খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ১৯ মে, ২০২৪

Breaking News

  ৭ ব্যক্তিকে জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী
  নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলা, নিহত ১৭

৭১ বছরে মোংলা বন্দর

মোংলা প্রতিনিধি

আজ মোংলা বন্দরের ৭১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা এ বন্দর ৭০ বছর আগে এই দিনে দেশের দ্বিতীয় সামুদ্রিক বন্দর হিসেবে যাত্রা শুরু করে। বিশ্ব ঐতিহ্যের ধারক সুন্দরবনের পাদদেশে অবস্থিত এ বন্দর ১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠা লাভ করে। একই বছরে ১১ ডিসেম্বর পশুর নদীর জয়মনির ঘোলে “দি সিটি অব লিয়নস” নামক প্রথম ব্রিটিশ বানিজ্যিক জাহাজ নোঙ্গরের মাধ্যমে মোংলা বন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৮৭ সালের পোর্ট অব চালনা অথরিটি এ্যাক্ট অনুসারে প্রথমে চালনা বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং পরবর্তীতে মোংলা পোর্ট অথরিটি নামে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

১ ডিসেম্বর বুধবার মোংলা সমুদ্র বন্দরের ৭১ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত হবে। নানা উৎসব ও উদ্দিপনা ও বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যদিয়ে এ দিনটি পালনে সকল প্রস্তুতি সম্পুর্ন করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। করোনা ভাইরাসের মহামারী কারনে গত বছর ছোট্ট পরিসরে শুধু মাত্র বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারী আর সংবাদকর্মীদের নিয়ে বন্দর প্রতিষ্ঠা দিবসের আয়োজন করা হয়েছিল।

বন্দর সুত্রে জানা যায়, ১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করে সুন্দরবনের পাশে প্রকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা পশুর নদীর পাড়ে স্থাপিত করা হয় এ সমুদ্র বন্দরটি। প্রথমে চালনা বন্দর নামে মোংলায় যাত্রা শুরু করে দেশের সম্ভাবনাময় এ সমুদ্র বন্দর। ওই বছরের ১১ ডিসেম্বর বন্দরটি বিদেশি জাহাজ নোঙরের জন্য উন্মুক্ত করা হলে ব্রিটিশ বণিক জাহাজ ‘দি সিটি অব লিয়ন্স’ মোংলা বন্দরে প্রথম নোঙ্গর করে। সমুদ্রগামী জাহাজ নোঙরের ক্ষেত্রে মোংলা অধিকতর সুবিধাজনক হওয়ায় ১৯৫৪ সালে বন্দরটি চালনা থেকে মোংলায় স্থানান্তর করা হয়। তখন মোংলা বন্দর দীর্ঘদিন ধরে চালনা নামেই পরিচিত ছিল। বন্দর প্রতিষ্ঠার পর এটি প্রথমে চালনা অ্যাঙ্কর পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালে ‘চালনা পোর্ট কর্তৃপক্ষ এবং সর্বশেষ ১৯৮৬ সাল থেকে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ হিসাবে যাত্রা শুরু করে।

দীর্ঘতম সময়ের সকল চরাই-উতরাই পার করে মোংলা বন্দর ৭১ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করতে যাচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ উপলক্ষে সকাল ১০ টায় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদ্যেগে শোভা যাত্রা বের হবে বন্দর এলাকায়। এ সময় শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে প্রতিষ্ঠা বাষির্কীর শুভ উদ্বোধন করবেন বন্দর কর্তপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এ্যাডমিরাল মোহাম্মাদ মুসাসহ বন্দরের উর্ধতন কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বন্দর সৃষ্টির পরে গত নভেম্বরে মাসে বিভিন্ন পন্য বোঝাই করে দেশী-বিদেশী জাহাজ আগামনের রেকর্ড সৃস্টি করাসহ নানা বিষয় আলোচনা করবেন মোংলা বন্দর চেয়ারম্যান। এছাড়া উন্নয়ন অগ্রযাত্রা ও সম্ভাবনার বিভিন্ন দিক নিয়ে নানা বিষয় সকলেন সামনে বক্তব্য রাখবেন বন্দর চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ মুসা।

সকাল সাড়ে ১১ টায় পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত, গীতা ও বাইবেল পাঠ, বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসার শুভেচ্ছো বক্তব্য, অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি কর্তৃক কেক কাটা, সকাল ১২ টায় সর্বোচ্চ বন্দর ব্যবহারকারীদের ক্রেস্ট প্রদান, কৃতিত্বপূর্ণ কাজের জন্য নির্বাচিত কর্মকর্তা কর্মচারীদের ক্রেস্ট প্রদান, বিদায়ী কর্মকর্তা কর্মচারীদের ক্রেস্ট প্রদানসহ নানা কার্যক্রম করবেন প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি ও বন্দর চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিশেষ অতিথি হিসেবে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহারসহ নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও পদস্থ কর্মকর্তা, সামরিক বেসামরিক কর্মকর্তা, বন্দরের পদস্থ কর্মকর্তা, বন্দর ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ, মোংলা প্রেস ক্লাব সদস্যরা, সিবিএ নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। এছাড়াও, দুপুর সোয়া ১টা ১৫ মোংলা বন্দরের অগ্রগতি কামনায় দোয়া অনুষ্ঠান এবং দুপুর দেড়টায় মধ্যাহ্ন ভোজের মধ্যদিয়ে শেষ হবে বন্দরের ৭১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর আনুষ্ঠানিকতা।

মোংলা কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মাদ মুসা বলেন, বন্দরকে আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল বন্দরে রুপান্তিত করার লক্ষে এবং অচল বন্দরকে সচল ও উন্নয়নে গুরুত্ব পূর্ন অবদান রাখায় বন্দরে ব্যাবসার সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে আরো উদ্দ্যোগেী এবং সহনশীল হয়ে মোংলা বন্দরের সুনাম রক্ষায় সকলের সহযোগীতার আহবান জানান বন্দর কর্তৃপক্ষ। ১৯৫০ সালের এ দিনে চালনা এ্যাংকারেজ পোর্ট নামে মোংলা সমুদ্র বন্দরের যাত্রা শুরু হয়। দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় নানা সমস্যা মোকাবেলা করে পণ্য আমাদানী রফতানি ও সর্বোচ্চ রাজস্ব আয়ের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে আসছে মোংলা সমুদ্র বন্দর, যা আগামী দিনেও এ উন্নয় ও অগ্রগতী অব্যাহত থাকবে বলে জানান বন্দর চেয়ারম্যান।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!