সাতক্ষীরায় বাল্যবিয়ে ও ঝরেপড়া প্রতিরোধ এবং পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতার বিকাশে চালু হয়েছে বিআরবির দরিদ্র মহিলাদের জন্য সমন্বিত পল্লী কর্মসংস্থান সহায়তা প্রকল্প (ইরেসপো)। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার দু’টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ প্রকল্পটির যাত্রা শুরু হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে কিশোরীদের ঝরেপড়া রোধের পাশাপাশি বন্ধ হবে বাল্যবিয়ে, নিশ্চিত হবে কিশোরী স্বাস্থ সেবা, গড়ে উঠবে সঞ্চয়ী মনোভাব। ফলে পিছিয়েপড়া শিক্ষার্থীরা সৃজনশীলতায় দক্ষ হবে এবং আর্থ সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি-ইরেসপো) এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
সমন্বিত পল্লী কর্মসংস্থান সহায়তা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শেখ জাহাঙ্গীর আলম ও মৃদুল সরকার জানান, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আলীপুর ও বল্লী এই দু’টি ইউনিয়নের দু’টি গার্লস স্কুলে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দু’টি স্কুল থেকে ১০০ জন করে মোট ২০০ কিশোরী প্রকল্পভুক্ত হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় প্রত্যেক শিক্ষার্থী প্রতি মাসে ২০০টাকা জমা দিলে বছর শেষে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর হিসাবে ৭২০০ টাকা জমা হবে। বাকী টাকা সরকার দিবে। এভাবে ৫ বছর পর একজন শিক্ষার্থী পাবে ৩৬ হাজার টাকা। এতে করে একজন শিক্ষার্থী বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পাবে এবং শিক্ষা জীবন শেষে একটি মোটা অঙ্কের টাকা পাবে। যাতে করে সে পরবর্তীতে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সক্ষমতা অর্জন করতে পারে। তবে শর্ত হলো-১৮ বছরের মধ্যে কোন কিশোরী শিক্ষার্থীকে বিয়ে দেওয়া যাবে না। এজন্য কিশোরী শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আলিপুর ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বল্লী আদর্শ গার্লস হাইস্কুলে পৃথকভাবে শনিবার (২১ মে) এই প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়। এউপলক্ষে সকাল ১০টায় আলিপুর ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় ইউপি চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুর রউফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা-তুজ-জোহরা। সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার শেখ জাহাঙ্গীর আলম, সহকারি পল্লী উন্নয়ন অফিসার (ইরেসপো) মৃদুল সরকার, স্কুলের প্রধান শিক্ষক হারান চন্দ্র সরকার, সহকারি শিক্ষক অর্চনা রানী প্রমুখ।
পরে সদর উপজেলার বল্লী আদর্শ গার্লস হাইস্কুলে সভাপতি মোঃ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে পৃথক অপর এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা-তুজ-জোহরা। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার শেখ জাহাঙ্গীর আলম, প্রধান শিক্ষক মুনসুর রহমানসহ অন্যরা। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সহকারি পল্লী উন্নয়ন অফিসার (ইরেসপো) মৃদুল সরকার। অনুষ্ঠানে উভয় স্কুলে কিশোরীদের মাঝে স্বাস্থ্য উপকরণ বিতরণ করেন অতিথিগণ।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা-তুজ-জোহরা বলেন, বাল্যবিয়ে ও ঝরে পড়া প্রতিরোধে এ প্রকল্পটি জ্বালতে পারে আশার আলো। নারী শিক্ষার অগ্রযাত্রায় এ প্রকল্প কিশোরীদের মধ্যে নতুনভাবে স্বপ্ন দেখাবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া হত-দরিদ্র কিশোরী শিক্ষার্থীরা মানব সম্পদে পরিণত হয়ে দেশের সেবায় আত্মনিয়োগ করবে। তিনি সমন্বিত পল্লী কর্মসংস্থান সহায়তা প্রকল্পের সফলতা কামনা করেন।