অভয়নগরে কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে শুরু হয়েছে ৪ দিনব্যাপী গরু বেচাকেনা। এ উপজেলাসহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে গরু নিয়ে আসা বেপারীদের ও ক্রেতাদের স্বাস্থ্য বিধি মেনে বাজারে প্রবেশ করতে হচ্ছে। তাছাড়াও এলাকার বাড়ি ও খামারিদের গরু গুলো বাজারে আসতে দেখা গেছে। কোরবানি ঈদের ৩ দিন বাকি থাকলেও এখনো জমে উঠেনি অভয়নগরের কোন হাট।
স্থায়ী ও অস্থায়ী কয়েকটি হাট ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে আসা অধিকাংশ পশুই স্থানীয় খামারিদের। বিপরীতে অন্যান্য এলাকার পশুর উপস্থিতি ছিল কম। তাছাড়া অন্য বছর এই সময়ে হাটগুলোতে কিছু ক্রেতার আনাগোনা থাকলেও এবার সেটি অনেক কম।
হাটের ইজারাদার মাসুদ হোসেন, আমির গোলদার, কওসার চৌধুরী ও আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, এখন কিছু কিছু গরু এ হাটে আসা শুরু করলেও দু-একদিনের মধ্যেই বিভিন্ন প্রান্তের থেকে ট্রাকে, আলম সাদু ও ট্রলি গাড়িতে করে আরও গরু আসা শুরু হবে। আর ঈদের আগের দিন মঙ্গলবারসহ প্রত্যকদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পুরোদমে চলবে কেনাবেচা। গতকাল শনিবার থেকে শুরু হয়েছে বেচাকেনা।
তারা বলেন, ‘আমরাও প্রস্তুতি নিচ্ছি। সরকারের স্বাস্থ্য সুরক্ষার নির্দেশনার বিষয়টি তো থাকবেই। তাছাড়া নিরাপত্তা নিশ্চিতে ও যানজট এড়াতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আগামী দু-তিনদিনের মধ্যেই হাট পুরোপুরি ক্রেতার জন্য প্রস্তুত হবে। দূর থেকে আসা ক্রেতা বিক্রেতাদের স্বাস্থ্য বিধি মানতে আমরা বদ্ধ পরিকর। ক্রেতাগণ পছন্দমত কোরবানির পশু কিনে নিয়ে যাবেন। আর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যাপারীরা তাদের গরুগুলি সঠিক দামে বিক্রয়ের চেষ্টা করবেন। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেছি। এ বাজারে কোন প্রকার ব্যবসায়ীদের রাতে থাকার সুযোগ নেই।
চেঙ্গুটিয়া গ্রামের রাজু আহমেদ, তালতলা থেকে জিল্লুর রহমান এসেছেন গরু কিনতে। অনেক দাম চাওয়ায় তারা ফিরে গেছেন এবং তারা বলেন, ‘সামনে আবার এ হাটে আসবো গরু কিনতে।’
কাদিরপাড়া গ্রামের গরু খামার ব্যবসায়ী মনিতোষ বলেন, ‘প্রতি বছর আমরা গরু নিয়ে আরও আগেই চলে আসি এখানে। তবে এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে একটু দেরিতে এসেছি। আমাদের সাথে আছে ২২টি দেশী গরু। প্রতিটি গরু আকার অনুপাতে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা করে বিক্রয়ের পরিকল্পনা আছে।
এ হাটে গরু আনতে দেখা গেছে, ফুলতলার টুলনার আতিয়ারের ৯ টি গরু, ধোপাখোলার মিজানুরের ৫টি গরু, ছাতিয়ানির হায়েদারের ৪টি গরু, পায়রা গ্রামের হাকিমের ১০টি গরু, বিছালীর আনিছের ৪টি।
তারা বলেন, এ হাটে প্রায় ২ হাজার ৫শ’ থেকে ৩ হাজার গরু আসবে বলে ধারণা তাদের। সকাল থেকে ক্রেতাদের তেমন কোন উপস্থিতি চোখে না পড়লেও বিকেলে কিছু ক্রেতার আনগোনা ছিলো।
নওয়াপাড়া হাটে গরু কিনতে আসা সৈয়দ রেজাউল বলেন, এ বাজারে এসেছি পশুর দাম কেমন তা দেখতে। কিনবো আরও দুই দিন পরে। বাজার ঘুরে মনে হচ্ছে দাম অনেক বেশি। এখনো হাট জমে উঠেনি। মূলত শেষের দিকে চলবে বেচাকেনা। করোনা থাকলেও এবার আমরা আশা করছি বিক্রি ভালোই হবে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. বিপ্লব কর্মকার বলেন, পশু হাটে আমাদের মেডিকেল টিম কাজ করছে। তারা গরুর সংক্রমণ বালাই চেকআপ করে গরু প্রবেশ করাবে। মানুষ খামার থেকেও গরু কিনছে। গরু কিনে ওই খামারেই রেখে দিচ্ছে। কোরবানির আগের দিন নিয়ে আসবে। হাটে ক্রেতা-বিক্রেতা যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখে সেজন্য ইজারাদার মাইকিং করবে। ক্রেতাদের প্রতি পরামর্শ হলো তারা যেন সুস্থ সবল পশু হাটে নিয়ে আসে।
এ ব্যাপারে অভয়নগর থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) এ কেএম শামীম হাসান বলেন, আইনশৃংখলা মিটিংয়ে ইজারাদারদের স্বাস্থ্য বিধি সম্পর্কে নির্দেশনা দেওয়া আছে। সে মোতাবেক হাট পরিচালনা করবেন।
এ বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আমিনুর রহমান জানান, কঠোর স্বাস্থ্যবিধি নিষেধ মানতে হবে। ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়কে সরকারি বিধি মোতাবেক স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম