খুলনা, বাংলাদেশ | ১৩ কার্তিক, ১৪৩১ | ২৯ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১১৯৭
  খুলনার খালিশপুরের আলোচিত জাহিদ হত্যা মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদন্ড, খালাস ৭

১০০ বছরেও আপনারা ক্ষমতায় আসতে পারবেন না : রুমিন ফারহানা

নিজস্ব প্রতিবেদক 

বিএনপি’র সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, এই সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন হবে না। সরকার যদি মনে করে ২০১৪ সালের মতো ১৫৩টি আসন লুটপাট করে নিয়েছিল- ২০১৮ সালে যেভাবে ৩০০ আসনে কারচুপি করেছিল- সেই রকম আরেকটি নির্বাচন ২০২৩ সালে হবে, তাহলে ১৭ কোটি মানুষ আ’লীগকে জবাব দেবে ইনশাআল্লাহ। গত ৭২ থেকে ৭৫; যে অত্যাচার-নির্যাতন আপনারা করেছেন, এরপর কিন্তু ২১ বছর ক্ষমতায় আসতে পারেন নাই। এবার যে নির্যাতন চালালেন দেশের মানুষ আপনাদের জবাব দেবে। ক্ষমতা ছাড়লে আর একশ’ বছরেও আপনারা ক্ষমতায় আসতে পারবেন না ইনশআল্লাহ। এবার ক্ষমতা থেকে গেলে আ’লীগও আর খুঁজে পাবেন না। বিএনপি প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না। তবে দেশের মানুষের উপর আপনারা যে অত্যাচার করেছেন, দেশের মানুষ সুযোগ পেলেই উচিত জবাব দেবে। ব্যাংক লুটপাট করে বিদেশে শান্তিতে বসবাস করবেন তা হবে না। যে অন্যায় অত্যাচার ১৫ বছর ধরে করেছেন, তার প্রত্যেকটা অন্যায়ের বিচার বাংলাদেশের মাটিতেই হবে ইনশাআল্লাহ।

মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে অনুষ্ঠিত জেলা বিএনপি’র বিশেষ দোয়া ও ইফতার মাহফিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত আলোচনায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জেলা বিএনপি’র আহবায়ক আমীর এজাজ খানের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব এসএম মনিরুল হাসান বাপ্পীর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।

আলোচনায় ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, আমরা একটা দুঃসময় অতিক্রম করছি। এমন একটা সময় অতিক্রম করছি, তখন দেশের মানুষ ভোট দিতে পারে না। দেশের মানুষ কথা বলতে ভয় পায়। দেশের মানুষের নিম্নতম কোনো নিরাপত্তা নেই। বিচারবর্হিভূত হত্যা, খুন, গুম, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতন-এগুলো প্রতিদিনের বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির কারণে মানুষের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। এরমধ্যে একটি সুসংবাদ দিয়ে বক্তব্য শুরু করতে চাই, সেটা হল; এই অবৈধ সরকারের পতনের আর বেশি বাকি নেই। সরকার পতনের আওয়াজ কি শুনতে পান?

আরও পড়ুন : খুলনায় দুদু : সরকারের পাশে এখন কেউ নাই

ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা আরও বলেন, সরকার প্রধান বলছেন- আমেরিকা নাকি সরকার উল্টাইতে পারে, পাল্টাইতে পারে। এটাই সত্য, সেই সাথে এটাও সত্য যেদিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করতে যায়, সেইদিন পার্লামেন্টে দাড়িয়ে সরকার প্রধান বলে- যে আমেরিকা তো মানবাধিকার লঙ্ঘন করে। আমেরিকাতে তো গণতন্ত্র নাই। ফলে আমেরিকার কোনো অধিকার নেই বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলার। তাদের অধিকার আছে কি, নাই-সেটা তো দুই বছর আগেই দেখেছি-যখন স্যাংশন দিয়েছে আপনাদের। যখন র‌্যাবের কর্মকর্তাদের উপর স্যাংশন আসছে, তখন বহু লবিং-তদ্বীর করছেন। কোনো লাভ হয়নি। সাবধান করে দিয়ে বলি-বিএনপির উপর যদি এভাবেই দমন-নিপীড়ন চলতে থাকে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের পাখির মতো গুলি করে আপনার বাহিনীর লোকজন হত্যা করে। আপনারা যদি গুম করা অব্যাহত রাখেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতন অব্যাহত রাখেন; তাহলে সেদিন খুব বেশি দুরে নয়, আরও স্যাংশন আসতে যাচ্ছে। এইবার স্যাংশন আসবে যদি নির্বাচনে কারচুরি চেষ্টা করেন তারই উপরে।

সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা আরও বলেন, খুব পরিষ্কারভাবে বলি-এই সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচন নয়। বিএনপি তো নির্বাচনে যাবার প্রশ্নই উঠে না। আমরা নির্বাচন হইতেও দিবো না ইনশাআল্লাহ। যে নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারে না, যে নির্বাচনে দেশের মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয় না, যেই নির্বাচনে মানুষ তার পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারে না, যে নির্বাচনে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের উপর সীমাহীন নির্যাতন করা হয়, সেই রকম কোনো নির্বাচন আর এই দেশের মাটিতে হবে না, হবে না। ইভিএম না করবেন বলছিলেন? কি? ইভিএম থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছেন। এভিএমের আর ভোট হবে না; ঠিক একইভাবে পরিষ্কার করে বলি-আপনাদের অধীনেও আর কোনো নির্বাচন হবে না। নির্বাচনের সময় নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্তাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দেবেন। প্রশাসনকে নিরপেক্ষ করতে হবে। নির্বাচনে অংশগ্রহনকারী সকল প্রার্থীর সমান সুযোগ-সুবিধা নিতে হবে।

প্রধান অতিথি বিএনপি’র ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, এই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে। এ সরকারের মুখোমুখি দাড়াতে হবে। ৫২ হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে- সে কথা বলা যাবে না! যে যেখানে টাকা রেখেছে, সে যদি সাগরেও টাকা রেখে থাকেন-বিএনপি ক্ষমতায় এলে সেই টাকাও তুলে আনবো দেশের মানুষের সামনে। আপনারা আমাদের খুন করবেন, গুম করবেন, আমরা সেটা মেনে নিবো-এটা হতে পারে না।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত ও তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন বিএনপি’র সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবীদ শামীমুর রহমান শামীম, সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দ্র দাস অপু, মহানগর বিএনপি’র আহবায়ক এ্যাড. শফিকুল আলম মনা ও সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন প্রমুখ। বিশেষ দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন ওলামা দল হাফেজ মোঃ জাহিদুর রহমান।

খুলনা গেজেট/এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!