খুলনা, বাংলাদেশ | ২২ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৭ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  সামিট গ্রুপের আজিজসহ পরিবারের ১১ সদস্যের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ
  সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ও এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার

স্ত্রীর মৃত্যুর এক সপ্তাহের মাথায় চলে গেলেন অ্যাডভোকেট মঞ্জুর-উল-আলম

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় পার্টির সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর আহবায়ক, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র সদস্য, সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর, বর্ষিয়ান ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক অ্যাডভোকেট এস এম মঞ্জুর-উল-আলম ইন্তেকাল করেছেন (ইন্ন লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১ টার দিকে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে এক ছেলে ও এক মেয়ে, নাতি-নাতনি, আত্মীয়-স্বজনসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।

শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) বাদ জুম্মা খুলনা সরকারি মহিলা কলেজ মাঠে মরহুমের নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে বয়রাস্থ মরহুমের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। মঞ্জুর-উল-আলমের মৃত্যুর মাত্র এক সপ্তাহ আগে তার স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

১৯৪০ সালে ৩০ মে বয়রা গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন খ্যাতনামা এই আইনজীবী। বি এম আসাদ হোসেন তার পিতা। ১৯৫৬ সালে খালিশপুর হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক, ১৯৫৮ সালে বিএল কলেজ থেকে আইএ, ১৯৬২ সালে একই কলেজ থেকে বিএ, ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ এবং ১৯৬৮ সালে এলএলবি পাস করেন।

১৯৬৯ সালের ডিসেম্বর মাসে খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতিতে যোগ দেন। বিএল কলেজে পড়াকালীন সময়ে ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। ১৯৬৮ সালে ন্যাপ (ভাসানী) এর খুলনা শহর শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ শহরের বৈকালী এলাকায় প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশ নেন। বৈকালী যুদ্ধের বিবরণ দিয়ে খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির স্মরণিকা প্রত্যয়ে প্রবন্ধ লিখেছেন। খুলনা নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রধান মির্জা খয়বার হোসেনের প্রতিরোধ যুদ্ধকালীন সাথী ছিলেন।

জেঃ এইচ এম এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টিতে ১৯৮৪ সালে যোগদেন। এ সময় প্রথমে তিনি এপিপি পরে পিপি হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৯০ সালে জাতীয় পার্টি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরও তিনি এ আর্দশ থেকে বিচ্যুত হননি। ১৯৯৯ সালে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের একই সাথে খুলনা জেলা আইনজীবী ফেডারেশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সালে জাতীয় পার্টির খুলনা শহর শাখার আহবায়ক নিযুক্ত হন। দশ মাস পরে তাকে বহিস্কার করা হয়। গত বছরের শেষ দিক থেকে তিনি রাজনীতিতে নিস্ক্রিয় ছিলেন। খুলনা সিটি ল’ কলেজের অধ্যাপক, জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে একাধিকবার চেয়াম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরি ও শিশু ফাউন্ডেশনের আজীবন সদস্য। তিনি তথ্যভিত্তিক সুবক্তা ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের প্রবন্ধকার। তিনি আইন পেশায় ৫২ বছর। সর্বশেষ জাপা নেতা শেখ আবুল কাশেম হত্যা মামলায় আসামি আব্দুল গফ্ফার বিশ্বাসের পক্ষের আইনজীবী ছিলেন।

অ্যাডভোকেট এস এম মঞ্জুর-উল-আলম’র মৃত্যুতে গভীর শোক ও শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে বিবৃতি দিয়েছেন খুলনা মহানগর বিএনপি নেতৃবৃন্দ। বিবৃতিদাতারা হলেন, খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামান মনি, সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, মীর কায়সেদ আলী, শেখ মোশাররফ হোসেন, এস এম আরিফুর রহমান মিঠু ও ইকবাল হোসেন খোকন প্রমুখ।

এস এম মঞ্জুর-উল-আলম এর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টি নেতৃবৃন্দ। প্রদত্ত বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, তাঁর মৃত্যুতে জাতীয় পার্টির অপূরণীয় ক্ষতি হলো এবং খুলনাবাসী একজন স্বচ্ছ্ব পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদকে হারালো।

বিবৃতিদাতার নেতৃবৃন্দ হলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়, কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক সাংসদ আলহাজ্ব শেখ আবুল হোসেন, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক সাংসদ আলহাজ আব্দুল গফফার বিশ্বাস, সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য আব্দুল্লাহ্ আল মামুন, সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য এড. মাসুদুর রহমান, সাবেক সদস্য সচিব মোল্লা শওকত হোসেন বাবুল। মোঃ রফিজুল ইসলাম, মোঃ রিপন হাওলাদার, আব্দুল হাকিম, গোলাম সরোওয়ার, মোঃ সোহাগ হাওলাদার প্রমুখ।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!