খুলনা অঞ্চলে করোনার মধ্যে ডেঙ্গু হানা দিয়েছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনজন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। এদিকে ডেঙ্গুর প্রকপ প্রতিরোধে খুলনা মেডিকেলে চলছে ডেঙ্গু ওয়ার্ড তৈরির প্রস্তুতি।
খুমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সোমবার ভোর রাত পৌনে চারটার দিকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সজীব (৩২) নামে এক রোগি ভর্তি হয়েছেন। তিনি বাগেরহাট মোড়লগন্জের কচুবুনিয়ার দেলোয়ারের ছেলে। এদিন বিকাল ৬ টার দিকে একই জেলার রামপাল উপজেলার বাশতলি এলাকার অপুর ছেলে অতিস (৪) এক শিশু ভর্তি হয়েছেন।
এছাড়া রাত ৯ টার দিকে নড়াইল লোগাগড়ার লুটিয়া এলাকার কানু ঘোষের ছেলে লিংকন ঘোষ(১০) ভর্তি হয়েছেন।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. রবিউল ইসলাম বলেন, খুলনায় এখনও ডেঙ্গুর প্রভাব বিস্তার করেনি। তবুও আমাদের সকল প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। গত বছর ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় বর্তমান ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু এ বছর সেখানে করোনা আক্রান্ত রোগীদের ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ফলে ওই ওয়ার্ড ডেঙ্গু রোগীর জন্য আর ব্যবহার করা যাচ্ছে না। তবে হাসপাতালের ২টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ১০ শয্যার একটি ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হবে। আগামী বৃহস্পতিবার (০৫ আগস্ট) চিকিৎসকদের সাথে বৈঠক করে ডেঙ্গু ওয়ার্ডের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ডেঙ্গু সংক্রমণ মশার মাধ্যমে ছড়ায়। ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে মশা কামড় দিয়ে অন্যব্যক্তিকে কামড়ালে ডেঙ্গু ছড়ায়। এ জন্য মানুষকে সচেতন হতে হবে। মশার লার্ভা ধ্বংস করতে হবে। জমে থাকা বৃষ্টির পানি, বাসাবাড়ির ছাদে ফুলের টবে, বিভিন্ন স্থানে ডাবের খোলা, প্লাস্টিক, ফ্রিজের নিচে জমে থাকা পানি ও মাটির পাত্রে জমে থাকা পানি এবং বাড়ির আঙিনা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
এদিকে নগরীতে মশার উপদ্রব বেড়েছে। সন্ধ্যার পর মশার যন্ত্রণায় টেকা দায় হয়ে পড়েছে। এমনকি দিনের বেলায়ও মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠতে হচ্ছে। এমনটা অভিযোগ নগরবাসীর। তবে মশার উপদ্রব ঠেকাতে নগরীতে ব্যাপক কার্যক্রম চলামান রয়েছে বলে জানিয়েছেন খুলনা সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. আব্দুল আজিজ।
তিনি বলেন, মশার উপদ্রবরোধে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের কাজ চলমান রয়েছে। কেসিসির ৪৬টি ফগার মেশিন রয়েছে। আরও ২০টি ফগার মেশিনের ওয়ার্ক অর্ডার হয়েছে। প্রতিদিনই ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ফগার মেশিনের মাধ্যমে মশক নিধন অভিযান চলমান আছে। এছাড়া মশা নিধনে আমাদের ক্র্যাশ প্রোগ্রাম চলছে। বৃষ্টি হলে কালো তেল স্প্রে করা হচ্ছে। আর সব নালায় লার্ভাসাইট স্প্রে করা হয়েছে। এতে মশার উপদ্রব কমে যাবে।
এদিকে জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভায় খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডাঃ মেহেদী নেওয়াজ বলেছেন, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৃথক ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হচ্ছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় প্লেটেলেট প্রদান কার্যক্রম নিশ্চিতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সেল্ফ সেপারেটর মেশিন প্রয়োজন। যার মাধ্যমে সুস্থ মানুষের রক্ত হতে প্লেটেলেট আলাদা করে প্রয়োজনে ডেঙ্গু আক্রান্তদের শরীরে দেওয়া যাবে।