খুলনা, বাংলাদেশ | ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৫ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা : আপিল বিভাগে ফের শুনানি ২৬ মে
  তিন দফা দাবিতে আজও রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে জবি শিক্ষার্থীদের অবস্থান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা
  এনবিআর বিলুপ্ত করে দু’টি বিভাগ করার প্রতিবাদে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দ্বিতীয় দিনের মতো কলমবিরতি চলছে

হারিয়ে যাচ্ছে জাতীয় ফুল শাপলা

চুকনগর প্রতিনিধি

জাতীয় ফুল শাপলা এখন বিলুপ্ত প্রায়। বর্ষা মৌসুমে এক সময় আনাচে-কানাচে পড়ে থাকা জলাভূমি, পুকুর-ডোবা, নদী-নালা ও খালবিল শাপলায় ভরে থাকত। যা গ্রামকে অপরূপ সৌন্দর্যে ভরিয়ে রাখত। কালের বিবর্তনে এখন এরুপ সৌন্দর্য চোখে পড়া দায়।

এই উদ্ভিদ কোন প্রকার পরিচর্যা ছাড়াই গ্রাম গঞ্জের পুকুর, ডোবা, জলাশয়ে জন্মে থাকে। একাধিক গুণযুক্ত এই শাপলার ডাটা একদিকে যেমন সবজি অন্যদিকে শাপলার মূল ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। শাপলা ফুল ফোটার পর কিছুদিনের মধ্যে ফল জন্ম নেয়। আর ওই ফলের ভেতরে থাকে কালো কালো দানা। এটাকে লোকজন বলে ‘চাউলিয়া’। শাপলার চাল রোদে শুকিয়ে মহিলারা ভাজতো ঢ্যাপের খৈ। এরপর বর্ষা চলে গেলে শুকনো মৌসুমে ছেলেমেয়েরা ওই সব ডোবা নালা থেকে কুড়িয়ে আনতো শালুক। আগুনে পুড়ে শালুক খেতে দারুণ স্বাদ।

খুলনা জেলাতেও শাপলা ফুলের ডাটার বেশ চাহিদা রয়েছে। তরকারি হিসেবে সুস্বাদু এই শাপলা। বর্ষা মৌসুমে বিভিন্ন হাট বাজারে এই শাপলা সবজি হিসেবে ব্যাপক বিক্রি হয়। কিন্তু খুলনার ডুমুরিয়া থেকে বিলুপ্ত প্রায় এই শাপলা এখন স্মৃতির আসনে জায়গা নিয়েছে। কারণ হিসেবে দেখা গেছে, আগের সব পুকুর, নদী, খাল ভরাট করে মানুষের নানা মুখী কর্মকান্ড ও কৃষিতে অতিমাত্রায় আগাছা নাশক ওষুধ প্রয়োগের কারণে শাপলার জন্মস্থলগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে।

জেলার একাধিক এলাকা ঘুরে দু’একটি পুকুরে গুটি কয়েক শাপলা ফুটে থাকতে দেখা গেছে। যার মধ্যে এলাকায় একটি পুকুরে কয়েকটি শাপলা ফুল রয়েছে। শাপলা মূলত বর্ষার শেষ থেকে শরৎকাল গ্রামগঞ্জের পুকুর, ডোবা, জলাশয়গুলোতে জন্মে থাকে। বর্তমানে নিচু জমিগুলোতে বিভিন্ন ধরণের ফসল চাষ হচ্ছে। ফলে শাপলা জন্মানোর সুযোগ পাচ্ছে না। আর পুকুর জলাশয়গুলো পরিষ্কার করে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ হচ্ছে। সে কারণে পুকুরগুলোতেও শাপলা বংশ বিস্তারের সুযোগ পাচ্ছে না। তাই আগের মত আর শাপলা দেখা যায় না।

এদিকে কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, খুলনা জেলার অনেক এলাকাতেই বাণিজ্যিকভাবে শাপলা চাষের সুযোগ রয়েছে। এতে করে বেকার সমস্যা সমাধান হতে পারে অনেকাংশেই। রাস্তার ধারের পতিত খালগুলো শাপলা উৎপাদনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। এতে করে সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি পাশাপাশি শাপলার সবজি হিসেবে চাহিদা মিটতে পারে।

এ ব্যাপারে ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, ডুমুরিয়া উপজেলায় পতিত জমি ও গর্ত জমিতে মাছ চাষ করার কারণে জাতীয় ফুল শাপলা এখন বিলুপ্তির পথে।

খুলনা জেলার অতিরিক্ত উপ পরিচালক উদ্যান মোঃ নজরুল ইসলামের নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলায় মাছের ঘের হওয়ায়, অতিরিক্ত ফসল ও জমি পতিত না‌ থাকার ফলে শাপলা জন্মানো সুযোগ পাচ্ছে না।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!