খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ২০ মে, ২০২৪

Breaking News

  ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত : রয়টার্স; জীবিত কারও সন্ধান মেলেনি : রেড ক্রিসেন্ট

হজযাত্রীরা মিনায় পৌঁছেছেন, মহামারির পর এবারই বড় পরিসরে হজ

গেজেট ডেস্ক

কেউ গাড়িতে; কেউ চলছেন হেঁটে। দেহ-মনে তাদের অপার্থিব রোমাঞ্চ, কণ্ঠে তালবিয়া। গন্তব্য—মিনা। মক্কা থেকে মিনার পথ লাখ লাখ মানুষের পদভারে মুখরিত। আকাশ, বাতাস মন্দ্রিত করছে—‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক’ ধ্বনি। নজিরবিহীন নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সারা পৃথিবী থেকে আগত লাখ লাখ হজযাত্রী মসজিদুল হারামে (কাবা)  রবিবার জোহরের নামাজ আদায় করেন। এরপর পবিত্র হজ পালন করতে রওনা হন মক্কা থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে মিনার উদ্দেশ্যে।

এই তাঁবু নগরী মিনা থেকেই সূচনা হবে হজ। সেখানে সোমবার সারা দিন ও সারা রাত অবস্থানের মধ্য দিয়ে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে আল্লাহর মেহমানদের। দীর্ঘ যানজট এড়াতে অনেকে মিনায় গেছেন পায়ে হেঁটে। অন্যান্য হাজিদের মতো বাংলাদেশের ১ লাখ ২২ হাজার হাজিও এখন মিনায়। মিনায় পৌঁছে তারা সেখানে যার যার তাঁবুতে (ফায়ার প্রুফ ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত) অবস্থান করে জোহর থেকে আগামীকাল মঙ্গলবার ফজরসহ মোট পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জামাতের সঙ্গে আদায় করার পাশাপাশি অন্যান্য ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন। মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর নামে গুঞ্জরিত হবে পুরো মিনা এলাকা। রাতে মিনায় অবস্থান করা সুন্নত। মিনায় ফজরের নামাজ আদায় করে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা পালনের জন্য মঙ্গলবার ভোরে তারা যাবেন বিদায় হজের ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত আরাফাত ময়দানে। সেলাইবিহীন শুভ্র এক কাপড়ে সূর্যাস্ত পর্যন্ত তারা সেখানে থাকবেন।

মূলত ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের দিনকেই হজের দিন বলা হয়। সূর্যাস্তের পর আরাফাত থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে মুজদালিফায় গিয়ে রাতযাপন ও পাথর সংগ্রহ করবেন হাজিরা। ১০ জিলহজ ফজরের নামাজ আদায় করে মুজদালিফা থেকে আবার মিনায় ফিরবেন। ১০ জিলহজ মিনায় প্রত্যাবর্তনের পর হাজিদের পর্যায়ক্রমে চারটি কাজ সম্পন্ন করতে হয়। শয়তানকে (জামারা) পাথর নিক্ষেপ, আল্লাহর উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি (অনেকেই মিনায় না পারলে মক্কায় ফিরে গিয়ে পশু কোরবানি দেন), মাথা ন্যাড়া করা এবং তাওয়াফে জিয়ারত। মিনায় ফিরে ১১ ও ১২ জিলহজ অবস্থান করবেন ও প্রতিদিন তিনটি শয়তানকে প্রতীকী পাথর নিক্ষেপ করবেন। সবশেষে কাবা শরিফকে বিদায়ি তাওয়াফের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা।

করোনা মহামারির পর এবারই পূর্ণাঙ্গ পরিসরে পালিত হচ্ছে হজ। এর আগে করোনার কারণে সীমিত পরিসরে তিন বছর পালিত হয়েছে মুসলিমদের এই ফরজ ইবাদত। কিন্তু এবার কোনো বিধিনিষেধ নেই। তাই বিশ্বের ১৬০টি দেশের ২০ লাখের বেশি মুসল্লি সমবেত হয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম পবিত্র হজ। আর্থিক ও শারীরিকভাবে সামর্থ্যবান প্রতিটি মুসলিম নারী ও পুরুষের জন্য সারা জীবনে অন্তত এক বার হজ পালন করা ফরজ, অর্থাত্ অবশ্যই পালনীয়।

হজের খুতবা দেবেন শায়খ ড. ইউসুফ বিন মুহাম্মদ

চলতি বছর সৌদির স্থানীয় সময় আগামী ৯ জিলহজ (২৭ জুন) আরাফাতের ময়দানে মসজিদে নামিরা থেকে হজে অংশগ্রহণকারী মুসলিম উম্মাহর উদ্দেশে হজের খুতবা দেবেন শায়খ ড. ইউসুফ বিন মুহাম্মদ বিন সাঈদ। সম্প্রতি সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ এক রাজকীয় ফরমানে তাকে আরাফাতের মহান দিনে খুতবা দেওয়ার জন্য অনুমোদন দেন। খবর আল আরাবিয়ার।

এ বছর হজের খুতবা ২০টির বেশি ভাষায় অনুবাদ করা হবে। এর মধ্যে বাংলাও রয়েছে। এই খুতবা বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ সারা বিশ্বের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।

মক্কার আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, হজের সময় মক্কার তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে পারে। আর্দ্রতা থাকবে ৮৫ শতাংশ। আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে।

খুলনা গেজেট/এসজেড




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!