নাশকতা মামলায় অভিযুক্ত সাতক্ষীরা ধুলিহর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুস সালামকে বিধি অনুযায়ী চূড়ান্ত বরখাস্তের আবেদন না-মঞ্জুর করায় যশোর বোর্ডের সিদ্ধান্ত ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। ফলে রীটের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বরখাস্তই থাকছেন ওই শিক্ষক।
এদিকে একইসাথে যশোর বোর্ডের আপিল এন্ড আর্বিট্রেশন কমিটির সিদ্ধান্তের বৈধতা জানতে চেয়ে শিক্ষা সচিব, যুগ্ম সচিব, যশোর বোর্ডের চেয়ারম্যান, স্কুল পরিদর্শকসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে রুল জারি করা হয়েছে। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে আদেশের জবাব দিতে বলেছেন হাইকোর্ট। রবিবার (১২মে) মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. হারুন-অর রশীদ ও হাইকোর্ট বিভাগের প্রশাসনিক কর্মকর্তা রুহুল আমিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
জানা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষক মোঃ আব্দুস সালাম ২০০০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ধুলিহর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। তার বিরুদ্ধে নিয়োগ বোর্ডের রেজুলেশনে জালিয়াতি, সরকার বিরোধী কর্মকান্ডে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার, নিয়োগ বানিজ্য ও স্কুলের প্রায় ছয় লাখ টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাতের প্রমান পাওয়া যায়।
এসব ঘটনায় স্কুল ম্যানেজিং কমিটি তাকে সাময়িক বরখাস্তের পর চূড়ান্ত বরখাস্তের অনুমতির জন্য যশোর বোর্ডে আবেদন করে। কিন্তু যশোর শিক্ষা বোর্ডের আপিল এন্ড আর্বিট্রেশন কমিটি এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের পুনঃতদন্ত করে ও কমিটির ৮৫ তম সভায় অভিযুক্ত শিক্ষকের চূড়ান্ত বরখাস্তের আবেদন না-মঞ্জুর করে। এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য হুমায়ুন কবীর হাইকোর্টে রীট করেন। রীট পিটিশন নং ৪৮৭৩/২৪। এতে গত ৭ মে বিচারপতি মোঃ খসরুজ্জামান ও কেএম জাহিদ সারোয়ারের যৌথ বেঞ্ছ ‘প্রধান শিক্ষকের চূড়ান্ত বরখাস্ত করার অনুমতির আবেদন যশোর শিক্ষা বোর্ডের আপিল এন্ড আর্বিট্রেশন কমিটির না-মঞ্জুরের সিদ্ধান্ত ছয় মাসের জন্য স্থগিত ও একই সাথে ওই আদেশ কেন অবৈধ হবে না’ জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।
মামলার বাদী সাতক্ষীরা ধুলিহর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য হুমায়ুন কবীর বলেন, বিধি অনুযায়ী উথ্থাপিত অভিযোগের তদন্ত করে শিক্ষক আব্দুস সালামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এরপর চূড়ান্ত বরখাস্তের অনুমতির জন্য যশোর শিক্ষা বোর্ডে আবেদন করা হয়। এক্ষেত্রে বোর্ডের পুনঃতদন্ত করার এখতিয়ার না থাকলেও তারা নাশকতার স্পর্শকাতর অভিযোগটি ধামাচাপা দিয়ে শুধুমাত্র অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় পুনঃতদন্ত করে এবং ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শিক্ষক আব্দুস সালামের চূড়ান্ত বরখাস্তের অনুমতির আবেদন না মঞ্জুর করে।
সরকার বিরোধী নাশকতার মামলায় ২০১৮ সালে ৯ ফেব্রুয়ারি পুলিশ আব্দুস সালামকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জসিট (৯৭/২০১৮) দেয়। ২০২২ সালের ২ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় আব্দুস সালাম গ্রেপ্তার হয়।
খুলনা গেজেট/কেডি