খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ২১ মে, ২০২৪

Breaking News

  চলে গেলেন বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত বরেণ্য লেখক হোসেনউদ্দিন হোসেন
  কঠোরভাবে বাজার মনিটরিং শুরুর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
  ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলবে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ : কাদের

সেপ্টেম্বরে সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স

গেজেট ডেস্ক

সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সে বড় ধরনের ধস নেমেছে। এ মাসে বৈধ পথে ও ব্যাংকের মাধ্যমে মাত্র ১৩৪ কোটি ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। দেশের প্রবাসী আয়ের এ অঙ্ক গত ৪০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে এর চেয়ে কম রেমিট্যান্স এসেছিল ১০৯ কোটি ডলার।

খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্যাংকিং চ্যানেলের চেয়ে খোলা বাজারে ডলারের দামের ব্যবধান বেশি হলে হুন্ডিতে লেনদেন বেড়ে যায়। আর যখন হুন্ডির চাহিদা বাড়ে তখন রেমিট্যান্স কমে যায়। গত মাসে ব্যাংকের চেয়ে খোলা বাজারে ডলারের দাম ৬ থেকে ৭ টাকা বেশি ছিল। তাই বেশি লাভের আশায় বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানো কমিয়ে দিয়েছেন প্রবাসীরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, সদ্যবিদায়ী সেপ্টেম্বর মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে এসেছে ১৩৪ কোটি ৩৬ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। এ অঙ্ক আগের বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় ১৯ কোটি ৫৯ লাখ বা ১২ দশমিক ৭২ শতাংশ কম। গত বছরের সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ ডলার।

এছাড়া গত আগস্টের তুলনায়ও সেপ্টেম্বরে প্রবাসী আয় কমেছে ২৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার বা প্রায় ১৬ শতাংশ। আগস্টে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ডলার।

প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১১ কোটি ৮৬ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ কোটি ৫১ লাখ ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১১৮ কোটি ৪৮ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫০ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।

গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৬১ কোটি ৬ লাখ মার্কিন ডলার। আগের ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ হয়েছিল। যার পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার।

ডলার সংকট ও বাজার স্থিতিশীলতার জন্য রপ্তানি ও প্রবাসী আয় এবং আমদানি দায় পরিশোধের ক্ষেত্রে ডলারের দাম নির্ধারণ করে আসছে ব্যাংকগুলো। এখন প্রবাসী আয়ে প্রতি ডলারে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা দাম দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। রপ্তানি বিল নগদায়নে প্রতি ডলারের বিপরীতে দাম দেওয়া হচ্ছে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা। আর আমদানি ও আন্তঃব্যাংক লেনদেনে দেওয়া হচ্ছে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা।

তবে কার্ব মার্কেট বা খোলা বাজারে নগদ এক ডলার কিনতে গ্রাহক‌দের গুনতে হচ্ছে ১১৭ টাকা থেকে ১১৮ টাকা। চিকিৎসা, শিক্ষা বা ভ্রমণের জন্য যারা বিদেশে যাচ্ছেন, তাদের নগদ প্রতি ডলার কিনতে দেশি মুদ্রা খরচ করতে হচ্ছে সর্বোচ্চ ১১৮ টাকা পর্যন্ত।

প্রকৃত রিজার্ভ ২১.১৫ বিলিয়ন ডলার

আন্তর্জাতিক নিয়মে আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী, সবশেষ ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকৃত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়ায় ২ হাজার ১১৫ কোটি ডলার। যা দিয়ে তিন থেকে সাড়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটাতে পারবে বাংলাদেশ। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী, বর্তমানে রিজার্ভ ২ হাজার ৭০৫ কোটি ডলার।

সারাবিশ্বে প্রচলিত ও বহুলব্যবহৃত আইএমএফের ব্যালেন্স অব পেমেন্টস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল (বিপিএম ৬) অনুযায়ী, রিজার্ভ গণনায় বাংলাদেশ ব্যাংক গঠিত বিভিন্ন তহবিলের পাশাপাশি বিমানের জন্য প্রদত্ত ঋণ গ্যারান্টি, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে মুদ্রা বিনিময়, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষকে দেওয়া ঋণ, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকে আমানত এবং নির্দিষ্ট গ্রেডের নিচে থাকা সিকিউরিটিতে বিনিয়োগের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত নয়। এসব খাতে বর্তমানে রিজার্ভ থেকে ৫৯০ কোটি ডলার দেওয়া আছে, যা বাদ দিয়ে হিসাব করা হয়েছে।

খুলনা গেজেট/ এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!