খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ পৌষ, ১৪৩১ | ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট
  চাঁদপুরে জাহাজে ৭ জনকে হত্যা: আসামি ইরফান ৭ দিনের রিমান্ডে
ময়লাপোতা হতে জিরো পয়েন্ট ৪ লেন

৩৪ মাসেও শেষ হয়নি ৪ কিলোমিটার রাস্তা!

একরামুল হোসেন লিপু

ধীরগতিতে চলছে নগরীর ময়লাপোতা হতে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার সড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণের কাজ। ৩৪ মাসে কাজের অগ্রগতি ৮৫ শতাংশ। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি দিয়ে যানবাহন চলাচলে যেন ভোগান্তি শেষ হচ্ছে না।

সড়কের নিরালা অংশে কার্পেটিংয়ের কাজ বাকী রয়েছে। এ অংশে সড়ক ডিভাইডার এখনও নির্মাণ হয়নি। ময়লাপোতার মোড় হতে সড়কটির প্রবেশদ্বারে শৃঙ্খলা ফিরে আসেনি। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সড়কটির স্পিড ব্রেকারে রয়েছে কিছুটা জটিলতা । প্রকল্পের মেয়াদ ১৪ মাস বৃদ্ধি করা হয়েছে। সেইসাথে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাবনাও দেওয়া হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য সড়কের দুই পাশের ৮ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ কাজের অগ্রগতি মাত্র ৫০ শতাংশ। চলতি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সম্পূর্ণ কাজ শেষ করতে হবে।

প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী সংস্থা খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সূত্রে জানা যায়, খুলনা-চুকনগর- সাতক্ষীরা মহাসড়কের খুলনা শহরাংশের (৪.০০ কি.মি.) চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায় ২০১৯ সালের ২৭ আগস্ট। তখন প্রকল্পটির ব্যয় ছিলো ১০০ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এর মধ্যে সড়ক, কালভার্ট ও ড্রেন নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়ে ৮০ কোটি ৭৯ লক্ষ টাকা। এসব কাজ সম্পন্ন করতে ২০২০ সালের ৮ এপ্রিল আতাউর রহমান খান লিঃ এবং মাহাবুব ব্রাদার্স (প্রাঃ) লিঃ (জেভি) নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে  কার্যাদেশ প্রদান করা হয়।  চুক্তির মেয়াদ ছিলো ২ বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের ৭ এপ্রিল পর্যন্ত।

প্রকল্পের মূল কাজ ছিলো; বিদ্যমান ৪ কি.মি. সড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণ, সার্ফেসিং (ডিবিএস বেইজ কোর্স ১৫০ মিমি ও ওয়ারিং কোর্স ৫০ মিমি পুরু) ৪ কি.মি., আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ ৫টি, সড়ক ডিভাইডার নির্মাণ ৩ দশমিক ৭৬ কি.মি., কংক্রিট ইউ-ড্রেন নির্মাণ ৮ কি.মি.। এছাড়া রক্ষাপ্রদ (প্রোটেকটিভ) কাজ ১২০০ মিটার।

জানা যায়, প্রকল্পটির কাজে শুরু থেকে ধীরগতির কারণে গুরুত্বপূর্ণ এ মহাসড়কটি দিয়ে যানবাহন চলাচলে দুর্ভোগ তৈরী হয়, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে। তবে কম মাত্রায়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হওয়ার আশঙ্কায় সময় বৃদ্ধি করা হয় ১৪ মাস। বর্ধিত সময়ের মেয়াদ ২০২৩ সালের ৩০ জুন। সময় বৃদ্ধির সাথে প্রকল্পের ব্যয়ও ৯ কোটি টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। যা অনুমোদনের অপেক্ষায়।

এই সড়ক দিয়ে নিয়মিত চলাচলকারী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাসেল জানান, ফিনিশিং কাজ দীর্ঘদিন ধরে ফেলে রাখায় দুর্ভোগ রয়েই গেছে। বিশেষ করে গল্লামারী মোড়ে মাঝের কার্পেটিং সম্পন্ন না করায় প্রায়ই জ্যাম লেগে থাকে। এছাড়া গল্লামারি থেকে জিরোপয়েন্টমুখি লেনে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে স্পিড ব্রেকার দিয়েছে একেবারে টার্ণিং পয়েন্টে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ মুখেই গাড়িগুলোকে স্পিড ব্রেকারের ওপর দিয়ে টার্ণ নিতে হয়। অথচ ১০/১৫ ফুট আগে স্পিড ব্রেকারটা দেয়া যেত এবং সেটাই যথার্থ হতো।

খুলনা সওজ’র নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আনিসুজ্জামান মাসুদ খুলনা গেজেটকে বলেন, সড়কটিতে মাটির কন্ডিশন খারাপ হওয়ায় ১ ফুট বালি ফিলিং এর পরিবর্তে ২ ফুট বাড়িয়ে বালির সোয়াম ফিলিং ৩ ফুট বৃদ্ধি করা হয়। এতে করে সড়কের ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি পাবে। সড়কের দু’ পার্শ্বে সওজ কর্তৃক ড্রেনের ডিজাইন পরিবর্তন করে পরবর্তীতে সিটি কর্পোরেশনের ডিজাইন মোতাবেক ড্রেন নির্মিত হচ্ছে। এ কারণে ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বর্ধিত সময়ের মধ্যেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজের গুণগত মান বজায় রেখে প্রকল্পের কাজ শেষ করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মাহাবুব ব্রাদার্স (প্রাঃ) লিঃ এর প্রজেক্ট ম্যানেজার ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ আলী খুলনা গেজেটকে বলেন, কাজের শুরুতে কিছু জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় এবং নির্মাণ সামগ্রীর দাম দফায় দফায় বৃদ্ধি পাবার কারণে কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে সড়কের ৮৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ডিভাইডারের মধ্যে মাটি ভরাটের কাজ চলমান রয়েছে। বাকী রয়েছে শুধু সড়কের ফিনিশিং কাজ। মার্চের মধ্যে সড়কের ফিনিশিংসহ বাকী কাজ শেষ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। ডিজাইন পরিবর্তনের কারণে ড্রেন নির্মাণের কাজ বিলম্বে শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে ড্রেন নির্মাণের ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকী কাজ বর্ধিত সময়ের পূর্বেই শেষ হয়ে যাবে।

সার্বিক বিষয় নিয়ে বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান  বলেন, দীর্ঘদিনেও সড়কটির কাজ পুরোপুরি শেষ না হওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। বর্ষার আগেই সড়ক ও ড্রেনের কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানাই।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!