কলারোয়ায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য নির্মাণাধীন ঝুঁকিপূর্ণ সাত পরিবারের ঘর সরিয়ে নিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন। উপজেলার ৪নং লাঙ্গলঝাড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে পূর্বে ইউএনওর উদ্যোগে ১৩টি পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ওই স্থানটি বাগান, উচ্চস্থান ও বেলেমাটি হওয়ায় উপযুক্ত স্থানে ঘর নির্মাণ করা হয়নি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ ওঠে।
সেই সময়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসাবে যোগদান করেন জুবায়ের হোসেন চৌধুরী। তিনি ঘটনা স্থান পরিদর্শন করে দেখেন যে, ওই স্থানটি উচ্চ এবং চারপাশে পুকুর ও ঘের রয়েছে। সেই কারণে অল্প বৃষ্টিতে উচ্চ স্থানের মাটি ঝরে পড়ছে। তিনি ঘরগুলি নিরাপদে রাখতে দুই পাশের পুকুরের মধ্যে ব্যারেলের টিন ও সিমেন্ট মাটির খুঁটি দিয়ে পাইলিং করার আদেশ দেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে।
সেই অনুযায়ী ঠিকাদার প্রতিনিধিরা ওই স্থানে বাশের বেড়া, ব্যারেলের টিন ও সিমেন্ট মাটির খুঁটি দিয়ে পাইলিং করেন। তার পরেও মাটি ঝরে পুকুরের মধ্যে পড়ছে। নির্মাণাধীন ঘরগুলি ঝুকির মধ্যে রয়েছে। তিনি বিষয়টি দেখে সরকারের উচ্চ পদাস্থ কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ আলোচনা করে ঝুকিপূর্ন ঘরগুলি সরিয়ে নেন। অবশ্য ওই নির্মাণাধীন ঘরগুলি গৃহহীনদের বুঝিয়ে দেয়া হয়নি।
রবিবার (১১ জুলাই) বিকালে ঘটনা স্থান সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা গেছে-নির্মাণাধীন ঘরগুলি ঝুকির মধ্যে রয়েছে, সাতপরিবারের ঘর সরিয়ে নেয়া হলেও আরো এক টি পরিবারের ঘর ঝুকির মধ্যে রয়েছে। যে কোন সময় ওই ঘরটিও ভেঙ্গে পুকুরের মধ্যে পড়তে পারে বলে এলাকাবাসী ধারণা করছেন।
ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য বলেন, ঘর নির্মাণের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। শুনেছেন গত ৪জুলাই রবিবার সকালে ওই ঘরগুলি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ভেঙ্গে নিয়েছেন।
৪নং লাঙ্গলঝাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাস্টার নূরুল ইসলাম বলেন, আমার ইউনিয়নে ৭৭জনের নামের তালিকা দেয়া আছে। সেই তালিকা অনুযায়ী তিনি মাত্র ১৩জনের ঘর বরাদ্ধ পেয়েছেন। যে খানে গৃহহীনদের ঘর করা হয়েছে ওই স্থানটির দুই পাশে ৩০ফুট বালি কেটে নিয়ে বড় বড় পুকুর বানিয়ে মাছ চাষ করছেন স্থানীয়রা। যে কারণে অল্প বৃষ্টির পানিতে নির্মাণাধীন ঘরে পিছনের মাটি ঝড়ে পড়ছে। যে কোন সময় ঘরগুলি ধ্বসে পড়তে পারে তার আশংখা করেছেন এলাকাবাসী। যে কারনে উপজেলা প্রশাসন ওই ঘরগুলি সরিয়ে নিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, এখানকার সকল মালামাল সোনাবাড়ীয়া ইউনিয়নের ভাদিয়ালীতে নেয়া হয়েছে সেখানে গৃহহীদের বাকী ঘর গুলি নির্মাণ করা হবে। মাছ চাষী আরশাদ আলী বলেন- ওই গৃহহীনদের ঘরের পিছনের দিকে আব্দুর রহমান নামে এক ব্যক্তির ১২কাটা জমিতে বড় একটি পুকুর রয়েছে। আর সেই পুকুরে মাটি ঝরে পড়ছে। তিনি আরো বলেন,তার জমির উপর দিয়ে গৃহহীনদের রাস্তা করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুবায়ের হোসেন চৌধুরী বলেন, পূর্বের ইউএনও থাকতে ঘরগুলি নির্মাণ করা হয়েছিলো। তিনি এই উপজেলায় যোগদান করে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য নির্মাণাধীন ঘর গুলি সরেজমিনে ঘুরে দেখেন। একই সাথে কোন সমস্য থাকলে সেটি সর্বোচ্চ সতর্কতা, সততা ও নিষ্ঠার সাথে ঘরগুলো নির্মাণ করার নির্দেশ দেন ঠিকাদার প্রতিনিধিদের। ঘরগুলো নিয়মিত পরিদর্শন ও উপকারভোগীদের খোঁজখবর নেন। তিনি আরো বলেন-আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার, ইতিমধ্যে যাদের তিনি ঘরের দলিল ও চাবি দিয়ে নির্মাণাধীন ঘর বুঝিয়ে দিয়েছেন তারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে অত্যন্ত খুশি হয়েছেন।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি