স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতি বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে চলছে নগরীর ময়লাপোতা মোড়স্থ খানজাহান আলী হাসপাতাল। নির্দিষ্ট সংখ্যক চিকিৎসক ও সেবিকার উপস্থিতির কথা থাকলেও বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। অপরদিকে রোববারের ঘটনায় নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ তালা ঝুলিয়ে দিলেও আজ থেকে আবার হাসপাতালের কার্যক্রম চলতে দেখে চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
স্থানীয়দের ভাষ্য মতে, ১৫ বছর আগে বর্তমান খানজাহান আলী হাসপাতাল ‘আলী ক্লিনিক’ নামে পরিচিত ছিল। মালিক নুরুল ইসলামের মৃত্যুর পর ওই ভবনটি কিছুদিন পরিত্যক্ত ছিল। ছেলেরা অন্য ব্যবসা করার কারণে হাসপাতাল করার চিন্তা করেনি। পরে খুলনার একজন গাইনী বিশেষজ্ঞ কিছুদিন ওই ভবনটি ক্লিনিক হিসেবে ভাড়া নেন। ওই চিকিৎসক চলে যাওয়ার পর হারবাল কোম্পানীর প্রতিনিধি শেখ মনিরুজ্জামান ভবনটি ভাড়া নিয়ে নতুন নামে হাসপাতালটি পরিচালনা করেন। হাসপাতালে একের পর এক ঘটনা ঘটলেও কর্তৃপক্ষ নিরব ভূমিকা পালন করে চলেছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ, খুলনা বিভাগীয় কার্যালয় থেকে জানা গেছে, একটি হাসপাতাল বা ক্লিনিক পরিচালনা করার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম অনুসরণ করার বাধ্যবাধকতা আছে। অপারেশন থিয়েটার আছে এমন প্রতিষ্ঠানে ১০ বেডের হাসপাতালের জন্য ৩ জন চিকিৎসক ও ছয়জন সেবিকা সর্বক্ষণিক উপস্থিত থাকার কথা। কিন্তু খানজাহান আলী হাসপাতালের ক্ষেত্রে দেখা যায় বিপরীত । তারপরও এ হাসপাতালের অনুমোদন পত্র আছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট অফিস। ২০২২ অর্থ বছরের নিবন্ধন ফিসও জমা দিয়েছে তারা।
আজ দুপুর দু’টার দিকে হাসপাতালের গেট খোলা দেখে ভেতরে প্রবেশ করে দেখা যায়, সেখানে একজন সেবিকা ও একজন আয়া উপস্থিতি রয়েছে। কোন চিকিৎসককে ওই হাসপাতালের অভ্যন্তরে দেখা যায়নি। প্রশ্ন করলে উপস্থিত আয়া খানজাহান আলী হাসপতালের ডায়গনিষ্ট সেন্টার এ্যান্ড কনসালটেন্ট সেন্টারকে দেখিয়ে দেয়। সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর উপস্থিত কেউ মুখ খুলতে চায়নি। তবে কল দিয়ে চিকিৎসক এনে চলে এ হাসপাতালটির কার্যক্রম।
স্বাস্থ্য বিভাগ খুলনার উপ-পরিচালক ডা. ফেরদৌসী আক্তার খুলনা গেজেটকে বলেন, খুলনার বাইরে থাকায় খানজাহান আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোগী মৃত্যুর খবরটি তিনি জানেন না! এখনও কোন অভিযোগ তার কাছে আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত কমিটি গঠন করে হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়মের বাইরে কোন হাসপাতাল বা ক্লিনিক পরিচালিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আইন অনুযায়ী তাদের নিবন্ধন বাতিল করার ক্ষমতা রাখে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
খুলনা গেজেট/ টি আই