যশোর শহরতলীর বিরামপুরে জামাই সুশান্ত কুমার ধর হত্যা মামলায় স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়িকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় একজনকে খালাস দেয়া হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের দীর্ঘ ২২ বছর পর সোমবার যশোর বিশেষ দায়রা জজ ও বিশেষ জজ (জেলা ও দায়রা জজ) এস এম নূরুল ইসলাম এ রায় দিয়েছেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলো নিহত সুশান্ত কুমার ধরের শ্বশুর সন্যাসী কুমার বিশ্বাস, শাশুড়ি করুনা রাণী ও স্ত্রী ইতি রাণী।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের স্পোশাল পিপি অ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, ২০০০ সালে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের কৃষ্ণপদ ধরের ছেলে সুশান্ত কুমার ধর পারিবারিকভাবে যশোর শহরতলীর বিরামপুরের সন্যাসী কুমার ধরের মেয়ে ইতি রাণীকে বিয়ে করেন। বিয়ের কয়েক দিন যেতে না যেতে শ্বশুর-শাশুড়ি তার মেয়ে ইতিকে স্বামীর সংসার ছেড়ে চলে আসতে বলে। এ নিয়ে ইতি তার স্বামীর সংসারে চরম অশান্তি শুরু করে। ২০০২ সালের অক্টোবর মাসের প্রথম দিকে ইতি তার বাবার বাড়ি বেড়াতে আসে। সুশান্ত ১২ অক্টোবর শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে যায় পূজা উপলক্ষে। এদিন রাতে শ্বশুরের কাছে শহরের দোকান কিনতে দেয়া ৪ লাখ টাকা ফেরত চাওয়াকে কেন্দ্র করে কলহের সৃষ্টি হয়। ভোর রাতে আসামিরা পরিকল্পিত ভাবে সুশান্তকে গলাকেটে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই নারায়ন কুমার ধর বাদী হয়ে অপরিচিত ব্যক্তিদের আসামি করে ১৫ অক্টোবর কোতয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০০৫ সালের ১০ জুলাই চারজনকে অভিযুক্ত ও তিনজনের অব্যাহতি চেয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর সার্কেলের এএসপি জিল্লুল ইমান আদালতে চার্জশিট জমা দেন।
এ মামলার দীর্ঘ সাক্ষী গ্রহণ শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক নিহতের স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়িকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত তিন আসামি জামিনে মুক্তি পেয়ে বর্তমানে পলাতক রয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম