুটিয়ে যায় তাঁরা।
যা কিনা অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি ইতিহাতে সর্বনিম্ন দলীয় রান। এর আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বনিম্ন ৭৯ রানে অল আউট হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে সাবি চারটি, সাইফউদ্দিন তিনটি ও নাসুম নিয়েছেন দুটি উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
বাংলাদেশ : ১২২/৮ (২০ ওভার) (নাইম ২৩, মেহেদি ১৩, সাকিব ১১, সৌম্য ১৬, মাহমুদউল্লাহ ১৯, সোহান ৮, আফিফ ১০, মোসাদ্দেক ৪*; ক্রিস্টিয়ান ২/১৭)
অস্ট্রেলিয়া : ৬২/১০ ( ওভার ১৩.৪) (ওয়েড ২২, ম্যাকডারমট ১৭, সাকিব ৪/৯, সাইফউদ্দিন ৩/১২, নাসুম ২/৮)