বৈরী আবহাওয়া ও শিবসা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে খুলনার পাইকগাছা উপজেলার সোলাদানা এলাকায় ক্ষতিগ্রস্থ ভেড়িবাঁধ স্বেচ্ছাশ্রমে সংস্কার করেছে এলাকাবাসী। সোমবার (১৫ আগস্ট) উপজেলা প্রশাসনের তত্বাবধায়ন ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে পাউবোর সরবরাহকৃত সরঞ্জামাদি দিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধটির প্রাথমিক সংস্কার করা হয়েছে।
এদিকে জোয়ারের পানির চাপে উপজেলার মাহমুদকাটি ও রামনাথপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হলেও এখন পর্যন্ত সেখানকার বাঁধ মেরামতে কোন প্রকার ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
এর আগে রোববার (১৪ আগস্ট) দুপুরে বৈরী আবহাওয়ায় জোয়ারের প্রবল পানির চাপে শিবসার সোলাদানা ইউনিয়নের পাউবোর ২৩নং পোল্ডারের বয়ারঝাঁপা এলাকার ভাঙ্গাহাড়িয়া নামক স্থানে প্রায় ৩০ ফুট ওয়াপদার বাঁধ ভেঙ্গে ও কপোতাক্ষের মাহমুদকাটি ও রামনাথপুরে উপচে পড়া পানিতে লোকালয়ে পানি ঢুকে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। এসময় ভেসে যায় ছোট-বড় বহু মৎস্য ঘের। পানির তোড়ে অনেক বসতঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
এ ব্যাপারে পাইকগাছা কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্বেচ্ছাসেবক মোঃ রমজান সরদার জানান, সোলাদানা ইউনিয়নটি মূলত দ্বীপ বেষ্টিত অঞ্চল। ফলে
প্রায় সারা বছরই প্রাকৃতিক দুর্যোগে সেখানকার কোন না কোন এলাকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তার দাবি, ওই এলাকার প্রায় ৩০ কিঃমিঃ বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। বেতবুনিয়া আবাসন প্রকল্প থেকে শুরু করে বরইতলা, পাটকেলপোতা,
সোলাদানা, আমুড়কাটা হয়ে সোনাখালী পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিঃমিঃ টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা হলে দফায় দফায় ভাঙনের হাত থেকে স্থায়ীভাবে মুক্তি পাবে ওই এলাকার ভুক্তভোগী সর্বসাধারণ।
সোলাদানা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান গাজী জানান, গতকাল শিবসা নদীর তীরবর্তী তার ইউনিয়নের বয়ারঝাঁপার ভাঙ্গাহাড়িয়া নামক স্থানে ওয়াপদার দূর্বল ভেড়িবাধটি ভেঙে গিয়ে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। সোমবার সকাল থেকে উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধায়নে তার নেতৃত্বে স্থানীয় এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে ক্ষতিগ্রস্থ ভেড়িবাধটির প্রাথমিকভাবে মেরামত করেছেন।
সর্বশেষ পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানা অফিসার ইনচার্জসহ পাউবো কর্তৃপক্ষ ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে হরিঢালী ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ড সদস্য শংকর বিশ্বাস জানান, রোববার প্রবল জোয়ারের লোনা পানিতে মাহমুদকাটির জেলে পল্লীসহ রামনাথপুর এলাকার বহু ঘর-বাড়ি প্লাবিত হয়ে মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। সর্বশেষ ব্যবস্থা
গ্রহনে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ রাজু হাওলাদার জানান, পাইকগাছা উপজেলার ৬টি পোল্ডারে মোট ২৫০ কিঃমিঃ বেড়ি বাঁধ রয়েছে। তার মধ্যে মোট ৩৩ কিঃমিঃ বাঁধ অতিরিক্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ওয়াপদার
বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার খবরে পেয়ে তিনিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন। সর্বশেষ উপজেলা প্রশাসনের তত্বাবধায়নে স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে তাদের সরবরাহকৃত সরঞ্জামাদি ব্যবহার করে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধটি প্রাথমিকভাবে মেরামত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।