যশোরের শার্শার সাবেক এমপি শেখ আফিল উদ্দীনের দখলমুক্ত হয়েছে প্রায় ৪১ একর (১২৩ বিঘার) বেশি জমি। ২০ অক্টোবর শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ড. নাজিব হাসান এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুসরাত ইয়াসমিন বিপুল পরিমাণ এ জমি দখলমুক্ত করার বিষয় নিশ্চিত করেন।
শার্শা উপজেলার হরিণাপোাতা মৌজার এক খতিয়ানে থাকা ৫৩ একর জমির মধ্যে সাবেক এমপি আফিল উদ্দীন জোরপূর্বক ৪১ একর জমি নিজের ভোগদখলে রেখেছিলেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে জমির প্রকৃত মালিকানা, দখলদারদের অপতৎপরতা এবং স্থানীয় জনগণের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরা হয়। পরে উপজেলা প্রশাসন তদন্তে দেখতে পায়, এমপি আফিলের আশ্রিত ভূমিদস্যুরা জাল দলিল করে জমিটি দখল করে রেখেছিল। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার যশোর জেলা প্রশাসন, ভূমি কার্যালয় এবং শার্শা থানা পুলিশের সমন্বয়ে একটি টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। এর মাধ্যমে দখলকৃত ৪১ একর জমি উদ্ধার করা হয়।
এদিকে, জমি দখলমুক্ত হওয়ায় খুশি হয়েছেন স্থানীয় জনগন। তারা জানান, দখলদারদের কারণে এলাকা কৃষি ও মাছচাষ বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল। দখলমুক্ত হওয়ায় স্থানীয় গরিব মানুষের রুটি রুজির ব্যবস্থা হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।
শার্শা উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা আহসান হাবিব খোকন বলেন, সরকারি জমি জোর করে সাবেক এমপি আফিলসহ তার লোকজন দীর্ঘ ১৬ বছর ভোগদখল করেছেন। বুধবার প্রশাসনের সহায়তায় আমরা রাহুমুক্ত হয়েছি। এটি নিশ্চয়ই সাধারণ মানুষের জন্যে সুখবর।
শার্শা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক হাসান জহির বলেন, বিনা ভোটের এমপি শেখ আফিল দীর্ঘদিন ধরে শার্শা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ত্রাসের ও দখলদারিত্বের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ড. নাজিব হাসান বলেন, একটি ইলেকট্রনিক্স মিডিয়াসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় জমি দখল সংক্রান্ত সংবাদ আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়। রিপোর্ট প্রকাশের পর আমরা তদন্তে জানতে পারি, দীর্ঘদিন ধরে সরকারি এই জমি অবৈধভাবে দখল করে একটি চক্র ভোগদখল করে আসছিল। বিষয়টি নিয়ে আমরা দীর্ঘ সময় ধরে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে আজ তা দখলমুক্ত করেছি। শার্শা উপজেলা ব্যাপি সরকারের যত জমি অবৈধভাবে দখল আছে, ওই সমস্ত জমিগুলো দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
খুলনা গেজেট/কেডি