খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ১৯ মে, ২০২৪

Breaking News

  বাজারে থাকা এসএমসি প্লাসের সব ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকস প্রত্যাহারের নির্দেশ, বাজারজাতকারীকে ১৬ লাক টাকা জরিমানা
  ৭ ব্যক্তিকে জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী

২৯ আবাসিক হোটেল এখন কোয়ারেন্টাইন সেন্টার

জাহিদ আহমেদ লিটন, যশোর

যশোর ও বেনাপোলের ২৯টি আবাসিক হোটেল এখন কোয়ারেন্টাইন সেন্টার। এ হোটেলসহ বক্ষব্যাধি হাসপাতাল ও অন্যান্য স্থানে শুক্রবার পর্যন্ত মোট ৯৩৬ জন ভারত থেকে আসা মানুষ কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। এছাড়া যশোরের আশপাশের চার জেলার হোটেলগুলোও কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করা হয়েছে। জেলাগুলো হলো, সাতক্ষীরা, খুলনা, ঝিনাইদহ ও নড়াইল।

ভারতে করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া যাত্রীরা বিশেষ অনুমতি নিয়ে দেশে ফিরছেন। এ তালিকা প্রতিদিনই দীর্ঘ হচ্ছে। সেইসাথে অনেকের দেহে মিলছে করোনার ভারতীয় ভেরিয়েন্ট। ২৬ থেকে ৩০ এপ্রিল শুক্রবার রাত পর্যন্ত বোনাপোল বন্দর দিয়ে দেশে ফিরেছেন ৯৩৬ জন। এরমধ্যে শুক্রবারই ফিরেছেন ২৪০ জন। ভারত ফেরত প্রত্যেককে ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক সেলফ কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে। যা নিয়ে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগসহ জেলা প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। বিপুল সংখ্যক এসব মানুষকে কোয়ারেন্টাইনে রাখতে গিয়ে জেলা প্রশাসন যশোরের প্রায় সব আবাসিক হোটেল রিক্যুইজিশন করেছে। এরমধ্যে তারকা হোটেলগুলোও বাদ পড়েনি। শুক্রবার দুপুরে কালেক্টরেট সভাকক্ষে জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে হোটেল মালিকদের নিয়ে এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। অবশ্য এ সভার আগেই বৃহস্পতিবার রাতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আবাসিক হোটেল রিক্যুইজিশনের কথা জানিয়ে দেয়া হয়েছিল।

যশোরে রিক্যুইজিশন করা ১৬টি আবাসিক হোটেল হলো, জাবির হোটেল ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল হাসান ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল সিটি প্লাজা, শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের ডরমেটরি, হোটেল ম্যাগপাই, হোটেল আর এস, হোটেল মণিহার, হোটেল ম্যাক্স, হোটেল সোনালী, সিটি হোটেল, হোটেল শাহরিয়ার, হোটেল বলাকা, হোটেল নয়ন, হোটেল নিউওয়ে, হোটেল প্রিন্স, হোটেল সিটি এবং যশোর হোটেল। এসব হোটেলে বৃহস্পতিবার রাত থেকে মানুষ ওঠানো শুরু হয়েছে। হোটেলগুলোর মধ্যে হোটেল নয়নে ৩৭ জনকে, হাসান ইন্টারন্যাশনালে ৪৪, হোটেল ম্যাগপাইয়ে ১৭, আরএস হোটেলে সাত, হোটেল ম্যাক্সে ১১ ও শেখ হাসিনা আইটি পার্কের ডরমেটরিতে ছয়জনকে রাখা হয়েছে।

এছাড়া ঝিকরগাছা উপজেলার গাজীর দরগাহ এতিমখানা ও মাদরাসায় ২০২ জন, যশোর বক্ষব্যাধী হাসপাতালে ২৯ জন, উপশহর ক্লিনিকে ৭ জন, যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৪ জন, বেনাপোলের রজনীগন্ধা, পোর্টভিউ, আ্যারিস্টোকেট, জুয়েল আবাসিক, চৌধুরী হোটেল, নিশাদ হোটেল, ফ্রেশ হোটেল, নাহিদ হোটেল, হোটেল সানসিটি, মৌ হোটেল, হোটেল সিটি, বেনাপোল পর্যটন ও রহমানিয়া হোটেলে রয়েছেন ৩৫৩ জন। ইতিমধ্যে বেনাপোলের হোটেলগুলো পূর্ণ হয়ে গেছে। একইসাথে যশোরের পাশের জেলার মানুষের আবেদনের প্রেক্ষিতে খুলনা, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ ও নড়াইলের হোটেলগুলোতেও তাদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এ হিসেবে খুলনায় ব্যবস্থা করা হয়েছে ৭শ’ জনের, ঝিনাইদহে ২৫০ জন, নড়াইলে ১৫০ জন ও সাতক্ষীরায় ৪শ’ জন। এদেরমধ্যে যারা আর্থিক সঙ্কটে আছেন তাদেরকে ঝিকরগাছার গাজির দরগাহ মাদ্রাছায় রাখা হচ্ছে। তাদেরকে জেলা প্রশাসনের তত্বাবধানে খাকা ও খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া যাদের আর্থিক সঙ্গতি রয়েছে তারা ইচ্ছা করলেই পাঁচ তারকা হোটেলে থাকতে পারবেন। একইসাথে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বেনাপোল বন্দর দিয়ে আসা এসব মানুষের মধ্যে শুক্রবার এসেছেন ২৪০ জন। এদেরমধ্যে ১৫ জন রোগী রয়েছেন।

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সেখ সালাউদ্দিন শিকদার জানান, যেসব স্থানে ভারতফেরত যাত্রীদের রাখা হয়েছে, সেখানে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ ও আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। ১৪ দিন অবস্থানের পর করোনা নেগেটিভ সনদপ্রাপ্তি সাপেক্ষে এসব যাত্রীকে নিজ বাড়িতে যেতে দেয়া হবে।

যশোরের সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন জানান, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ভারত ফেরতদের চিকিৎসার বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যাদের আর্থিক সঙ্গতি নেই, তাদেরকে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকেই চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, ভারত থেকে যত লোক ফেরত আসার কথা আমরা চিন্তা করছিলাম, তার থেকে অনেক বেশি আসছে। বেনাপোলের হোটেলগুলো পূর্ণ হয়ে গেছে। যে কারণে এখন যশোর শহরের হোটেল মালিকদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে রিক্যুইজিশন করা হয়েছে। তিনি জানান, হোটেলের মালিকরা ভারতফেরত বাংলাদেশি নাগরিকদের স্বল্প খরচে থাকার ব্যবস্থা করতে সম্মত হয়েছেন। এসব হোটেলে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হবে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!