যশোরে জীবন রক্ষায় সবাই ছুটছেন করোনা প্রতিরোধী টিককেন্দ্রে। টিকা নিতে যশোরের মানুষের মাঝে ব্যাপকভাবে আগ্রহ বেড়েছে। এ কর্মসূচির শুরুর দিকে টিকাকেন্দ্রে ভিড় কম থাকলেও এখন টিকা গ্রহণে মানুষ উদ্যোগী হয়েছে। যশোর জেনারেল হাসপাতালের নাসিং ইনস্টিউটের টিকাদান কেন্দ্রে প্রতিদিন সকাল থেকে মানুষের ভিড় লেগে থাকছে। সামাজিক নিরাপদ দূরত্ব নিশ্চিত করতে কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। কর্মকর্তারা বলেছেন, করোনার টিকা নিতে আসা মানুষের ভিড় প্রতিদিনই বাড়ছে। সোমবার (২৬ জুলাই) টিকাদান কেন্দ্রের সামনে নারী ও পুরুষের দীর্ঘ লাইন ছিল। যা হাসপাতালের গেট পর্যন্ত ছাড়িয়ে গেছে।
এদিকে, যশোরে আরও ৪৩ হাজার ২০০ ডোজ সিনোফার্মের টিকা পৌঁছেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন।
সিভিল সার্জন জানান, সোমবার রাত তিনটার দিকে ফ্রিজার গাড়িতে টিকাগুলো সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে এসে পৌঁছায়। এরপর তা গাড়ি থেকে নামিয়ে সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) ভবনের ফ্রিজারে রাখা হয়েছে। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে টিকাগুলো সংরক্ষণ করা হচ্ছে।
তিনি জানান, জেলায় সোমবার চার হাজার ৩৯৭ জন করোনা প্রতিরোধি টিকা নিয়েছেন। এরমধ্যে দুই হাজার ৪০০ একজন পুরুষ ও এক হাজার ৯৯৬ জন নারী। এদের মধ্যে দুই হাজার ২৪২ জন সদর উপজেলায়। এছাড়া অভয়নগরে ২৯৪, বাঘারপাড়ায় ২৮৮, চৌগাছায় ২৮৪, ঝিকরগাছায় ৩৭৫, কেশবপুরে ৪৩০, মণিরামপুরে ১৬৬ ও শার্শায় ২৭২ জন রয়েছেন।
যশোর নার্সিং ইনস্টিটিউটে দেখা যায়, সেখানে টিকা নেয়ার জন্য নারী ও পুরুষের দীর্ঘ লাইন। রোদ পুড়ে ও বৃষ্টিতে ভিজে তারা টিকা নিচ্ছেন। টিকা নেয়ার পর বিশ্রামের কোনো ব্যবস্থা নেই এখানে। কেন্দ্রে টিকার বুথ কোথায়, তার কোনো নির্দেশিকা নেই। ফলে বিপাকে পড়তে হচ্ছে গ্রহণকারীদের। হাসপাতালে গিয়ে টিকার বুথ খুঁজে পাচ্ছিলেন না জয়নাল হোসেন ও রুকাইয়া বেগম দম্পতি। বেশ কিছু সময় ঘোরাঘুরির পর মানুষের কাছে খোঁজ নিয়ে তারা টিকার বুথে পৌঁছান। এ কাজে বিশেষ করে বয়স্কদের কষ্ট হচ্ছে।
টিকার লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন বলেন, তারা তিন দিন আগে নিবন্ধন করেছেন। কিন্তু কোনও এসএমএস পাননি। তারপরও এসেছেন টিকা নিতে। তারা বুথের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে বাক-বিতন্ডা হয়।
সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহিন জানান, যশোরের মানুষ টিকা নিতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। প্রতিদিনই হাসপাতালে টিকার লাইন দীর্ঘ হচ্ছে। যারা নিবন্ধন করেছেন সকলেই টিকা পাবেন। তবে টিকাদান কেন্দ্রে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। টিকা গ্রহীতাদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে যশোর নার্সিং ইনস্টিটিউটে আরও তিনটি টিকার বুথ চালু করা হয়েছে। এখন থেকে ১০টি বুখে টিকাদান কার্যক্রম চলবে। লাইনে থাকা মানুষের যাতে রোদ ও বৃষ্টিতে কষ্ট না হয়, এ জন্য টিকাদান কেন্দ্রে মঙ্গলবার থেকে ছাউনি দেয়া হবে। ইতিমধ্যে টিকাদানের পর বিশ্রামের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে।