সরবরাহ বাড়ায় শীতকালীন শাক-সবজির দাম বাজারে কমেছে বলে স্বস্তি ফিরেছে ভোক্তাদের মাঝে। আর বাজারে কমেছে ডিম-মুরগি ও মাছের দামও। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) ঝিকরগাছার তরকারি, মাছ ও মাংসের বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
মাঘের মাঝামাঝি সময়ে এসে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝিকরগাছা বাজারগুলোতে আরও বাড়ছে শীতকালীন শাক-সবজির সরবরাহ। দোকানিরাও এর পসরা সাজিয়ে বসেছেন। এতে হাতে গোনা কয়েকটি সবজির দাম স্থিতিশীল থাকলেও কমেছে বেশিরভাগের দাম।
বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি শিম ১০ টাকা, টমেটো ১০-১৫ টাকা, মুলা ৫ টাকা, ফুলকপি ছোট বড় প্রতি পিচ ৫-১০ টাকা, বাঁধাকপি ৩-৪ টাকা, বিট কপি কেজি ১০ টাকা, বেগুন ১৫-২০ টাকা, করলা ৩০ টাকা, বরবটি ২৫ টাকা, লতি ১৫ টাকা, কাঁচ কলা ১২ টাকা, মেটে আলু ৫০ টাকা ও কুষ্টিয়ার মানকচু ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি গাজর ২০ টাকা, শালগম ১০ টাকা, মটরশুঁটি ৬০ টাকা ও শসা বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
স্থিতিশীল রয়েছে কাঁচা মরিচের দাম। খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩০-৩৫ টাকায়, আর পাইকারিতে ২৫-৩০ টাকা। এছাড়া বাজারে লালশাকের আঁটি ১০ টাকা, পুঁইশাক ১০ টাকা, লাউশাক ১৫ টাকা, মুলাশাক ১০ টাকা, কলমিশাক ১০ টাকা ও পালংশাক বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়।
প্রতি কেজি ধনেপাতা ২০ টাকা, পেঁয়াজের কলি ১০ টাকা, পেঁয়াজ ৩০, নতুন আলু লাল ১৭-২০ টাকা ও আর মানভেদে প্রতি পিস ব্রকলি ১৫-২০ টাকা এবং লাউয়ের জন্য গুনতে হচ্ছে ১৫-২০ টাকা।
সবজির দামের নিম্নমুখী প্রবণতায় খুশি ভোক্তারা। তারা জানান, শীতকাল এলেই কিছুটা দাম কমে। কিন্তু সারাবছর সবজির চড়া দামে অস্থির থাকে বাজার। স্বস্তি রাখতে প্রয়োজনে আমদানি করে সরবরাহ বাড়াতে হবে।
কিন্তু মাথায় হাত পড়েছে কৃষকের।
উপজেলা হাড়িয়াদেয়াড়া গ্রামের কৃষক বাক্কার আলী জানান, আড়াই টাকা দরে ৫হাজার পিচ পাতাকপির চারা ক্রয় করে জমিতে লাগিয়ে ছিলাম। সার, পানি ও ভ্যান ভাড়া করে বাজারে নিয়ে গেলে দাম পায় মাত্র তিন টাকা, প্রতি পিচ কপিতে ১০ টাকা লস হচ্ছে। এভাবে চললে কৃষিকাজ ছেড়ে অগামীতে ইজিবাইক চালাতে হবে।
সরেজমিন মাছ বাজার পরিদর্শন করে দেখাগেছে, মাছের দামও ক্রেতাদের হাতের নাগালে। বাজারে প্রতি কেজি টেংরা ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১০০ থেকে ১২০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, রুই ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, কাতল ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, চাষের শিং ৩০০ টাকা, চাষের মাগুর ৩৫০ টাকা, চাষের কৈ ১৬০ থেকে ২০০ টাকা, সিলভারকাপ ১২০ থেকে ১৫০ টাকা ও ভেটকি মাছ ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে অপরিবর্তিত রয়েছে গরুর মাংসের দাম প্রতি কেজি ৭০০ টাকা ও খাসীর মাংস ১১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পোল্টি মুরগি ২১০ টাকা, সোনালী ৩০০ টাকা, কক ৪২০ টাকা ও দেশী মুরগী ৫২০ টাকা। এদিকে মুরগির ডিম প্রতি পিচ ১১ টাকা, হাঁেসর ডিম ২০ টাকা ও কোয়েল পাখির ডিম ৩.৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সকালে বাজার করতে আসা শহিদুল ইসলাম বলেন, তরিতরকারি, শাক-সবজি ও মাছের দামে স্বস্তি ফিরলেও ভোজ্য তেল ও মসলার দাম অনেকটা চড়া।
নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েরই। ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পান।
বিক্রেতারা বলছেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধুদের দৌরাত্ম্য কমবে।
খুলনা গেজেট/এনএম