দিনের বেশিরভাগ সময় যানজট লেগে থাকে নগরীর সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল এলাকায়। যানজটে সাধারণ যাত্রীসহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রোগীরা ভোগান্তিতে পড়েন। এছাড়া নগরীর অন্যতম এই প্রবেশদ্বারটির শ্রীহীন দশা নেতিবাচক বার্তা যায় নগরে আসা অতিথিদের মাঝেও।
এ অবস্থায় বাস টার্মিনাল এলাকায় যানজট এড়াতে সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল মোড়টি সম্প্রসারণ এবং মজিদ সরণীকে টার্মিনালের বাইপাস সড়কের সঙ্গে সোজা করে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি)। ইতোমধ্যে একটি খসড়া নকশা তৈরি করেছে কেসিসির নিয়োগ করা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান।
তবে এই কাজে প্রধান বাধা হচ্ছে মোড়টি আশপাশে কেডিএর কয়েকটি টিকেট কাউন্টারসহ স্থাপনা। টার্মিনাল অংশের জমির মালিকও কেডিএ। মোড়টি সম্প্রসারণ এবং সড়ক সোজা করতে কাউন্টারগুলো অপসারণ করতে হবে। বিষয়টি নিয়ে আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় কেডিএ’র চেয়ারম্যান ও প্রকৌশলীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন কেসিসির কর্মকর্তারা। বৈঠকে কেডিএর সম্মতি পাওয়া গেলে আগামী মাসেই দরপত্র আহ্বান এবং জানুয়ারি কাজ শুরু করা হবে।
যানজট কমানো এবং নগরবাসীর বৃহত্তর স্বার্থের কথা বিবেচনা করে বাস টার্মিনাল মোড় সম্প্রসারণ ও সড়কটি সোজা করতে কেডিএকে সহযোগিতার অনুরোধ জানিয়েছেন খুলনার নাগরিক নেতারাও।
কেসিসি ও নগর পরিকল্পনাবিদদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাস টার্মিনাল এলাকায় যানজটের প্রধান কারণ বাস টার্মিনালের সামনের ৪ রাস্তা মোড়টি অপ্রশস্ত এবং টার্মিনাল থেকে পাশের সংযোগ সড়কে উঠতে বেশকিছু পথ ঘুরতে হয় বাসগুলোকে। শিববাড়ি মোড় (মজিদ স্মরণী) থেকে বাস টার্মিনাল বাইপাসে যেতেও প্রায় ৩০/৪০ ফুট সড়কে এল টার্ন নিতে হয়। সড়কের ওইটুকু অংশ ঘুরতেই যানজট তৈরি হয়। এছাড়া বাসগুলো দীর্ঘ সময় সড়কে দাড়িয়েই যাত্রী ওঠানামা করায় যানজট লেগেই থাকে।
কেসিসি থেকে জানা গেছে, খুলনা সিটি করপোরেশনের গুরুত্বপূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা উন্নয়নে ৬০৭ কোটি টাকার বড় একটি প্রকল্পের কাজ চলছে। এই প্রকল্পের আওতায় নগরীর গুরুত্বপূর্ণ ২২টি মোড় সম্প্রসারণ ও দৃষ্টি নন্দন করা হবে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল মোড়। এই কাজের নকশা প্রণয়নের জন্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে কেসিসি। ইতোমধ্যে একটি খসড়া নকশা তারা জমা দিয়েছে।
খসড়া এই নকশায় বাস টার্মিনাল মোড়টি সম্প্রসারণ করে সেখানে একটি ফোয়ারা নির্মাণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মজিদ স্মরণী থেকে ৪ লেন সড়কটি সোজা টার্মিনালের পাশের সংযোগ সড়কে সংযুক্তি করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে করে যানজট এড়ানোর পাশাপাশি সৌন্দর্য বাড়বে এই প্রবেশদ্বারের।
এ ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক ও কেসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মশিউজ্জামান খান বলেন, পরামর্শক সংস্থার প্রস্তাব নিয়ে কেডিএ’র কর্মকর্তাদের সঙ্গে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বৈঠক হবে। পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের জন্য কেডিএ’র সহযোগিতা প্রয়োজন।
কেসিসির মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, খুলনাকে পরিচ্ছন্ন, দৃষ্টিনন্দন ও যানজটমুক্ত শহর হিসেবে গড়ে তুলতে নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনালসহ ২২টি মোড় প্রশস্তকরণ ও সৌন্দর্যবর্ধন করা হবে। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। আশা করি কেডিএ কর্মকর্তারা বিষয়টি অনুধাবন করে পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবেন।