খুলনার বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেড়েছে। কিন্তু পাইকারি দাম কমলেও কমেনি খুচরা বাজারে। ফলে সুফল মিলছে না ভোক্তাদের। পাইকারি বাজারের চেয়ে খুচরায় সবজি কিনতে গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত মূল্য। হাত বদলেই সবজির দাম বাড়ছে ৫ থেকে ৮ গুণ।
নগরীর ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজারে আসা ক্রেতা সিয়াম বলেন, যে আমরা খুচরা বাজারে কম দামে পাই না। আমাদের কিনতে হলে ৩০-৪০ টাকা দিয়ে কিনতে হয়। শুধু শুনি পাইকারি বাজারে দাম কম, আমরা তো আর পাইকারী বাজারে যেতে পারি না। তাই বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয়।
মীম নামের এক গৃহিনী বলেন, টিভিতে ও খবরের কাগজ এবং অনলাইনে দেখি দাম কম। অথচ বাজারে আসলে আর কম দাম পাই না।
খুলনার পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, হাত বদলেই ৫ থেকে ৮ গুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে শীতকালীন সবজি। পাইকারী বাজারের ৬ থেকে ৭ টাকা কেজি দরের ফুলকপি খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়, ৬ থেকে ৭ টাকা কেজি দরের শালগম ৩০ টাকায়, ৪ থেকে ৫ টাকার মূলা খুচরা বাজারভেদে ২০-৩০ টাকা কেজিতে, ৪ থেকে ৫ টাকার শিম ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া পাইকারি বাজারের ১২ থেকে ১৪ টাকা দরের পিয়াজ কালী খুচরায় ৩০ টাকা কেজি, ৪০ টাকার টমেটো ৬০ টাকা কেজিতে আর ২০ থেকে ২২ টাকা কেজির কাঁচা মরিচ ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করছেন খুচরা বাজারের বিক্রেতারা দাম।
ক্রেতাদের দাবি, অনেক আগেই শীতকালীন সবজি বাজারে এসেছে। কিন্তু নানা অযুহাতে খুচরা বাজারে কমছে না এসব সবজির দাম। ভরা মৌসুমে সবজির বাজারে স্বস্তি মিলবে এমন প্রত্যাশা সাধারণ মানুষের।
সোনাডাঙ্গা পাইকারি বাজারের আড়ৎদার শরিফুল বলেন, বিগত ৫-৭ বছরে সবজির দাম এতো কমে বিক্রি করি নি।
সেখানকার বাচ্চু নামের আরেক আড়ৎদার বলেন, ফলন ভালো হয়েছে, তাই দাম কম। উত্তরাঞ্চল থেকে ট্রাকে করে প্রচুর পরিমাণে সবজি আসছে। এখন ফুলকপি, বাঁধাকপি, শালগম, মুলা ও শিম ৪-৫ টাকায় পাইকারি বাজারে বিক্রি হয়। কিছু দিন আগে তো এসব সবজি ৬০-৭০ টাকায় পাইকারি বিক্রি হতো। যারাআগে ফসল ফলাতে পাড়ছেন তারা বেশি লাভবান হচ্ছেন। এখন যে দাম এতে তো কৃষক হতাশায় ভূগছেন।
খুলনার জোড়াকল বাজারের সবজি বিক্রেতা শহীদুল্লাহ্ বলেন, আমরা যেমন কিনে আনি তেমন বিক্রি করি। মালামালের দাম কম হওয়াতে কাস্টমার কম তাই সকলে ভ্যান থেকে কিনে বাজারে সবজির জন্য মানুষ কম আসে। তাই কেনা দামের চেয়ে একটু বেশি দাম চাই।
নারী সবজি বিক্রেতা মর্জিনা বেগম বলেন, মালের দাম কম, তবে কেনাবেচা নাই। কাঁচা মাল বিক্রি করতে না পারলে পঁচে যায়। প্রথম দামে যা বিক্রি করে তা কিনে নি। পরে কেনা দামের চেয়েও কম দামে বিক্রি করতে হয়।
এদিকে সবজির দাম পাইকারির চেয়ে খুচরা বাজারে বেশি নেওয়া হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন খুলনা বিভাগীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা।
জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সেলিম খুলনা গেজেটকে বলেন, আমরা শুনেছি পাইকারি বাজারের চেয়ে খুচরা বাজারে কাঁচা সবজির দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যারা ভোক্তাদের অযথা হয়রানি করবে এবং অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
খুলনা গেজেট/এমএম