আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হাঁটুর ইনজুরি নিয়েই ভোটের মাঠে গ্রাম থেকে গ্রামে দিন-রাত ছুটে চলেছেন জনতার সেবক জননন্দিত ক্রিকেট তারকা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মাশরাফী বিন মর্তুজা।
তিনি ইতিমধ্যেই নড়াইল-২ আসনের লোহাগড়া উপজেলার জয়পুর, কোটাকোল, লক্ষীপাশা, দিঘলিয়া, ইতনা, মল্লিকপুর, লাহুড়িয়াসহ প্রায় সবকটি ইউনিয়নে সমাবেশ উঠান বৈঠক ও নির্বাচনে প্রচারণা চালিয়েছেন। প্রতিটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার মাঠে ঘাটে পাড়া মহল্লায় গিয়ে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করেছেন। তখন দেখা যায় জনতার সেবক মাশরাফি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে মানুষের খুব কাছে গিয়ে নৌকার পক্ষে ভোট প্রার্থনা করছেন। যেমনটি ক্রিকেট মাঠে ব্যাটিংয়ের বিপক্ষে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে বল করেছেন মাশরাফি।
এসব এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণার সময় মাশরাফি মা-বোনসহ সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত আপনারা আমার দায়িত্ব নেন, ৮ জানুয়ারি থেকে আমি আপনাদের সব দায়িত্ব নেব। আমার সমস্ত ধ্যান, জ্ঞান, মেধা দিয়ে আপনাদের কাজ করে যাবো ইনশাআল্লাহ।
অসুস্থ অবস্থায় ক্রিকেট মাঠে নেতৃত্ব দিয়ে মাশরাফি যেমনটি বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলকে নিয়ে গিয়েছিল ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম স্থানে। তেমনি নড়াইল-২ আসন তার নির্বাচনী এলাকায় বিগত ৫ বছরে এমপি হিসেবে নেতৃত্ব দিয়ে স্বাধীনতার পর থেকে সর্বোচ্চ উন্নয়ন সাধিত হয়েছে বলে মনে করেন এই আসনের জনসাধারন।
মাশরাফি মানেই যেন সবার আবেগ, ভালবাসার জায়গা, সমস্যা সমাধানের জায়গা, আস্থার জায়গা। মাশরাফিকে দেখলেই মানুষ ছুটে আসেন তার সাথে হ্যান্ডশেক করতে, একটু সমস্যার কথা বলতে, একটা সেলফি তোলার জন্য এগিয়ে আসেন সকলে। এলাকার মানুষের সমস্ত চাওয়ায় যেন মাশরাফির কাছে। মাশরাফিও যে এমনই, নেই কোন গাম্ভীর্যতা, নেই কোন অহংকার, হিংসা। মাশরাফিকে দেখলেই সবাই যেমন দৌঁড়ে তার কাছে এগিয়ে আসেন, মাশরাফিও সবাইকে বুকে জড়িয়ে ধরেন। সবার কথা মন দিয়ে শোনেন, সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন, সমস্যা সমাধান করেও দেন। এটাই যে চিত্রা পাড়ে বড় হওয়া কৌশিক যাকে দেশ-বিদেশের মানুষ জানেন নড়াইল এক্সপ্রেস খ্যাত মাশরাফি বিন মর্তুজা হিসেবে। চিত্রা পাড়ের কৌশিক এলাকার মানুষের কাছে আগেও যেমন ছিল এমপি হয়েও তেমনই রয়েছেন।
মাশরাফি যে অসুস্থ থাকেন নিজে কখনও সেটা মনেই করেন না। সে মনের সাহস নিয়ে ছুটে চলেন দুরন্ত গতিতে। এখন প্রায় ৪১ বছর বয়স তার। বয়সের অর্ধেক সময় তাকে বারবার ইনজুরিতে পড়ে থাকতে হয়েছে।
খেলার মাঠের ক্যাপ্টেন মাশরাফী এখন রাজনীতির মাঠের বড় নেতা। তিনি বর্তমানে দেশের বড় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক।
মাশরাফী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তার নির্বাচনী এলাকায় যোগাযোগ খাতে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। পরিবর্তন ঘটেছে এলাকার সামাজিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের। এ কারণে পথে-ঘাটে মাশরাফিকে দেখলেই সামনে এসে দাঁড়ান সাধারণ মানুষ। হাঁটুর ব্যথায় একটা সময় ঠিক মতো দাঁড়াতেও পারছিলেন না। তবে মাশরাফী দমে যাওয়ার মানুষ না। ইনজুরি নিয়েই প্রতিনিয়ত চালিয়ে যাচ্ছেন নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা।
নড়াইল জেলা আওয়ামী মহিলা লীগের সহ-সভাপতি রোজিয়া সুলতানা চামেলি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি নড়াইল-২ আসন থেকে নৌকার টিকিট নিয়ে এমপি হয়েই ছক্কা হাঁকান। এবারও যথারীতি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রতিক নিয়ে একই আসন থেকে ভোটের বিপ্লব ঘটিয়ে তিনি ছক্কা হাঁকাবেন বলে মনে করেন এই নেত্রী।
উল্লেখ্য, নড়াইল-২ আসনে মাশরাফি বিন মর্তুজা (নৌকা), ওয়ার্কার্স পার্টির অ্যাডভোকেট শেখ হাফিজুর রহমান (লাঙ্গল), জাতীয় পার্টি-এরশাদ অ্যাডভোকেট ফায়েকুজ্জামান ফিরোজ (লাঙ্গল), এনপিপির মনিরুল ইসলাম (আম), গণফ্রন্টের মোঃ লতিফুর রহমান (মাছ) ও ইসলামি ঐক্যজোটের মোঃ মাহবুবুর রহমান (মিনার), স্বতন্ত্র প্রার্থী জাতীয় সংবাদ সংস্থার চেয়ারম্যান লায়ন নূর ইসলাম (ঈগল), আলহাজ্ব সৈয়দ ফয়জুল আমির লিটু (ট্রাক) প্রতিক নিয়ে মোট ৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
খুলনা গেজেট/এনএম